বিতর্কিত সেই মুহূর্ত। মেসি বনাম ওয়েলিটন। ছবি: এএফপি
গোল-খরা। মেজাজ হারানো। দলকে জেতাতে না পারা। যে সমস্ত জিনিসের সঙ্গে পরিচিত নন লিওনেল মেসি, সেগুলোই এখন দেখা যাচ্ছে ঘটছে তাঁকে ঘিরে।
বুধবার লা লিগার লড়াইয়ে মালাগার সঙ্গে ০-০ ড্র করলেন মেসি-রাকিটিচরা। তবে জৌলুসহীন ম্যাচে সবচেয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকল মেসির সঙ্গে বিপক্ষ ডিফেন্ডার ওয়েলিটনের ঝামেলা।
ঘটনাটা কী? দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে কর্নারের সময় মেসিকে মার্ক করার দায়িত্ব পরে ওয়েলিটনের উপরে। ধাক্কাধাক্কিতে মেসির মুখে লাগায় প্রত্যুত্তরে অকথ্য গালিগালাজ দেন এলএম টেন। যে মহাতারকা তাঁর ভদ্র স্বভাবের জন্য পরিচিত গোটা ফুটবলবিশ্বে, তাঁকে দেখা গেল খুব খারাপ আচরণ করতে। গালাগালি শোনার পর উত্তেজিত মালাগার ডিফেন্ডার মেসির গলা ধরে তাঁকে মাঠে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। মেসি যে ভাবে মাটিতে পড়ে ছটফট করছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল রেফারি হয়তো লাল কার্ড দেখাবেন। কিন্তু রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে ছেড়ে দেন মালাগার ডিফেন্ডারকে। এর আগে টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এলএম টেন কী যেন বলছিলেন ওয়েলিটনকে।
ম্যাচ শেষে মালাগা ডিফেন্ডার জানালেন, তাঁকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করাতেই মহাতারকাকে ধাক্কা মারেন তিনি। “সেট পিসে আমি ওকে মার্ক করছিলাম। মেসিকে ব্লক করতে গিয়ে ভুল করে ওর মুখে হাত লেগে যায়। এর পর খারাপ ভাবে ও আমায় বলে হিজো দে...। যে কারণে রেগে গিয়ে ওকে ধাক্কা মারলাম। তবে আমি মাঠের জিনিস মাঠেই রেখে আসতে পছন্দ করি।” বলেছেন মালাগার ফুটবলার। স্প্যানিশে হিজো দে পা.. মানে ইংলিশে ‘সান অব আ বি...’ ।
বিতর্কের পাশাপাশি ব্যর্থতাও তাড়া করল মেসিকে। এ দিন গোলের সামনে আবার ব্যর্থ হলেন। গোল করা তো দূর, গোল সাজাতেও পারলেন না সতীর্থদের জন্য। দলের মহাতারকার খারাপ দিনে জ্বলে উঠতে পারলেন না বাকিরা। জয়ও অধরা থেকে গেল।
মালাগা ডিফেন্ডার ছাড়াও বার্সার স্প্যানিশ কোচের কটাক্ষের মুখেও পড়তে হল মেসিকে। যাঁর মতে, গোটা ম্যাচ জুড়ে তাঁর দলের তারকা ফুটবলারকে খুঁজে পাওয়াই গেল না। যাঁকে কিছু দিন আগেই অনুশীলনে সময় মতো না আসায় এনরিকে জরিমানা করেছিলেন, সেই মেসি প্রসঙ্গে বার্সা কোচ বলেন, “মেসিকে খুঁজে পাওয়া গেল না। ওকে বেশি খেলতে দেয়নি মালাগার ফুটবলাররা। এটা ওদের কৃতিত্ব।”
এক দিকে মেসি যখন হাতাহাতিতে জড়ালেন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ফিরিয়ে আনতে আসরে নেমে পড়লেন ক্লাবের সমর্থকরা। শোনা যাচ্ছে, প্রিয় ফুটবলারকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফেরাতে এতটাই মরিয়া যে বের্নাবাওয়ে পরের রিয়াল ম্যাচে ফেস্টুন সমতে প্লেন নিয়ে স্টেডিয়ামের আকাশে চক্কর মারবেন সমর্থকেরা। যেখানে লেখা থাকবে,- “কাম হোম রোনাল্ডো।’ অর্থাৎ ঘরে ফিরে এসো সিআর সেভেন। যে ক্লাবে খেলে ইউরোপজুড়ে প্রতিভার বিচ্ছূরণ ঘটিয়েছিলেন রোনাল্ডো, সেই ক্লাবে আবার তাঁকে ফেরাতে চান লুই ফান গল। কয়েক দিন আগে তিনি বলেন, “আমার কোনও অসুবিধা নেই যদি রোনাল্ডো ফেরে ম্যান ইউয়ে। ওর মতো প্রতিভাকে দলে নিলে আরও শক্তিশালী হব আমরা।”
রোনাল্ডো নিজে অবশ্য এ ব্যাপারে ধোয়াসা তৈরি করে যাচ্ছেন। কয়েক দিন আগে রোনাল্ডো বলেছিলেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলা কঠিন। বলেন, “আমি মাদ্রিদে খুশি আছি। তবে সবাই জানে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে আমি ভালবাসি। ওই ক্লাবে অনেক ভালবাসা পেয়েছি আমি। তবে আপাতত মাদ্রিদে থাকতে চাই। কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলা যায় না।”