ক্ষিপ্র: চলছে স্লিপে ক্যাচ ধরার অনুশীলন। বাঁ-দিকে শরীর ঝুঁকিয়ে বল ধরছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। দেখছেন সতীর্থ চেতেশ্বর পুজারা। শুক্রবার সকালে রাঁচী স্টেডিয়ামে। ছবি: পিটিআই।
শুক্রবার রাঁচী স্টেডিয়ামে অনুশীলনের কয়েকটি মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে বিরাট কোহালির টুইট, ‘‘আজকের ট্রেনিং সেশন ছিল খুবই ইতিবাচক। কালকের জন্য তৈরি।’’ ভারত অধিনায়কের বার্তাতেই পরিষ্কার, পুণের লড়াই যেখানে শেষ হয়েছিল, সেই জায়গা থেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শহরে শুরু করতে চান পরের অধ্যায়।
এই অভিযান দক্ষিণ আফ্রিকাকে চলতি টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার। এই টেস্ট জিতলে ভারত ১২০ পয়েন্ট নিয়ে সিরিজ শেষ করবে। মোট পয়েন্ট দাঁড়াবে ২৪০। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তালিকায় দ্বিতীয় দল নিউজ়িল্যান্ডের চেয়ে ১৮০ পয়েন্টে এগিয়ে যাবে তারা।
প্রথম দু’টি টেস্টে ভারতের মানের সঙ্গে কোনও বিভাগেই পাল্লা দিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শুক্রবারও সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি বলে যান, ‘‘তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়া হয়েছে। তাই কঠিন পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সমস্যা হচ্ছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রত্যেকটি পয়েন্টই খুব মূল্যবান। ফলে অধিনায়ক হিসেবে অনেক বেশি মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। পঞ্চাশ রান করলেই হবে না। সেটাকে একশো করতে হবে।’’
পর্যবেক্ষণ: নেটে অশ্বিন, সতর্ক দৃষ্টি কোচ শাস্ত্রীর। ছবি: পিটিআই।
ভারতীয় শিবিরের ছবিটা একেবারে আলাদা। টপ-অর্ডারের ব্যাটিং পারফরম্যান্স সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য। বিশাথাপত্তনমে প্রথম বার ওপেন করেই দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন রোহিত শর্মা। সেই টেস্টেই ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। পুণের নায়ক ছিলেন স্বয়ং অধিনায়ক। তাঁর অপরাজিত ২৫৪ রানের সৌজন্যেই ইনিংস ও ১৩৭ রানে জেতে ভারত। ফলে ক্রিকেটপ্রেমীরা ধরেই নিচ্ছেন, রাঁচীতেও সেই ছবির পুনরাবৃত্তি ঘটছেই।
আর সেই স্বপ্ন উস্কে দিচ্ছে রাঁচীর বাইশ গজ। পিচে কোনও ঘাস নেই। মাটিও শুষ্ক। মেঘলা আবহাওয়া থাকায় কিছুটা আর্দ্রতা রয়েছে। তবে ম্যাচ শুরু হওয়ার পরে আদৌ সেই আর্দ্রতা থাকে কি না, দেখার। পুণে টেস্টে হনুমা বিহারীকে বসিয়ে খেলানো হয়েছিল উমেশ যাদবকে। কিন্তু এখানে কি তিন পেসার খেলবেন? নাকি একজন পেসার কমিয়ে কি অতিরিক্ত স্পিনার খেলাবেন বিরাট?
অতিরিক্ত স্পিনারের জায়গায় কুলদীপ যাদবকে খেলিয়ে দেখে নেওয়া যেত। কিন্তু তিনি কাঁধে চোট পেয়ে তৃতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গিয়েছেন। পরিবর্তে ঝাড়খণ্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ় নাদিমকে ডাকা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সফল বাঁ হাতি স্পিনারকে শেষ পর্যন্ত খেলানো হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। ফলে আর অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা জুটিই সেরা অস্ত্র ভারত অধিনায়কের।
তৃতীয় টেস্টে আরও একজনের উপরে নজর থাকবে ক্রিকেট মহলের। তিনি ঋদ্ধিমান সাহা। দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর তিনটি অবিশ্বাস্য ক্যাচ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এই ম্যাচেও তাঁর অতিমানবীয় কিছু ঝলক দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবে ক্রিকেটবিশ্ব। এই মাঠেই দু’বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১৭ রান করেছিলেন ঋদ্ধি। তাই দস্তানা হাতে দাপটের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও সেই বিধ্বংসী রূপ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। যিিন এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলে গিয়েছেন, ‘‘এই মাঠে আমার সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। সে ভাবেই এ বারও একটা বড় রান করার চেষ্টা করব।’’
অন্য দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলটির মূল সমস্যা তাঁদের চোট ও মনোবল। একেই দু’টি টেস্টের একটিতেও টস জিততে না পেরে হতাশ ফ্যাফ ডুপ্লেসি। সেই সঙ্গে ওপেনার এডেন মার্করাম কব্জির হাড় ভেঙে টেস্টের বাইরে। ডিন এলগারের সঙ্গে কাকে ওপেন করানো হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। চোটের জন্য তৃতীয় টেস্টে নেই কেশব মহারাজও। তাঁর পরিবর্তে হয়তো খেলতে পারেন জর্জ লিনডে।