Football

ডার্বির আগে বন্ধু কিবুকে শুভেচ্ছা, সমর্থকদের তাতালেন ‘সবুজ তোতা’

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ডিফেন্ডারদের বিষাক্ত ট্যাকল এড়িয়ে তিনি নিজেও তো কত বার ডার্বি ম্যাচে ফুল ফুটিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। ইস্টবেঙ্গলকে পাঁচ গোল দেওয়ার দিন খোঁড়াতে খোঁড়াতে ড্রেসিং রুমে পৌঁছেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:৪৭
Share:

কিবু ভিকুনার জন্য একবুক শুভেচ্ছা জানালেন ব্যারেটো।

এক সময়ে তাঁর পা বহু ডার্বির ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। গ্যালারিতে তাঁর নাম ধরে বাগান সমর্থকরা সুর করে গাইতেন, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, ব্যারেটোই ভরসা।

Advertisement

মোহনবাগানের প্রাণভোমরা হোসে রামিরেজ ব্যারেটো বুট জোড়া তুলে রেখেছেন অনেক দিন হল। সবুজ-মেরুন জার্সিতে শেষ ম্যাচও রাঙিয়ে দেন তিনি। বাঁ পায়ের গড়ানে শটে পুণে এফসি-র জালে বল জড়িয়েছিলেন ‘সবুজ তোতা’।

রবিবাসরীয় ডার্বির আগে ‘বন্ধু’ কিবু ভিকুনার জন্য একবুক শুভেচ্ছা, ভালবাসা জানিয়ে ‘সবুজ-তোতা’ বলছেন, “আমার খুব ভাল বন্ধু কিবু ভিকুনা। মোহনবাগানের সমস্ত ফুটবল স্টাফদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজকের ম্যাচ খুব কঠিন। ফুটবলারদের নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে হবে। সবাই ঠিকঠাক কাজটা করতে পারলেই ম্যাচ জেতা সম্ভব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দ্রাবিড়ের চেয়ে ভাল কিপার বলেও রাহুলকে দিয়ে উইকেটকিপিংয়ে নারাজ প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ডিফেন্ডারদের বিষাক্ত ট্যাকল এড়িয়ে তিনি নিজেও তো কত বার ডার্বি ম্যাচে ফুল ফুটিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। ইস্টবেঙ্গলকে পাঁচ গোল দেওয়ার দিন খোঁড়াতে খোঁড়াতে ড্রেসিং রুমে পৌঁছেছিলেন। বন্ধু মার্কোসের চোখের নীচে তৈরি হয়েছিল ক্ষত। ড্রেসিং রুমে একটা চেয়ারে অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিলেন ব্যারেটো।

কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন না। তাঁর যন্ত্রণাকাতর মুখ দেখে সবাই বুঝতে পারছিল ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের মারাত্মক কড়া ট্যাকল সহ্য করতে হয়েছে। প্রয়াত সচিব অঞ্জন মিত্র সাজঘরে ঢুকেই আদর করে ব্যারেটোর গাল টিপে দেন। ২০২০ সালের ঐতিহাসিক ডার্বির সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ব্যারেটো ফিরে যাচ্ছেন তাঁর ফুটবলজীবনে। বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলকে যে ম্যাচে আমরা ৫-৩ হারিয়েছিলাম, সেটা আমার অন্যতম সেরা ম্যাচ। খুব কঠিন ম্যাচ ছিল ওটা।’’

ডার্বি তো কঠিনই হয়। এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি থাকে না কেউ। এই ধরনের হাইভোল্টেজ ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয় স্কিল। সবুজ গালচেতে স্কিল তুলে ধরতে পারলে গ্যালারিতে প্রাণসঞ্চার হয়। ব্যারেটো বাগান সমর্থকদের উদ্দেশে বলছেন, ‘‘মাঠ ভরাও। প্লেয়ারদের পাশে থাকো। কারণ তোমরাই দলকে শক্তি জোগাতে পারো। আশা করি ডার্বি থেকে তিন পয়েন্ট ঘরে তুলতে পারবে মোহনবাগান।’’ ব্যারেটো মিথ হয়ে রয়েছেন কলকাতা ময়দানে। তাঁকে নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে কত গল্প। গোড়ার দিকে ইংরেজি বলতে পারতেন না। পরে ইংরেজি শেখার জন্য এক শিক্ষিকার কাছে যেতেন। চিরকালের টিমম্যান তিনি। অনুশীলনের পরে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখতেন তাঁর চপ্পল জায়গায় নেই। অন্য কেউ তা পরে চলে গিয়েছেন। ব্যারেটো একদিন তাঁর সতীর্থদের সবার জন্য কিনে আনেন চপ্পল।

এ হেন মানুষটার সবুজ-মেরুন জার্সিতে প্রথম ও শেষ ডার্বি ম্যাচের ফলাফল কী? পরিসংখ্যানবিদ হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালের ২২ মার্চ ব্যারেটো প্রথমবার বাগানের জার্সিতে ডার্বিতে নামেন। সেই ম্যাচে ব্যারেটো গোল করলেও হেরে যায় মোহনবাগান।

২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ বারের মতো ডার্বি খেলেন ব্রাজিলীয় ফুটবলার। ১-১ গোলে শেষ হয়েছিল সেই ডার্বি। ব্যারেটোর কাছে সেরা ডার্বি ম্যাচ কোনটা? স্মৃতির পাতা উল্টে এ দিন তিনি বলছিলেন, “২০০৭ সালে তখনকার ফিফা প্রেসিডেন্ট জোসেফ ব্লাটারের সামনে আমরা ডার্বি ম্যাচ জিতেছিলাম। আমি আর ডগলাস সেই ম্যাচে গোল করেছিলাম। ওটাই আমার সেরা ডার্বি।’’

মোহনবাগান অন্ত প্রাণ ব্যারেটো আজ বিকেলে চোখ রাখবেন তাঁর অনুজদের দিকে। টিভির পর্দায় খুঁজবেন তাঁর ব্যাটন হাতে নিয়ে দৌড়চ্ছে কে।

(ভিডিয়ো সৌজন্যে ব্যারেটো)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement