জটিলতা: টেস্ট সিরিজ হেরে চাপ বাড়ছে অস্ট্রেলীয় কোচের। ফাইল চিত্র
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে সে দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে। সে দেশের একটি সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, দল চালনা এবং কোচের আচার-আচরণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কয়েকজন ক্রিকেটার ক্ষুব্ধ। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ মানতে নারাজ ল্যাঙ্গার।
অস্ট্রেলিয়া দলের এই ফাটল প্রকাশ্যে এসেছে, প্রথম সারির বোলার-সহ বেশ কিছু ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে ভারতীয় দলের চলতি মাসে সমাপ্ত বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি জিতে ফেরার পরে। ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ল্যাঙ্গারের দল পরিচালনা এবং মেজাজ নিয়ে অখুশি তাঁর দলেরই বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও জানা গিয়েছে, তিন ধরনের ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে মানিয়ে নিতে নাকি ব্যর্থ ল্যাঙ্গার।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় চলতি গ্রীষ্মে ল্যাঙ্গারের দল পরিচালনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কয়েক জন ক্রিকেটারের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। জৈব সুরক্ষা বলয়ে দীর্ঘদিন থাকা কয়েক জন ক্রিকেটার কোচের মেজাজ পরিবর্তন ও অতি-সক্রিয়তার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন। ড্রেসিংরুমে কোচের হঠাৎ হঠাৎ এই মেজাজ পরিবর্তনের ফলে কিছু বর্ষীয়ান ক্রিকেটার হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরাই জানিয়েছেন, মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে এর প্রভাব পরিসংখ্যান-সহ এসে পড়ত বোলারদের উপরেও। গ্যাবায় ভারতের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টেও তা লক্ষ্য করা গিয়েছে।’’
যদিও ল্যাঙ্গার খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে, তা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘এতে সত্যের অপলাপ হচ্ছে। নেতৃত্ব জনপ্রিয়তা বাড়ানোর প্রতিযোগিতা নয়। যদি ক্রিকেটারেরা চায়, সব সময়ে তাদের আনন্দ দিয়ে চলতে হবে, তা হলে আমি সেটা করিনি। বরং এই অভিযোগ, যা হয়নি সেটাই বলছে। বোলারদের সঙ্গে পরিসংখ্যান নিয়ে কথাই বলিনি। বোলারদের সঙ্গে বৈঠকও করিনি। তার জন্য বোলিং কোচ রয়েছেন।’’ যোগ করেছেন, ‘‘বোলারদের সঙ্গে এ রকম কোনও কথাই হয়নি। বরং গত কয়েক মাসে কী শিখেছি, সেটাই আমাকে দেখতে হবে।’’
অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে ল্যাঙ্গারের চুক্তি এখনও ১৮ মাস রয়েছে। ৫০ বছর বয়সি এই প্রাক্তন ওপেনার জানিয়ে দিয়েছেন, দায়িত্ব তিনি ভালই উপভোগ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দায়িত্বে থাকলে চাপ থাকবেই। কিন্তু সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে, এটি বড় দায়িত্ব।’’
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া শিবির থেকেই বেরিয়ে আসা খবর ধরে সে দেশের প্রচারমাধ্যম জানাচ্ছে, দলের অনেক ক্রিকেটারই নাকি ইতিমধ্যে সহকারী কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের ভক্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মতে, সহকারী কোচের সঙ্গে অনেক সহজেই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যায়। ওই প্রতিবেদনে লেখাও হয়েছে, ‘‘ক্রিকেটারেরা ল্যাঙ্গারকে কোচ হিসেবে সম্মান করে। শ্রদ্ধা করে ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর কীর্তিকেও। কিন্তু দলের অনেক ক্রিকেটারই সহকারী কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের সহায়তা চায় সমস্যা এড়াতে। কারণ, কোচের হেডমাস্টার সুলভ মনোভাব, আচরণ এবং চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারা অনেক ক্রিকেটারেরই পছন্দ নয়।’’যদিও ল্যাঙ্গার এই অভিযোগও মানতে চাননি। বিশেষ এক ক্রিকেটারের নাম না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ চলছে। জেতার জন্য মরিয়া আমরা সবাই। তখন এক ক্রিকেটারকে দেখি হাতে স্যান্ডউইচ নিয়ে ড্রেসিংরুমে হাঁটছে। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় আমার। বলি, তুমি এটা কী ভাবে করতে পারছ। কোচ হিসেবে কি আমি এটাও বলতে পারব না।’’