রুদ্ধশ্বাস: দলকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেওয়ার পথে ব্ল্যাকউড। —ছবি এপি।
একশো সতেরো দিন পরে টেস্ট ম্যাচের প্রত্যাবর্তন। তাতে রোমাঞ্চের কোনও খামতি নেই। হয়তো বল আগের মতো সুইং অথবা সিম করছে না। উত্তেজনা যদিও ছিল বহালতবিয়তে। ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম টেস্টে এক লড়াকু ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেখতে পেলাম। সিরিজে তারা এগিয়ে গেল ১-০। বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে জয়ের মর্যাদাই কিন্তু আলাদা। এখানেই বোঝা যায়, ক্রিকেট কিন্তু আছে ক্রিকেটেই।
লড়াইয়ের নায়ক অবশ্যই জারমেইন ব্ল্যাকউড। ১৫৪ বলে ৯৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে গেল। ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনে চার উইকেটে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ যদিও শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। রবিবার সাউদাম্পটনে টেস্ট জীবনে ষষ্ঠতম পাঁচ উইকেট প্রাপ্তি ক্যারিবিয়ান পেসারের।
২০১৪ সালে নিউজ়িল্যান্ডর বিরুদ্ধে অভিষেক হয় জামাইকার ব্ল্যাকউডের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বরাবরই সফল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরি আসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যান্টিগায়। তার পর থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছয় ইনিংসে ওর রানের গড় ৫৫.৩৩। কয়েকটা সহজ সুযোগ দিয়েছিল রবিবার। যেমন স্টোকসের বলে গালিতে ওর ক্যাচ ফস্কায় ডমিনিক বেস। সহজ রান আউটও হাতছাড়া হয় ওর। তবুও ব্ল্যাকউডের মনঃসংযোগ নষ্ট হয়নি। ম্যাচের সব চেয়ে আকর্ষণীয় শট এল ওর হাত থেকেই। লাঞ্চের পরেই ডমিনিক বেসের অফস্পিনকে এক্সট্রা কভার ড্রাইভ করে বুঝিয়ে দিল, নতুন তারকার উত্থানের সময় হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: সৌরভকে নিয়ে স্মিথ: দাদা ঠিক জবাব দিত
দুশো রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই চোট পেয়ে ফিরে যায় জন ক্যাম্পবেল। জোফ্রা আর্চার ও মার্ক উডের দুরন্ত বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ৩ উইকেট হারায় ২৭ রানে। ক্যাম্পবেল আহত ও অবসৃত হওয়ায় যে স্কোর ২৭-৪ হিসেবে ধরা যেতে পারে। সেখান থেকে দুরন্ত জুটি গড়ে রস্টন চেজ ও ব্ল্যাকউড। ৭৩ রান যোগ করে ক্যারিবিয়ান শিবিরকে লড়াইয়ে ফেরায়। উইকেটকিপার শেন ডাউরিচের সঙ্গেও ৬৮ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের কপালে ভাঁজ ফেলে দেয় এই তরুণ ব্যাটসম্যান। রবিবার প্রমাণ হয়ে গেল, সুইং বন্ধ হয়ে গেলে জেমস অ্যান্ডারসন একেবারেই সাধারণ এক বোলারে পরিণত হয়।
তিরবিদ্ধ: অ্যান্ডারসন কি থুতু দিয়ে বল পালিশ করেছেন? উঠছে অভিযোগ।
এ দিন বিতর্কের মধ্যেও জড়িয়ে পড়ে অ্যান্ডারসন। চতুর্থ ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে দেখা যায় বল পালিশ করার সময় মুখের দিকে হাত নিয়ে যাচ্ছে অ্যান্ডারসন। মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, বলে থুতু ব্যবহার করছে ইংল্যান্ড পেসার। কিন্তু প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেন ব্যাখ্যা করেন, ‘‘অ্যান্ডারসন একেবারেই থুতু ব্যবহার করেনি।’’ হুসেনের এই বক্তব্যের পরে সত্যি নিশ্চিত হওয়া গেল।