ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ সামলাবেন অভিজ্ঞ স্কট।
কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে গোল পেয়ে ফুটছেন এটিকে-মোহনবাগানের তারকা রয় কৃষ্ণ। অতীতে কৃষ্ণর বিরুদ্ধে বহু ম্যাচ খেলেছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিদেশি ডিফেন্ডার স্কট নেভিল। এ বার অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে নতুন লিগে নামছেন স্কট। ২৭ নভেম্বর ডার্বিতে কৃষ্ণদের আটকাতে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকবে লাল হলুদ শিবির। কতটা তৈরি স্কট নেভিল? গোয়ায় প্রস্তুতির মাঝে সময় বের করে কথা বললেন আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে।
ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের কোচিংয়ে আপনি খেলেছেন। আপনাদের সম্পর্ক তো বেশ ভাল।
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকে খুব ছোটবেলা থেকে আমি চিনি। আমার বাবা ওঁর সঙ্গে ইংল্যান্ড এবং সাউথ চায়নায় বহু বছর খেলেছেন। আমার জন্ম এক্সেটারে। তখন আমার বাবা এক্সেটার সিটিতে খেলতেন। ট্রেভর মর্গ্যানের জন্যই আমার পরিবার অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসে। ওঁর ছেলে আমার প্রিয় বন্ধু। ছোট থেকে ট্রেভরের কোচিংয়ে বহু বছর খেলেছি।
আপনি এখন রক্ষণ সামলান। কিন্তু কেরিয়ারের গোড়ার দিকে মাঝমাঠে খেলতেন। খেলার পজিশন পরিবর্তন করলেন কেন? জায়গা বদলানোর বিশেষ কোনও কারণ ছিল কি?
কেরিয়ারের গোড়ার দিকে মাঝমাঠেই খেলতাম। এক কোচ আমার শারীরিক গঠন দেখে সেন্টার ব্যাক খেলার পরামর্শ দেন। আমি এর আগে ফুল ব্যাক হিসেবে খেলেছি। এই বছর আবার সেন্টার ব্যাক হিসেবে খেলব। মাঝমাঠে এখন খেলি না। তবে মিডফিল্ডে খেলাটা আমি সত্যিই মিস করি।
এখনও প্রথম ম্যাচে নামেনি ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ম্যাচটাই আবার ডার্বি। কতটা তৈরি আপনি?
ডার্বির মাহাত্ম্য আমি জানি। এখানে খেলতে আসার আগে ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে অনেক তথ্য ট্রেভর আমাকে দিয়েছেন। দুটো ক্লাবের (ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান) প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাস জানার জন্য আমাকে একটা ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন ট্রেভর। সেটা দেখে আমি অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এশিয়ার সব চেয়ে বড় ডার্বি এটাই। ইতিহাস বলছে, ১৯৯৭ সালে ১ লক্ষ ৩০ হাজার দর্শক মাঠে বসে ডার্বি দেখেছিলেন। এটা প্রায় অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আগে এ লিগে খেলেছি। এসিএলেও খেলেছি। তবে এত বড় একটা ডার্বি ম্যাচে খেলব ভেবেই আমি উত্তেজিত। ডার্বির জন্য আমার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি।
আরও পড়ুন: জন্মাতে দেখেছেন, নিজের হাতে গড়া সেই স্কটকে ডার্বিতে খুঁজবেন মর্গ্যান
এ লিগে দুশোর বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আপনার। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে আপনার এই অভিজ্ঞতা তো দারুণ কাজে লাগবে।
আমি নিজের অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে শেয়ার করে নিতে চাই। ডিফেন্সে আমার সঙ্গে ভারতীয় ফুটবলাররাও খেলবে। ওদের সঙ্গে কথা বলে ভাল বোঝাপড়া তৈরি করা খুবই জরুরি। বোঝাপড়া ভাল হলে খেলতে সুবিধা হয়। এক জনের ভুল অন্য জন ঢেকে দেয়। ডিফেন্সও মজবুত থাকে। রক্ষণ যদি ঠিক থাকে, তা হলে আক্রমণ ভাগের ফুটবলাররাও মনে জোর পায়। ওরাও নিজেদের কাজ আরও ভাল ভাবে করতে পারে।
ইস্টবেঙ্গল দীর্ঘ দিন বড় কোনও টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি। সমর্থকরা এ বারের টুর্নামেন্টের দিকে তাকিয়ে। ইস্টবেঙ্গলের অগুনতি সমর্থকদের উদ্দেশে কী বলবেন?
ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব সীমিত। এ বছর আমাদের ট্রেনিং শুরু হতে অনেকটাই দেরি হয়েছে। তবে মাঠে নেমে নিজেদের উজার করে দেব। সমর্থকদের এ ব্যাপারে গ্যারান্টি দিতে পারি।
আরও পড়ুন: আবেগ নয়, মস্তিষ্ক ব্যবহার করো, মন্ত্র কোচ ফাওলারের
আপনারা এখনও টুর্নামেন্টে নামেননি। অন্য দিকে রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসদের একটা ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে। প্রথম ম্যাচেই গোল পেয়েছেন রয়। ওঁদের দু’জনকেই আপনি চেনেন। চেনা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নামা তো সুবিধারই?
এই লিগে সব বিদেশি প্লেয়াররাই বেশ ভাল। কার বিপক্ষে খেলছি সেটা আমার কাছে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মাঠে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। রয় কৃষ্ণ আর উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে বহু বার খেলেছি। ওদের শক্তি ও দুর্বলতা আমি জানি। সেটা সতীর্থদের জানিয়ে দেব। তবে শুধু বিদেশি নয়, বহু প্রতিভাবান ভারতীয় ফুটবলার রয়েছে এটিকে-মোহনবাগানে। সবার উপরেই আমাদের নজর থাকবে।