ট্রফি হাতে সিনার। ছবি: রয়টার্স।
দীর্ঘ দিন পরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন। রবিবার ফাইনালে দু’সেটে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে দানিল মেদভেদেভকে হারালেন ইয়ানিক সিনার। ইটালির খেলোয়াড় জিতলেন ৩-৬, ৩-৬, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৩ গেমে। সেমিফাইনালে এই সিনারই হারিয়ে দিয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচকে। অন্য দিকে, আবারও একটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠে হারতে হল রাশিয়ার মেদভেদেভকে।
২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন মারাট সাফিন। তার পর ২০১৪ সালে স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা। এ ছাড়া গত ২০ বছরে রজার ফেডেরার, নোভাক জোকোভিচ এবং রাফায়েল নাদালের ত্রিমূর্তির বাইরে কেউ এই ট্রফি জিততে পারেননি। সেই তালিকায় নাম লেখালেন সিনার। যে ভাবে দু’টি সেট পিছিয়ে থেকেও তিনি ট্রফি জিতলেন তা মন কেড়ে নিয়েছে সকলেরই।
১৯৭৬ সালে শেষ বার ইটালির কোনও খেলোয়াড় হিসাবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন আদ্রিয়ানো পানাত্তা। তার পরে সিনার জিতলেন। ফাইনালের আগে গোটা প্রতিযোগিতায় মাত্র একটি সেট হারিয়েছিলেন। সেটি জোকোভিচের কাছেই। ফাইনালে প্রথম দু’টি সেটে পিছিয়ে পড়ার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন সিনারের কোনও আশা নেই। কিন্তু পাঁচ সেটের খেলায় ওস্তাদের মার শেষ রাতেই দিলেন ইটালির সিনার।
অন্য দিকে, তৃতীয় বাছাই মেদভেদেভের কাছে আরও একটা খারাপ ফাইনাল গেল। তিনি সেমিফাইনালে দু’টি সেট পিছিয়ে পড়েও জিতেছিলেন। কিন্তু ফাইনালে সুবিধা নিজের দিকে থাকা সত্ত্বেও আটকাতে পারলেন না সিনারকে। ছ’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠলেও তার মধ্যে পাঁচটিতেই হারলেন তিনি। পাশাপাশি কার্লোস আলকারাজ়কে টপকে বিশ্বের দু’নম্বর খেলোয়াড় হওয়ার সুযোগও হারালেন। তিনি প্রথম খেলোয়াড় যিনি দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে প্রথম দু’টি সেট এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও হারলেন। ২০২২ সালে রাফায়েল নাদালের বিরুদ্ধে একই জিনিস দেখা গিয়েছিল।
ম্যাচের শুরু থেকে সিনারকেই অনেক বেশি তরতাজা মনে হচ্ছিল। কেন মাত্র একটি সেট খুইয়ে তিনি ফাইনালে উঠতে পেরেছেন সেটা বোঝা যাচ্ছিল তাঁর খেলায়। কিন্তু শুরুতে মেদভেদের আক্রমণাত্মক টেনিসের কোনও জবাব ছিল না তাঁর কাছে। তবে শক্তিশালী শট, লম্বা র্যালিতে টেক্কা দিচ্ছিলেন বিপক্ষকে। শেষ পর্যন্ত সেটাই বাকি তিনটি সেটে কাজে লাগে।
ম্যাচ পয়েন্ট জেতার পরেই র্যাকেট ফেলে কোর্টে শুয়ে পড়েন সিনার। দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করতে কিছু ক্ষণ পরেই দাঁড়িয়ে পড়েন। সেখান থেকে ছুটে যান দর্শকাসনের দিকে। সেখানেই সিনারের বক্সে বসেছিলেন দুই কোচ সিমোনে ভ্যাগনোজ্জি এবং ড্যারেন কাহিল। সিনার জড়িয়ে ধরেন দু’জনকেই। রড লেভার এরিনায় হাজির থাকা দর্শকেরা তখন হাততালি নিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন নতুন নায়ককে।