রোহিতের বিধ্বংসী ব্যাটিং। ছবি— এএফপি।
নিজের শততম টি টোয়েন্টি ম্যাচ রাঙিয়ে দিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ‘হিটম্যান’-এর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনল ভারত। বৃহস্পতিবার রাজকোটে ২৬ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতল ভারত।
নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টি টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতকে মাটি ধরিয়েছিল বাংলাদেশ। রাজকোটের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে চাপ বাড়ছিল ‘টিম ইন্ডিয়া’র উপরে। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই টি টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নেবে বাংলাদেশ। এরকম কঠিন পরিস্থিতিতেই জ্বলে ওঠেন তারকারা। রোহিতও তাই করলেন। মাহমুদুল্লাহদের রান তাড়া করতে নেমে তিনি একাই ম্যাচ বের করে আনেন বাংলাদেশের সাজঘর থেকে।
হাওয়া-অফিসের পূর্বাভাস ছিল রাজকোটে আছড়ে পড়বে সাইক্লোন ‘মহা’। তার দাপটে পণ্ড হয়ে যেতে পারে ম্যাচ, এমন আশঙ্কাও ছিল। শেষ পর্যন্ত ঝড় ওঠেনি। বৃষ্টিও নামেনি। কিন্তু, ব্যাট হাতে মহা-ঝড় তুললেন ‘হিটম্যান’। তাঁর ৪৩ বলে ৮৫ রানের ইনিংসে সাজানো ছিল ৬টি চার ও ৬টি ওভার বাউন্ডারি। যে ভাবে তিনি এগোচ্ছিলেন, তাতে শততম টি টোয়েন্টি ম্যাচে সেঞ্চুরি অবধারিত ছিল। ভাগ্য খারাপ তাঁর। তাই বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরি মাঠে রেখেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন রোহিত। বাকি কাজটা সারেন লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার।
এ দিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন রোহিত। রান তাড়া করতে বরাবরই দক্ষ ভারত। কিন্তু, প্রথমে ব্যাট করে রান ধরে রাখার ক্ষেত্রে ভারতের দুর্বলতা রয়েছে। সেই কারণে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিল টিম ইন্ডিয়া। টস জিতে প্রথমে ব্যাটও করেছিল বেশ কয়েকটা ম্যাচে। কিন্তু, নয়াদিল্লিতে হারের পরে পরীক্ষার রাস্তা থেকে সরে আসে রোহিতের দল। চলতি সিরিজে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এ দিন আগে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত।
শুরুটা বেশ ভালই করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও নইম। বড় রানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন দু’ জনেই। সেই জায়গায় ২০ ওভারে বাংলাদেশ করল ৬ উইকেটে ১৫৩ রান। আরও বেশি রান করতেই পারত বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে লিটন ও নইম জোড়েন ৬০ রান। প্রায় বছরখানেক পরে কোনও টি টোয়েন্টি ম্যাচ বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে পঞ্চাশের বেশি রান তুলল। বৃহস্পতিবার একাধিকবার জীবন ফিরে পান লিটন। একবার ঋষভ পন্থের ভুলে বেঁচে যান। আর একবার রোহিত শর্মা তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন। শেষ পর্যন্ত ২৯ রানে রান আউট হন লিটন। নইমও বেশ ভালই খেলছিলেন। ব্যক্তিগত ৩৬ রানে তাঁকে ফেরান ওয়াশিংটন সুন্দর। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে যুজবেন্দ্র চহালের বলে ফেরেন মুশফিকুর (৪)। এই মুশফিকুরই প্রথম ম্যাচ জিতিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। অভিজ্ঞ মুশফিকুর দ্রুত ফিরলেও সৌম্য সরকার (৩০) ও মাহমুদ্দুল্লাহ (৩০) বাংলাদেশকে টানতে থাকেন। বাকিরা অবশ্য রান পাননি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা এখানেই। আরও কিছুটা রান তাঁরা বাড়াতেই পারতেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে রোহিত ও শিখর ধবন করেন ১১৮ রান। তার মধ্যে সিংহভাগ রানই এসেছে রোহিতের চওড়া ব্যাট থেকে। ভারত অধিনায়ক শুরু থেকেই শাসন করতে থাকেন বাংলাদেশ বোলারদের। ধবনও ছন্দে ফিরছিলেন। কিন্তু বিপ্লবের বল বুঝতে না পেরে ধবন বোল্ড হন ৩১ রানে। তাতে অবশ্য ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি ভারতের। সিরিজের ফলাফল এখন ১-১। রবিবার নাগপুরেই নির্ধারিত হবে সিরিজ কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর— বাংলাদেশ ১৫৩-৬ (২০ ওভার)
ভারত —১৫৪-২ (১৫.৪ ওভার)
আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচ জেতার পর আজও জেতার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ