মানবিক: জাতীয় দলের ফুটবলার পলির পাশে দাঁড়ালেন লক্ষ্মী। —ফাইল চিত্র।
করোনাত্রাসের মধ্যে আর্থিক সমস্যায় বিপর্যস্ত ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের ডিফেন্ডার পলি কোলের দুঃসময় দূর করতে এগিয়ে এলেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। বাংলা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার সিঙ্গুরে পলির বাড়িতে এক মাসের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়ে দেন। প্রতিশ্রুতি দেন, যা যা করার তিনি করবেন।
আনন্দবাজারে এ দিনই পলির সংগ্রামের কাহিনি প্রকাশিত হয়। তা দেখেই তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন লক্ষ্মী। লকডাউনের ফলে সপ্তাহ দু’য়েক ধরে ভাত-ডাল-আলুসেদ্ধ খেয়েই দিন কাটছে পলির পরিবারের। মাছ, মাংস-সহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার কেনার মতো আর্থিক সামর্থ নেই জাতীয় দলের ডিফেন্ডারের। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অনুশীলন বন্ধ করেননি তিনি।
এ সব জানতে পেরেই ভারতীয় মহিলা দলের ডিফেন্ডারের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক। দুপুরের মধ্যেই সিঙ্গুরের বড়শান্তিতে পলির বাড়িতে এক মাসের খাদ্যসামগ্রীও পাঠিয়ে দেন লক্ষ্মী। এ ছাড়াও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য পলি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য মুখাবরণও দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আগামী এক বছর যাতে পলি পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করছেন লক্ষ্মী। তাঁর অ্যাকাডেমিতে এসে নিখরচায় ট্রেনিং এবং অনুশীলনের প্রস্তাবও দিয়েছেন পলিকে।
আরও পড়ুন: করোনা লড়াইয়ে ম্যান ইউ, বার্সার সঙ্গে দুই প্রধানও
বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক যে ভাবে এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে অভিভূত পলি। আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, ‘‘লক্ষ্মী স্যরের ঋণ আমি কোনও দিন শোধ করতে পারব না। আমার দাদা দিনমজুর। লকডাউনের ফলে কাজ করতে যেতে পারছে না। আমি এখনও চাকরি পাইনি। তার উপরে মাছ, মাংস ও ফলের দাম এত বেড়ে গিয়েছে, কেনার ক্ষমতা নেই। ভাত-ডাল-আলুসেদ্ধ খেয়েই দিন কাটছিল আমাদের।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার সব কথা মন দিয়ে শুনে চিন্তা করতে বারণ করেছেন লক্ষ্মী স্যর। জুতো কিনতেও বারণ করে দিয়েছেন। বলেছেন, যখন যা জুতো লাগবে উনি আমাকে দেবেন।’’ পলির বাড়িতে এখনও বিদ্যুৎ নেই। সেটাও তিনি জানিয়েছেন লক্ষ্মীকে।
যোগাযোগ করা হলে লক্ষ্মী বলেন, ‘‘ভারতীয় দলের এক জন ফুটবলার এ রকম কষ্টের মধ্যে রয়েছেন, শুনেই খুব মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পলির যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য যা যা করা দরকার, সবই করব।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)