কোচ কালিসের সঙ্গে নাইট অধিনায়ক । মঙ্গলবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ক্লাবহাউসের সামনে, রাস্তার দু’ধারে এখনও বড় বড় হোর্ডিং— চিয়ার ফর ইডেন, চিয়ার ইন ইডেন। কয়েকটা গ্যালারির উপর এখনও আইসিসির লোগো-সহ বিশ্ব টি-টোয়েন্টির ব্যানার। বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষ হয়েছে আটচল্লিশ ঘণ্টা কাটেনি, ইডেনে যে তার হ্যাংওভার এখনও চলবে, স্বাভাবিক।
আর এই বিসর্জনের আবহেই শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন যজ্ঞের প্রস্তুতি। আইপিএল যজ্ঞের প্রস্তুতি। গ্যালারি থেকে এক-এক করে নামানো চলছে আইসিসির ব্যানার। নীল-গোলাপির জায়গা একটু একটু করে নিয়ে নিচ্ছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সোনালি-বেগুনি। এবং সবচেয়ে বড়, ইডেনের মাঠ মঙ্গলবার থেকে চলে গেল গৌতম গম্ভীরদের দখলে। উত্তেজিত টিম মালিক টুইট করছেন, ‘হৃৎস্পন্দন বাড়ছে...বছরের সেই সময়টা এসে গিয়েছে। আনন্দ, কান্না, আবেগ, সব দেখা যাবে। আমি কেকেআর।’ শাহরুখ খানের কেকেআরে এত বছর তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান ক্রিকেটার। আইপিএল নাইন থেকে সেই জাক কালিসকে দেখা যাবে কেকেআরের হেড কোচের ভূমিকায়। মঙ্গলবার যাঁকে দেখা গেল, নীল টি-শার্ট আর ধূসর শর্টস পরে টিমের প্র্যাকটিসে কড়া নজর রাখতে। কখনও ক্যাপ্টেন গম্ভীরের সঙ্গে কথা বলছেন তো কখনও নেট বোলারদের বলে দিচ্ছেন, ব্যাটসম্যানকে কোথায় বল করতে হবে।
গৌতম গম্ভীর— শহরকে দু’দুটো আইপিএল ট্রফি এনে দেওয়া ক্যাপ্টেন বোধহয় কালিসের ক্লাসের সবচেয়ে মনোযোগী ছাত্র। দীর্ঘক্ষণ নেটে ব্যাট নিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেল তাঁকে। রবিন উথাপ্পা, ইউসুফ পাঠান, মণীশ পাণ্ডে, সূর্যকুমার যাদব, মর্নি মর্কেল, ব্র্যাড হগ— নতুন মরসুমের প্রথম প্র্যাকটিসে এ দিন হাজির ছিলেন কেকেআরের প্রায় সব তারকা। যদিও টিম কিট এখনও এসে না পৌঁছনোয় সরকারি জার্সি পাননি তাঁরা। যে যাঁর মতো পোশাকে এসেছিলেন। ইডেনে প্রস্তুতি ম্যাচ চেয়েছিল কেকেআর। কিন্তু সিএবি থেকে বলা হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পিচ এখনও তৈরি হয়নি। তাই এখনই সেটা করা সম্ভব নয়।
যাঁরা এখনও শহরে পৌঁছননি, তাঁদের মধ্যে আছেন আন্দ্রে রাসেল, কলিন মানরো এবং সাকিব আল হাসান। বিশ্বজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমে থাকা জেসন হোল্ডার শহরে থাকলেও এ দিন মাঠে আসেননি। শোনা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে টিমের সবারই কলকাতায় নেমে পড়ার কথা। একজন বাদে। তিনি, কেকেআরের অবিসংবাদী ম্যাচ উইনার সুনীল নারিন। গত শুক্রবার শহরে এসে গিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান স্পিনার। শনিবার প্র্যাকটিসও করেন। কিন্তু দেশের বিশ্বজয়ের রাতে পিতৃবিয়োগে দেশে ফিরে যেতে হয় নারিনকে। তিনি কবে ফিরবেন, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় কেকেআর। এক কর্তা বলছিলেন, এই অবস্থায় তাঁর উপর টিমে যোগ দেওয়া নিয়ে জোর করা চলে না। ব্যাপারটা তাঁর উপরই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি যে দিন আসতে চাইবেন, সে দিন আসবেন। কেউ কেউ মনে করছেন, আগামী রবিবার প্রথম ম্যাচে অন্তত নারিনকে পাওয়া যাবে না।