ISL 2020

জেজেদের বিশ্রাম, পাসিং ফুটবল ঠেকাতে মরিয়া হাবাস

আইএসএলের প্রস্তুতি সব চেয়ে দেরিতে শুরু করেছেন লাল-হলুদের ফুটবলারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৬
Share:

অনুশীলনে এটিকে-মোহনবাগানের খেলোয়াড়েরা। ছবি টুইটার

ডার্বি মানেই প্রবল উত্তেজনা, আবেগের বিস্ফোরণ, ধুন্ধুমার দ্বৈরথ।

Advertisement

ফুটবলারদের কাছে যতটা শারীরিক শক্তির লড়াই, ঠিক ততটা মনঃস্তাত্বিকও। যা এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ রবি ফাওলার খুব ভাল করেই জানেন। আইএসএলের প্রথম ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে প্রতিপক্ষ এটিকে-মোহনবাগান অনুশীলন করলেও মাঠমুখো হননি লিভারপুল কিংবদন্তি। বুধবার পুরো দলকে ছুটি দিলেন ফাওলার।

আইএসএলের প্রস্তুতি সব চেয়ে দেরিতে শুরু করেছেন লাল-হলুদের ফুটবলারেরা। ফাওলার নিজেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তা গোপন করেননি। তা হলে ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে অনুশীলন না করিয়ে ফুটবলারদের বিশ্রাম দিলেন কেন? ফাওলার মনে করেন, ম্যাচের আগে মনকে শান্ত না রাখতে পারলে বিপর্যয় অনিবার্য। তা ছাড়া টানা অনুশীলনের ক্লান্তিও প্রভাব ফেলতে পারে। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার একমাত্র উপায়, ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ফুটবল থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকা। শুধু খেলার আগের দিন মাঠে নেমে সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে কি না যাচাই করে নেওয়া। লাল-হলুদ কোচের যাঁরা ঘনিষ্ঠ, তাঁদের কথায়, ‘‘ফুটবলজীবনে আমরা দেখেছি, ম্যাচের আগে প্রত্যেক দিন অনুশীলন করলে সমস্যা হয়। ম্যাচের সময় মানসিক চাপ বেড়ে যায়। ক্লান্তি গ্রাস করে। ম্যাচের দু’দিন আগে বিশ্রাম নিলে অনেক চনমনে থাকা যায়। ফুটবল জীবনের এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা এই পদ্ধতি চালু করেছি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘শুধু ডার্বি বলেই নয়, সব ম্যাচের ক্ষেত্রেই আমরা এই নিয়ম মেনে চলি।’’

Advertisement

সবুজ-মেরুন শিবিরে অবশ্য পুরোদমেই চলল ডার্বির প্রস্তুতি। এটিকে-মোহনবাগান কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস জানতে পেরেছেন, সপ্তাহখানেক আগে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল রবি ফাওলারের দল, সে খানে বিপক্ষের রক্ষণ ও মাঝমাঠে একাধিক ছোট ছোট পাস খেলেছিলেন অ্যান্টনি পিলকিংটনেরা। শুক্রবার তিলক ময়দানে তাদের বিরুদ্ধে যেন সেই লাল-হলুদ পাসের স্রোত আছড়ে না পড়ে, তার জন্য নানা অঙ্ক কষছেন স্পেনীয় কোচ। তারই ফল, গত ২৪ ঘণ্টায় রক্ষণ এবং মাঝমাঠের ফুটবলারদের নিয়ে আলাদা করে ক্লাস নেওয়া। তিরি, সন্দেশ জিঙ্ঘনদের পাশাপাশি, মাঝমাঠে কার্ল ম্যাকহিউ, ব্র্যাড ইনমান, জয়েশ রানে, প্রণয় হালদারদের তিনি বোঝাচ্ছেন, কী দায়িত্ব পালন করতে হবে। উদ্দেশ্য, জেজে, বলবন্ত, পিলকিংটনেরা ‍‘মিডল করিডরে’ (মাঝখান দিয়ে) যেন একাধিক পাস না খেলতে পারেন। এসসি ইস্টবেঙ্গল শিবির এই রণনীতি নিলে বল যেমন কাড়তে হবে, তেমনই দ্রুত প্রতি-আক্রমণে নিয়ে পাল্টা চাপে ফেলতে হবে, লাল-হলুদ রক্ষণে। সে ক্ষেত্রে নিখুঁত পাসে বিপক্ষের ফাঁকা জায়গায় বল রাখার মহড়াও জারি রেখেছেন এটিকে-মোহনবাগান কোচ। দুই উইঙ্গার প্রবীর দাস এবং শুভাশিস বসুকে ওভারল্যাপের পাশাপাশি বিপক্ষের আক্রমণের সময় রক্ষণে নেমে আসার অনুশীলন করাচ্ছেন। সবুজ-মেরুন শিবির সূত্রে খবর, কোচ সব চেয়ে বেশি সময় দিয়েছেন ব্র্যাড ইনম্যানকে। অস্ট্রেলিয়ার ‍‘এ’ লিগে খেলে আসা এই ফুটবলার গত বছর ‘ব্রিসবেন ‍রোর’ দলে খেলেছেন ফাওলারের প্রশিক্ষণে। ছাত্রকে তাঁর রণনীতি মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, প্রতিপক্ষ কোচের রণনীতি সম্পর্কেও অনেক তথ্য হাবাস নিজের নোটবুকে তুলেছেন বলে খবর।

ডার্বির রণনীতি তৈরিতে বুধবার ব্যস্ত ছিলেন ফাওলার ও তাঁর সহকারীরা। আমেরিকা থেকে আনানো বিশেষ ক্যামেরায় তোলা মঙ্গলবার অনুশীলনের ভিডিয়ো বার বার দেখছেন তাঁরা। কোন কোন বিভাগে আরও উন্নতি দরকার তার তালিকা তৈরি করেছেন। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে চূড়ান্ত মহড়ায় এই বিষয়গুলোর উপরেই জোর দেবেন তিনি। কোচ ছুটি দিলেও অ্যান্টনি পিলকিংটন, জা মাগোমা থেকে জেজে লালপেখলুয়া, বলবন্ত সিংহ—প্রত্যেকেই হোটেলের জিমে ট্রেনিং করেছেন।

ডার্বির প্রস্তুতির ফাঁকেই সপ্তম বিদেশি নির্বাচনের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল এসসি ইস্টবেঙ্গল। জানা গিয়েছে, ফাওলারের ডাকেই উইগান অ্যাথলেটিকের সর্বোচ্চ গোলদাতা ৩২ বছর বয়সি জো গার্নারের লাল-হলুদ জার্সিতে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement