জুটি: দুই গোলদাতা। ডোডোজের কাঁধে কামো। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
গোল করে নিজের দিকে আঙুল দেখিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে করতে চিৎকার করে কী বলছিলেন বাই কামো স্টিফেন?
মহমেডানের লিগে অপরাজিত থাকার মুকুট কেড়ে নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার বুধবার বলে দিলেন, ‘‘আমাদের বাতিল করে অন্য দেশের ফুটবলার এনেছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। দেখাতে চাইছি, ওদের চেয়ে কোনও অংশে আমরা কম যাই না।’’ এ বারের লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াই যে দুই ফুটবলারের মধ্যে, তাঁরা দু’জনই মোহনবাগানের বাতিল বিদেশি। সেই প্রতিশোধের মানসিকতার জন্যই সম্ভবত পিয়ারলেসের আনসুমানা ক্রোমা এবং ভবানীপুরের কামো পাল্লা দিয়ে গোল করে চলেছেন। ক্রোমার নয় গোলের পাশে কামো এ দিন করে ফেললেন তাঁর আট নম্বর গোল। এবং মূলত এই দুই আফ্রিকান ফুটবলারের দাপটেই লিগ টেবলে তিন প্রধানকে পিছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে লড়ছে ময়দানের ছোট দুই ক্লাব— পিয়ারলেস এবং ভবানীপুর।
দুই প্রধানের বিরুদ্ধে ক্রোমা হেলায় গোল করেছিলেন। কামোকেও দেখা গেল সেটাই করলেন এ দিন। সতীর্থ স্ট্রাইকার জাখাই ডোডোজকে দিয়ে গোলও করালেন তিনি। বিরতির আগে ডোডোজের জোড়া গোল ম্যাচের অভিমুখ ঠিক করে দিল। এ দিনের ম্যাচ ছিল দুই বন্ধুর মর্যাদার লড়াই। ভবানীপুরের কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী এবং মহমেডানের টিডি দীপেন্দু বিশ্বাস একসঙ্গে টিএফএ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। দু’জন একসঙ্গে খেলা শুরু করেছিলেন মোহনবাগানে। প্রথম ম্যাচেই এফসিআইয়ের বিরুদ্ধে দু’জনের জোড়া গোল ছিল। কোচের চেয়ারে বসে অবশ্য বুধবার শঙ্করলাল টেক্কা দিয়ে গেলেন বন্ধুকে। রক্ষণ এবং মাঝমাঠ জমাট করে গোলের মধ্যে থাকা দুই বিদেশিকে দিয়ে আক্রমণের ঝড় তুলিয়ে দিলেন শঙ্করলাল। যার সুফলও পেল ভবানীপুর। অপরাজিত থাকা আর্থার কোসিরা কখনও ম্যাচের লাগাম মুঠোয় নিতে পারেননি। দুর্দান্ত খেললেন ভবানীপুরের গোলকিপার অভিজিৎ দাশ। মহমেডানের বেশ কয়েকটি শট রুখলেন সোদপুরের ছেলেটি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের অভিজিতের একটি বল বাঁচানো নিয়ে বিতর্কে খেলা বন্ধ থাকল পঁচিশ মিনিট। মাঠে বোতল পড়ল, সঙ্গে ইট। গন্ডগোল বাড়ল ম্যাচ কমিশনার জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে। ভবানীপুরের বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি-কিক মেরেছিলেন মহমেডানের তীর্থঙ্কর সরকার। অভিযোগ, গোললাইন পেরিয়ে যাওয়ার পর বল ফেরান অভিজিৎ। রেফারি গোল দেননি। এর পরেই ঝামেলার শুরু। কলকাতা লিগে গোল-প্রযুক্তি চালু হয়নি। নিয়মেও নেই। তা সত্ত্বেও ম্যাচ কমিশনার টিভি রিপ্লে দেখে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে যান। টিভি দেখে মাঠে ফিরে জয়ন্ত বলেন, ‘ওটা গোল ছিল। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে তা দেওয়া যাচ্ছে না।’’ ম্যাচ কমিশনারের এই কাণ্ড দেখে অবাক হয়ে যান মাঠে উপস্থিত দুই আইএফএ সহ সচিবও!