নির্ভীক: ববি চার্লটনের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন হ্যারি। ফাইল চিত্র
প্রয়াত হলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলকিপার হ্যারি গ্রেগ। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
গ্রেগ অবশ্য ফুটবল মাঠে তাঁর দুরন্ত পারফরম্যান্স ছাড়াও বিখ্যাত হয়ে রয়েছেন তাঁর সাহসিকতার জন্য। ১৯৫৭ সালের ডিসেম্বরে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে গ্রেগ যোগ দিয়েছিলেন সে সময়ে রেকর্ড পরিমাণ অর্থে। এর তিন মাস পরেই ৬ ফেব্রুয়ারি বেলগ্রেড থেকে ইউরোপীয় কাপের ম্যাচ খেলে ফিরছিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। জ্বালানি ভরার জন্য মিউনিখ বিমানবন্দরে নেমেছিল উড়ান। কিন্তু তার পরে উড়তে গিয়েই দুর্ঘটনায় পড়ে বিমানটি। আগুন ধরে যায়। যে ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন আট ম্যান ইউ ফুটবলার-সহ ১৫ জন।
সে দিন অভিশপ্ত সেই উড়ানে ছিলেন গ্রেগ। তাঁর শরীর রক্তে ভেসে যাওয়া সত্ত্বেও ববি চার্লটন ও জ্যাকি ব্ল্যাঞ্চফ্লাওয়ারকে অগ্নিদগ্ধ বিমান থেকে রক্ষা করে বাইরে এনেছিলেন। গ্রেগের প্রচেষ্টাতেই প্রাণ বাঁচে সাবেক যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রদূতের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ভেরা লুকিচ ও তাঁর কন্যা ভেনেসার। আজও গ্রেগকে মিউনিখের এই অভিশপ্ত ঘটনার ‘নায়ক’ বলে ডাকেন ম্যান ইউ ভক্তেরা। এই ঘটনার দু’সপ্তাহ পরেই এফএ কাপে শেফিল্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে কোনও গোল খাননি এই সাহসী গোলকিপার। বলতেন, ‘‘ওই দুর্ঘটনার জন্য কাউকে দোষ দিতে চাই না। ওই ঘটনা জীবনে অনেক শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিল। সতীর্থদের বাঁচানোর জন্য অনেক প্রশংসা পেয়েছি। কিন্তু আমি মনে করি তার বাইরেও জীবনটা অনেক বড়। ওই ঘটনায় একজন মানুষ হিসেবে কর্তব্য করতে পেরেছিলাম বলে ভাল লাগে।’’
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন গ্রেগকে ‘নায়ক’ বলে ডাকতেন। এ দিন কজওয়ে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গ্রেগ। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত ব্রিটেন ও গোটা বিশ্বের ফুটবল মহল। গ্রেগের পরিবারের তরফ থেকে হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মী ও ভক্তদের ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে।