Henrique Soreno

রক্তে ভেজা মাথা নিয়ে আইএসএল জেতান, প্রীতমদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত এটিকে-র প্রাক্তনী

বছর চারেক আগে নিজে এটিকের ডিফেন্সকে নেতৃত্ব দিতেন। বুট জোড়া এখন তিনি তুলে রেখেছেন। তাঁর সময়ের এটিকে এখন আর নেই। বদলে গিয়েছে নাম। সংযুক্তিকরণের পরে নতুন নাম হয়েছে এটিকে-মোহনবাগান।

Advertisement

কৃশানু মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫৬
Share:

কেরলের বিরুদ্ধে ফাইনালে গোলের পরে সোরেনো। ছবি-টুইটার থেকে।

প্রবীর দাস, প্রীতম কোটালরা আইএসএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের আক্রমণ সামলানোর জন্য যখন নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছেন, তিনি তখন বহু দূরে। পুরনো ক্লাবের খেলার হাইলাইটস দেখেছেন। আগামী শুক্রবারের ডার্বি ম্যাচের জন্য এক সময়ের সতীর্থদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এনরিকে সোরেনো বলছেন, “সব সময়ে ইতিবাচক থাকো। খেলা উপভোগ করো।।”

Advertisement

বছর চারেক আগে নিজে এটিকের ডিফেন্সকে নেতৃত্ব দিতেন। বুট জোড়া এখন তিনি তুলে রেখেছেন। তাঁর সময়ের এটিকে এখন আর নেই। বদলে গিয়েছে নাম। সংযুক্তিকরণের পরে নতুন নাম হয়েছে এটিকে-মোহনবাগান। কয়েক জন ছাড়া বদলে গিয়েছেন অধিকাংশ ফুটবলাররাই। মোহনবাগানের ইতিহাস জানা সোরেনো বলছেন, “এশিয়ার অন্যতম পুরনো ক্লাব। ঐতিহ্য রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর সমর্থক ছড়িয়ে রয়েছে। এ রকম একটা ক্লাবের তো আইএসএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে খেলাই উচিত।”

এ বারের মেগা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করে নিয়েছে এটিকে-মোহনবাগান। ২০১৬ সালের আইএসএল ফাইনালে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমতা ফিরিয়েছিলেন সোরেনো। হেড করতে উঠে প্রতিপক্ষের ফুটবলারের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথা ফেটে গিয়েছিল তাঁর। রক্ত ঝরছিল। মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধেই লড়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে কেরলকে হারিয়ে দ্বিতীয় বার আইএসএল জেতে এটিকে। সোরেনো গোল না করলে ম্যাচ টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়াতই না। এত বছর পরেও সেই ফাইনালের প্রতিটি মুহূর্ত মনে রয়েছে তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘গাওস্কর তো মাসের পর মাস ছেলের মুখই দেখেনি’, কোহালি বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন কপিল

আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বললেন, “যে কোনও ফাইনালই কঠিন হয়। সে বারের ফাইনালও খুব কঠিন ছিল। আমার মাথা ফেটে রক্ত ঝরছিল। পুরো সময় খেলতে পারিনি। কোচ (হোসে মোলিনা) আমাকে তুলে নেন। আমার পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিল (অফেন্স) নাতো। ওর উপরে বিশ্বাস ছিল। দলের উপরেও বিশ্বাস হারাইনি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে সেই রাতটা এখনও ভুলিনি। খুব আনন্দ করেছিলাম। আমরা সবাই একটা পরিবারের মতো ছিলাম। প্রবীর, প্রীতম, (অর্ণব) মণ্ডলদের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। আমাদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সবার সঙ্গেই কথা হয়।”

পরের বছর সোরেনোকে দলে রাখেনি এটিকে। কলকাতা ছেড়ে তিনি চলে যান চেন্নাইয়িনে। ক্যাপ্টেনের আর্ম ব্যান্ড পরে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেন। পর পর দু'বছর দুটো ভিন্ন দলের হয়ে ট্রফি জেতার নজির গড়েন সোরেনো। দুই চ্যাম্পিয়ন কোচকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সোরেনো বলছেন, “হোসে মোলিনা ও জন গ্রেগরি আমার প্রিয় দুই কোচ। এটিকে-র হয়ে যে দিন সই করেছিলাম, সে দিনটার কথা খুব মনে পড়ছে। আমাদের স্পোর্টিং ডিরেক্টর বলেছিলেন, নক আউট স্টেজে যেতেই হবে। আমরা নক আউট স্টেজ থেকে ফাইনালে পৌছই। তার পরে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলাম। আমারও স্বপ্নপূরণ হয়েছিল। চেন্নাইয়িনের হয়ে ফাইনাল খেলতে নামার আগেও জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।”

দুই ক্লাবের জার্সি পরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সোরেনো চান, এ বারের ফাইনালে মুখোমুখি হোক এটিকে-মোহনবাগান এবং চেন্নাইয়িন। কার হাতে ট্রফি দেখলে খুশি হবেন? সোরেনোর সপ্রতিভ জবাব,“ফাইনালে যে দল ভাল খেলবে, সেই দলই ট্রফি ঘরে তুলবে।”

আরও পড়ুন: রোনাল্ডোর জোড়া গোলে জয় জুভেন্টাসের, অ্যাটলেটিকোর কাছে হার মেসিদের

চেন্নাইয়িনের হয়ে খেতাব জেতার পরে আইএসএল-এর দুনিয়ায় তাঁকে আর দেখা যায়নি। পর্তুগালের একটি ক্লাবের এখন প্রেসিডেন্ট তিনি। দূরে চলে গেলেও প্রবীর, প্রীতমদের খোঁজখবর রাখেন। দুই তরুণ ফুটবলার প্রসঙ্গে সোরেনো বলছিলেন, “ওরা ক্রমেই নিজেদের একাট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে ফেলছে। ওদের জন্য আমি খুশি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement