গোল করে সমতা ফিরিয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের স্বস্তি দিলেন প্রীতম কোটাল। ছবি - টুইটার
হায়দরাবাদ এফসি- ২ (আরিদানে ৮’, রোলান্ড ৭৫’)
এটিকে মোহনবাগান- ২ (মনবীর ৫৭’, প্রীতম ৯৩’)
সোমবার তিলক ময়দানে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারতে পারত এটিকে মোহনবাগান। হায়দরাবাদ এফসিকে হারাতে পারলেই ভারতীয় ক্লাব দল হিসেবে অনন্য নজির গড়তে পারত সবুজ-মেরুন। প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে সরাসরি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পেত আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের ছেলেরা। কিন্তু সেটা হল কোথায়! শুরু থেকে দশ জন হয়ে যাওয়ার পরেও পুরো ম্যাচ জুড়ে দুরন্ত ফুটবল খেললো ম্যানুয়েল মারকুয়েজের দল। অতিরিক্ত সময়ে প্রীতম কোটাল জটলার মধ্যে গোল করে সমতা না ফেরালে লিগ শীর্ষে থাকা দলকে নির্ঘাত ম্যাচ হারতে হত।
এই ম্যাচ ড্র হওয়ায় ১৯ ম্যাচে ৪০ পয়েন্টে নিয়ে লিগ তালিকার শীর্ষেই থেকে গেল মোহনবাগান। ১৮ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে মুম্বই সিটি এফসি। শেষ দুই ম্যাচে তারা জিতলে পৌঁছাবে ৪০ পয়েন্টে। এর মধ্যে আবার একটি ম্যাচ হাবাসের দলের বিরুদ্ধেই। সেই ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট পেলেই প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে সরাসরি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পাবে এটিকে মোহনবাগান।
একে তো জোড়া ডার্বি জয়, এর মধ্যে আবার নতুন নজির গড়ার চাপ। এই বিরল কৃতিত্বের হাতছানিই কি দলের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করল! কারণ ম্যাচের ফলাফল যতই ২-২ হোক, পূর্ণ শক্তির দল নিয়েও কিন্তু এদিন সুনাম বজায় রেখে খেলতে পারলেন না সন্দেশ জিঙ্গান, তিরিরা। শুধু তাই নয়। সন্দেশ এদিন লিস্টন কোলাকোকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখলেন। অবশ্য হলুদ কার্ড দেখার তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন শুভাশিস বসু ও মনবীর সিংহ। বরং ড্র হলেও পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়ে খেলে গেলেন আকাশ মিশ্র, হোলিচরণ নার্জরি, লিস্টন কোলাকোর মত ভারতীয় ফুটবলার। তবে এখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার আশা শেষ হয়ে যায়নি। প্রথম দল হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলতে হলে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে অন্তত এক পয়েন্ট পেতেই হবে হাবাসের দলকে।
লিগ তালিকার বর্তমান অবস্থান।
প্রথম গোলের পর মনবীরের উল্লাস। ছবি - আইএসএল
এদিন ম্যাচের শুরুটা একেবারেই এটিকে মোহনবাগান সুলভ ছিল না। ৮ মিনিটের মাথায় রক্ষণের ভুলের জন্য আরিদানে সান্তানা হায়দরাবাদকে এগিয়ে দেন। তিরি ও সুভাশিসের ভুল দেখে সাইড লাইনে বসে বিরক্তি প্রকাশ করেন স্প্যানিশ কোচ। এরপরে অবশ্য দুটো দলই প্রতি আক্রমণের ঝড় তোলে। তবে কেউ গোলের মুখ খুলতে পারেনি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুরতেই সমতা ফেরায় সবুজ মেরুন। ৫৭ মিনিটে একক দক্ষতায় দুরন্ত গোল করেন পঞ্জাব তনয় মনবীর। তবে পাঁজরে চোট পেয়ে ৭৫ মিনিটে তারকা ডিফেন্ডার সন্দেশ মাঠ ছাড়তেই ফের গোল হজম করে এটিকে মোহনবাগান। লিস্টনের বদলে ‘সুপার সাব’ হিসেবে মাঠে নামা রোলান্ড গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন। ম্যাচের শেষ দিকে মনে হচ্ছিল হেরে মাঠ ছাড়বে হাবসের দল। ঠিক সেই সময় ৯৩ মিনিটে ত্রাতার ভুমিকায় অবতীর্ণ হলেন প্রীতম। তাঁর গোলে সমতা ফেরাল দল। যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন জোড়া ডার্বি জয়ী কোচ।
দুই স্প্যানিশ কোচের দ্বৈরথ এবার বেশ জমেছে। প্রথম সাক্ষাতে ফলাফল ছিল ১-১। আর এবার ২-২। হাবাস ম্যাচের আগেই বিপক্ষের কোচের নীতি নিয়ে আশঙ্কিত ছিলেন। এদিন কিন্তু সেটাই ঘটল। হাবাসের মত ক্ষুরধার মস্তিস্কের কোচকে টেক্কা দিয়ে গেলেন আর এক স্প্যানিশ ম্যানুয়েল মারকুয়েজ।