badminton

Thomas Cup: একটি ম্যাচেও না হারা শ্রীকান্তের র‌্যাকেটেই টমাস কাপে স্বপ্নপূরণ ভারতের

তৃতীয় ম্যাচে নেমে বার বার দলকে জিতিয়েছেন এই মুহূর্তে ভারতের সেরা সিঙ্গলস তারকা। ফাইনালেও সেটাই করলেন। তৃতীয় ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার জোনাথন ক্রিস্টিকে হারিয়ে ভারতকে টমাস কাপ জেতালেন তিনি। ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বাসে মাতলেন আপাত শান্ত শ্রীকান্তও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ১৭:৫৬
Share:

টমাস কাপে ভারতের সব থেকে সফল শাটলার শ্রীকান্ত ছবি: টুইটার

এ বারের টমাস কাপে তিনি ভারতের সব থেকে সফল ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। গ্রুপ পর্ব থেকে একটিও ম্যাচে হারেননি তিনি। তাই হয়তো খেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নামেন। তৃতীয় ম্যাচে নেমে বার বার দলকে জিতিয়েছেন এই মুহূর্তে ভারতের সেরা সিঙ্গলস তারকা। ফাইনালেও সেটাই করলেন। তৃতীয় ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার জোনাথন ক্রিস্টিকে হারিয়ে ভারতকে টমাস কাপ জেতালেন তিনি। ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বাসে মাতলেন আপাত শান্ত শ্রীকান্তও।

এ বারের টমাস কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে শ্রীকান্তের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে বোঝা যাবে কতটা ভাল খেলেছেন তিনি। গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায় জার্মানির কাই শাফেরকে ১৮-২১, ২১-৯, ২১-১১ ব্যবধানে হারান শ্রীকান্ত। দ্বিতীয় খেলায় ২০-২২, ২১-১১, ২১-১৫ ব্যবধানে হারান কানাডার ব্রায়ান ইয়াংকে। পরের দু’টি খেলায় স্ট্রেট সেটে জেতেন শ্রীকান্ত। চাইনিজ তাইপের ওয়াং জু ওয়েইকে হারান ২১-১৯, ২১-১৬ ব্যবধানে। কোয়ার্টার ফাইনালে মালয়েশিয়ার এনজি জে ইয়ংয়ের বিরুদ্ধে জয় আসে ২১-১১, ২১-১৭ ব্যবধানে।

Advertisement

প্রতিযোগিতার সব থেকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি শ্রীকান্ত হয়েছিলেন সেমিফাইনালে। প্রাক্তন অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন ডেনমার্কের অ্যান্ডার্স অ্যান্টনসেনের সামনে পড়েন তিনি। দ্বিতীয় সেট হারলেও ২১-১৮, ১২-২১, ২১-১৫ গেমে অ্যান্টনসেনকে হারিয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন তিনি। ফাইনালে অবশ্য বিপক্ষকে প্রথম সেটে দাঁড়ানোর সুযোগ দেননি শ্রীকান্ত। প্রথম সেটে ক্রিস্টিকে ২১-১৫ ফলে হেলায় হারান। দ্বিতীয় সেটে একটা সময় ১৫-১৮ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছিলেন। সেখান থেকে লড়াই করেন। পর পর দু’বার ম্যাচ পয়েন্ট পেতে দেননি ক্রিস্টিকে। শেষ পর্যন্ত ২৩-২১ ব্যবধানে জেতেন তিনি।

শ্রীকান্তের জীবনটাই তো লড়াইয়ের। অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের এক কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসে ব্যাডমিন্টনে বিশ্বরের অন্যতম সেরা হওয়া সহজ ব্যাপার নয়। কেভিএস কুট্টির দুই ছেলেই ছোট থেকে ব্যাডমিন্টন খেলতেন। দাদা নন্দগোপালের সঙ্গে বাড়ির বাইরেই চলত শ্রীকান্তের খেলা। ছোটবেলায় এক বার ভাইরাল জ্বর হয়েছিল শ্রীকান্তের। শরীর খুব খারাপ হয়ে যায়। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফের খেলা শুরু করেন তিনি। খেলার প্রতি তাঁদের আগ্রহ দেখে দুই ছেলেকে তিনি জোর করেই পাঠিয়ে দেন বিশাখাপত্তনমে অন্ধ্রপ্রদেশ স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে। সেখান থেকে বছর খানেক পরে নন্দগোপাল প্রথমে ভর্তি হন পুল্লেলা গোপীচন্দের অ্যাকাডেমিতে। দাদার মুখে ভাইয়ের কথা শুনে শ্রীকান্তকেও ডেকে নেন গোপী। তিনিই ঠিক করে দেন নন্দগোপাল ডাবলস ও শ্রীকান্ত সিঙ্গলস খেলবে। সেই শুরু। বাকিটা ইতিহাস।

Advertisement

চীনের প্রাচীর ভেঙেছিলেন ২০১৪ সালে। দু’বার অলিম্পিকে সোনা জয়ী এবং পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন চীনের লিন ডানকে স্ট্রেট গেমে হারিয়েছিলেন। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ভারতের প্রথম পুরুষ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে ওঠেন তিনি। যদিও ফাইনালে হারতে হয় শ্রীকান্তকে।

বাইরের দুনিয়ার কাছে তারকা হলেও ঘরে কিন্তু তারকাসুলভ কোনও আচরণ নেই শ্রীকান্তের। কোনও বিতর্কে জড়ান না। পার্টিতে যান না। বাড়িতে থাকলে বাবা-মার সঙ্গে সময় কাটান। অনেকটা সময় নাকি স্রেফ ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন শ্রীকান্ত। চারটে সুপার সিরিজ জেতার পরেও তাতে কোনও বদল হয়নি। কিন্তু কোর্টে সম্পূর্ণ আলাদা ছবি। অনুশীলনে কোনও খামতি রাখেন না শ্রীকান্ত। হই হুল্লোড় করে সময় নষ্ট করেন না। খুব বেশি কারও সঙ্গে দেখাও করেন না শ্রীকান্ত। কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে নিজেকে তৈরি করেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর। সেই পরিশ্রমের ফল দেখা গেল টমাস কাপে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement