এমন সাব্বিরকেই চান মাশরাফি

২০১০ সালে গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমসের ফাইনালে ছিপছিপে চেহারার ছেলেটির বিশাল ছক্কা দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল। তার পরই এক অনুষ্ঠানে কৌতুহলী মোস্তফা কামাল সাব্বিরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘এই হালকা-পাতলা শরীর নিয়ে এতো বড় ছক্কা মার কিভাবে? কোথায় পাও এত শক্তি?’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৪:৪৯
Share:

২০১০ সালে গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমসের ফাইনালে ছিপছিপে চেহারার ছেলেটির বিশাল ছক্কা দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল। তার পরই এক অনুষ্ঠানে কৌতুহলী মোস্তফা কামাল সাব্বিরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘এই হালকা-পাতলা শরীর নিয়ে এতো বড় ছক্কা মার কিভাবে? কোথায় পাও এত শক্তি?’’ বিসিবি বসে’র ওই প্রশ্নে লজ্জায় কিছু বলতে পারেননি সাব্বির। এই এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ১২১ রানের মধ্যে সাব্বিরের ৪৪। হার্দিক পাণ্ডের শর্ট বলকে সোজা পাঠিয়েছেন ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে, অশ্বিনকে ডাউন দ্য উইকেটে সেই ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে আবার ছক্কা। আমির শাহির বিপক্ষে ৬ রানে ফিরে গেলেও চেনা ছন্দে অনেক বেশি নিজেকে চিনিয়েছেন গতকাল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা ৫৪ বলে ৮০ রানের ক্লাসিক ইনিংসে ১০টি চারের পাশাপাশি ছিল ৩টি ছক্কা। শুরুর ভয়াবহ বিপর্যয়ে স্কোরশিটের চেহারা ২/২ থেকে বাংলাদেশ দলকে ১৪৭/৭ পর্যন্ত টেনে নেওয়ার গল্পের রচয়িতা সাব্বিরই।

Advertisement

টুয়েন্টি-২০তে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অধরা ছিল জয়। সাব্বিরেই ভেঙে ফেলল বাংলাদেশ সে বৃত্ত। এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন এবং টি২০’র বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামাল বাংলাদেশ ২৩ রানে জিতে।
লঙ্কান পেসার কুলাসেকরার দ্বিতীয় ওভারে ৪,৬,৪,৪=১৮ রানে মাতিয়েছেন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। তিসারা পেরেরাকে প্রথম ওভারে শিক্ষা দিতে হাঁকিয়েছেন তিন তিনটি বাউন্ডারি। সিহান জয়সুরিয়া নামের অফ স্পিনারকে একটু বেশিই বাগে পেয়েছিলেন। তার প্রথম বলেই স্বাগত জানিয়েছিলেন ছক্কায়। ৩৮বলে টি২০ ক্যারিয়ারে তৃতীয় ফিফটি। ভাগ্যটা আসলেই বীরদের সহায়ক হয়। তাঁর ক্যাচ ফেলে জীবন দিয়েছিলেন কাপুগেদারা। বেঁচে যাওয়া সাব্বির পরের ২ বলেই হাঁকায় বাউন্ডারি। স্কোর শিটে ২ রান উঠতে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় জুটিতে সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ৮২ রানের পার্টনারশিপ। এমন দিনে সেঞ্চুরিটি তার প্রাপ্য ছিল। ৪ বছর আগে এই মীরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামীমের হার না মানা ৮৮ টপকে টি২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের দিকে চোখ রাখাই ছিল স্বাভাবিক সাব্বিরের। কিন্তু মিস টাইম হয়ে ডিপ মিড উইকেটে পড়েছেন ধরা। ৫৪ বলে ১০ চার ৩ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস শেষে পেয়েছেন বাহাবা। তবে হেলায় সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেও আক্ষেপ করছেন না সাব্বির, ‘‘ফিফটি কিংবা সেঞ্চুরির কথা চিন্তা করে কখনও ব্যাট করি না। সব সময় দলের জন্য খেলাকেই গুরুত্ব দেই। যদি ৪৯ রান করেও আউট হই, তাতেও আপত্তি নেই।’’

বুকের পাটা আছে, এমন একজনকেই তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্য চেয়েছিলেন হাতুরু সিংহে। হাতটা উঠিয়েছিলেন সাব্বির রহমান রুম্মান। জোড়়ে মারতে পারেন শট, তারপরও কেন ৫ এবং ৬ নম্বরে টি২০তে ঘুরে-ফিরে ব্যাটিং করবেন? নিজের থেকেই তাই ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশনের দাবিটা ছিল। এই ৭ ম্যাচে ২ ফিফটি, ৪০’র ঘরে ইনিংস ৩টি। অভিষেকে ৬ নম্বরে ব্যাটিং, ওই পজিশনে ২ ম্যাচে রান মাত্র ২৩ (গড় ১৩.৫০)। ৫ নম্বরে ৪ ইনিংসে সেখানে গড় ২৪.৩৩( ৭৩ রান)। সেখানে ৩ নম্বরে ১০ ইনিংসে মোট রান ৩১১ (৩৮.৮৭)। টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র। এমন এক সাব্বিরকেই চান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি, ‘‘সাব্বির সব সময় মাথা ঠান্ডা রেখে খেলুক, সেটাই চাই। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে যা যা করা দরকার, তা করতে চায় ও। কখনও হয়, কখনও হয় না। শুরুতে দ্রুত ২টি উইকেট পড়ে যাবার পর সাব্বির ওই শটগুলো খেলে চাপ থেকে দলকে বের করে আনতে না পারলে স্কোর অতো
হতো না।’’

Advertisement

আরও খবর

ঐতিহাসিক জয়ে পাকিস্তানকে আরও চাপে ফেলে দিল বাংলাদেশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement