বিজয়িনী: প্রেসিডেন্টস কাপে ভারতের অন্য সোনা জয়ী যমুনা (বাঁ দিকে), মনিকা ও সিমরনজিতের (ডান দিকে) সঙ্গে সঙ্গে মেরি কম (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। পিটিআই
আরও একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দারুণ ভাবে শেষ করল ভারতীয় বক্সিং দল। রবিবার ইন্দোনেশিয়ার লাবুয়ান বাজো শহরে বিখ্যাত প্রেসিডেন্টস কাপ বক্সিংয়ে ভারত সেরা দলও নির্বাচিত হল। টুর্নামেন্টে ভারতীয় বক্সারেরা মোট সাতটি সোনা এবং দু’টি রুপো জিতে।
আবার অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখালেন ছ’বারের বিশ্বজয়ী ভারতীয় বক্সার কিংবদন্তি মেরি কম। ৫১ কেজি বিভাগে তিনি সোনা জিতলেন অস্ট্রেলীয় বক্সার অপ্রিল ফ্রাঙ্ককে ৫-০ ফলে হারিয়ে। ফল দেখেই বোঝা যাচ্ছে, মেরির সামনে অস্ট্রেলীয় বক্সার কার্যত দাঁড়াতেই পারেননি।
এই টুনার্মেন্টে প্রথম দিন থেকেই আক্ষরিক অর্থে নজর কাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন ভারতীয় বক্সারেরা। বিশেষ করে মেয়েরা। তারা তো চারটি বয়স বিভাগের ফাইনালে উঠে সব ক’টিতেই সোনা জিতে চমকে দিয়েছেন। পাশাপাশি পুরষ বক্সারেরা জিতেছেন মোট তিনটি সোনা এবং একটি রুপো।
প্রেসিডেন্টস কাপে এই সাফল্যের পরে টুইট করে মেরি কম লিখেছেন, ‘‘আমার নিজের এবং দেশের জন্য সোনা! ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টস কাপে। জয় করা মানে তুমি আরও অনেকদিন লড়াই চালিয়ে যেতে, আরও চেষ্টা করতে এবং অন্য সবার থেকে বেশি পরিশ্রম করতে চাও। আমি আন্তরিক ভাবে আমার কোচেদের এবং সাহায্যকারী সমস্ত কর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
মেরি কম টুইট করতেই টুইটারেই তার জবাব দেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি লেখেন, ‘‘প্রিয় মেরি, তুমি সব সময়ই ভারতের কাছে একজন বিরাট গর্বের মানুষ। প্রেসিডেন্টস কাপে সোনা জয়ের জন্য হৃদয় থেকে তোমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। অনেক শুভেচ্ছা।’’
গত মে মাসে ছত্রিশ বছরের মেরি সোনা জিতেছিলেন ইন্ডিয়া ওপেন বক্সিং টুর্নামেন্টে। কিন্তু অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রস্তুতি নিতে নামেননি ওই মাসেই তাইল্যান্ডে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রসঙ্গত অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের টুর্নামেন্ট হবে রাশিয়ার ইয়াকাতেরিনবুর্গে ৭-২১ সেপ্টেম্বর।
প্রেসিডেন্টস কাপে এ দিন দারুণ লড়ে ভারতের সিমরনজিৎ কৌর সোনা জেতেন ইন্দোনেশিয়ার হাসানা হুসওয়াতুনকে হারিয়ে। হাসানা কিন্তু এশিয়ান গেমসের ব্রোঞ্জপদকজয়ী। সিমরনজিৎ সবাইকে চমকে দিয়ে লড়াই জেতেন ৫-০ ফলে। এ দিন কম যাননি অসমের তরুণী যমুনা বড়ুয়াও। তিনিও ৫-০ জেতেন ইটালির অভিজ্ঞ বক্সার জিউলিয়া সামাগনার বিরুদ্ধে ৫৪ কেজি বিভাগে। ইন্ডিয়া ওপেনে বক্সিংয়েও যমুনা সোনা জিতেছিলেন। সোনা জেতেন ৪৮ কেজি বিভাগে মনিকা। তিনি হারান ইন্দোনেশিয়ার এনদাংকে। পুরুষ বিভাগে নীরজ স্বামী ৪-১ হারিয়েছেন ফিলিপিন্সের মাকার্দো জুনিয়র রামেলকে। ৪৯ কেজি বিভাগে। দারুণ লড়েছেন অনন্ত প্রহ্লাদ চোপড়াও। তিনি ৫-০ হারান আফগানিস্তানের রাহমানি রামিশকে ৫-০ ফলে। ৫২ কেজি বিভাগে। অঙ্কুশ দানিয়াও ৬৪ কেজি বিভাগে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন ম্যাকাওয়ের সিউং কিন ফংকে। তিনিও জিতেছেন ৫-০ ফলে।
ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্টস কাপে এ বার অনেকেই সোনা জিতলেও মেরি কমের সাফল্য নিয়ে ভারতীয় ক্রীড়ামহলে উচ্ছ্বাসটা বেশি। বিশেষ করে ছত্রিশ বছর বয়সেও তিনি যে ভাবে একের পর এক বড় মঞ্চে সোনা জিতছেন তা বিস্ময়কর। লন্ডন অলিম্পিক্সে তিনি ব্রোঞ্জ পান। সেটা ২০১২ সালে। তার অনেক বছর পরে তিনি যদি টোকিয়োতেও পদক পান, তা হলে তা আক্ষরিক অর্থেই একটা বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হবে।