প্রতীক্ষা: বুমরার ছন্দে ফেরার অপেক্ষায় বন্ড (নীচে)। ফাইল চিত্র
যশপ্রীত বুমরার বিরুদ্ধে সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করে সফল হয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। দ্রুতই অন্য দলগুলি বুমরাকে খেলার ক্ষেত্রে এই নীতি অনুসরণ করতে পারে বলে মন্তব্য করলেন শেন বন্ড।
নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার এবং এক সময় আইপিএলে কেকেআরের হয়ে খেলে যাওয়া বন্ড এখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলিং কোচ। সেখানে বুমরাই তাঁদের এক নম্বর বোলিং অস্ত্র। নিউজ়িল্যান্ডের সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বন্ড বলেছেন, ‘‘বুমরার মতো বোলারকে নিয়ে প্রত্যাশা তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিউজ়িল্যান্ড ওকে খুব ভাল খেলেছে। ওরা বুমরাকে বিপজ্জনক ধরে নিয়ে দেখে দেখে খেলেছে। ভারতীয় বোলিংয়ে বাকিরা অনেকটা অনভিজ্ঞ থাকায় এই রণনীতি কাজে দিয়েছে।’’ একটা সময়ে বিশ্বের দ্রুততম বোলার বন্ড মনে করছেন, অন্যান্য দলও বুমরাকে খেলার সময় একই রণনীতি নিতে পারে। ‘‘বাকিরাও এখন বুমরাকে খেলার সময়ে এ রকম সাবধানতা নিতে পারে। ঠিক করে নিতে পারে যে, ওকে দেখে-দেখে খেলে দেব, অন্যদের আক্রমণ করব। তখন বোলিং গ্রুপের কাজটা কিন্তু অনেক কঠিন হয়ে যায়। এখানে উইকেট ম্যাড়ম্যাড়ে, তাই বোলারদের কঠিন পরীক্ষার মুখে
পড়তে হচ্ছে।’’
তবে ০-৩ দুরমুশ হওয়া ওয়ান ডে সিরিজে বুমরা মোটেও খারাপ বোলিং করেননি বলে মনে করছেন বন্ড। বলছেন, ‘‘দিনের শেষে একজন বোলার সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারে ভাল বল করার। বুমরা সেটাই করেছে। বুঝতে হবে কখনওসখনও তাতেও কাজ হয় না।’’ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে বুমরার সঙ্গে অনেক সময় ব্যয় করার সুবাদে তাঁকে ভাল মতো চেনেন বন্ড। তাই নিজের দেশের ব্যাটসম্যানদের সাবধান করে দিচ্ছেন যে, আসন্ন টেস্ট সিরিজে কিন্তু ভীষণ ভাবেই প্রভাব সৃষ্টি করবেন ভারতীয় ফাস্ট বোলার। ‘‘চোটের পরে ফিরে এসে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগেই। এই সিরিজের আগে অনেক দিন ও খেলেনি, সেটাও মাথায় রাখা দরকার। আর পরিবেশটাও অন্য রকম,’’ বলে বন্ড যোগ করছেন, ‘‘নিউজ়িল্যান্ড ওকে খুব ভাল খেলেছে ঠিকই। কিন্তু টেস্ট সিরিজে বুমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। আমার মনে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ তাঁর আরও মনে হচ্ছে, বুমরা যত ম্যাচ খেলবেন, ততই ছন্দে ফিরবেন। ‘‘টেস্ট খেলতে নামার আগে সাদা বলে ও বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলে ফেলল। সেটা ওকে সাহায্য করবে।’’
নিজেদের দেশে নিউজ়িল্যান্ডকে হারানো খুবই কঠিন এবং বন্ড আশা করছেন, অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন পাঁচ পেসার নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে নামবেন। ‘‘নিউজ়িল্যান্ড যদি এক জনও স্পিনার না খেলায়, আমি অন্তত অবাক হব না। ওয়েলিংটনে বেসিন রিজার্ভের পিচে প্রথম দিন বল করতে হলে কলিন ডি’গ্র্যান্ডহোমের মতো কেউ বড় ভূমিকা নিতে পারেন বলে তাঁর মনে হচ্ছে। ‘‘নিউজ়িল্যান্ড পাঁচ পেসারে খেলতেই পারে। ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, নিল ওয়্যাগনার, কাইল জেমিসন এবং ডি’গ্র্যান্ডহোম,’’ বলে পিচ নিয়ে সাবধান করে দিচ্ছেন বন্ড, ‘‘এখানে পরের দিকে পিচ খুবই সহজ, ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে যায়। মনে হয় না এ বারও তার কোনও ব্যতিক্রম হবে।’’ নিল ওয়্যাগনারের শর্ট বল ভারতীয়দের সমস্যায় ফেলতে পারে বলে মনে করেন বন্ড। এক সময় যাঁর শর্ট বল খেলতে সমস্যায় পড়তেন সব ব্যাটসম্যানই। ‘‘নিল (ওয়্যাগনার) সাধারণত প্রথম বদল হিসেবে বল করতে আসে। তার পর ওর শর্ট বলের বৃষ্টি শুরু হয়। এই ধরনের বোলার খুব বেশি পাওয়া যায় না বলেই ওকে খেলা আরও কঠিন। যখনই ও বল করতে এসে ওই শর্ট বলগুলো করবে, ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়বে।’’ ওয়েলিংটনে বেসিন রিজার্ভ এবং ক্রাইস্টচার্চে হ্যাগলে ওভাল নিউজ়িল্যান্ডের অন্যান্য মাঠের তুলনায় বড়। বড় আউটফিল্ড, বড় বাউন্ডারি ওয়্যাগনারকে খেলা আরও কঠিন করে দেবে বলে মত বন্ডের। সঙ্গে দীর্ঘকায় কাইল জেমিসনকেও শর্ট বলের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে হচ্ছে তাঁর। ‘‘ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ওরা শর্ট বলের সামনে ফেলতে চাইবেই,’’ বলছেন বন্ড।
হার্দিককে নিয়ে আশা: অস্ত্রোপচারের পরে এখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি হার্দিক পাণ্ড্য। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলিং কোচ শেন বন্ড আশা করছেন, তাঁর আইপিএল দলের অলরাউন্ডার দ্রুত মাঠে ফিরতে পারবেন। ‘‘আইপিএলের আগে হার্দিক যদি কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারে, ভাল হয়। তবে আমি বলব, তাড়াহুড়ো না করে ধৈর্য ধরেই এগোনো উচিত ওর,’’ বলছেন বন্ড। ২৯ মার্চ আইপিএল শুরু হচ্ছে এবং প্রথম দিনেই রোহিত শর্মার মুম্বই মুখোমুখি ধোনির চেন্নাইয়ের।