মহড়া: বড় ম্যাচ মাতাতে তৈরি অরিন্দমরা। প্রস্তুত রফিকও (ডান দিকে)।
রয় কৃষ্ণ, ব্রাইট এনোবাখারেরা রয়েছেন। কিন্তু আজ, শুক্রবার ফতোরদার মাঠে এটিকে-মোহনবাগান বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গলের দ্বৈরথে প্রধান ভূমিকা নিতে পারেন দু’দলের একঝাঁক বঙ্গসন্তান।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই এসসি ইস্টবেঙ্গল দলের ডিফেন্ডার স্কট নেভিল বলে দিয়েছেন, ‘‘কলকাতার ছেলেরা এই ম্যাচটার গুরুত্ব এবং উত্তেজনা আমাদের সবার থেকে বেশি জানে। ওদের থেকেই এই মহারণের গল্প শুনছি।’’
দুই প্রধানের সেই ঘরের ছেলেরা আপাতত মহড়া দিচ্ছেন একের অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার। সঙ্গে তাতাতে শুরু করেছেন নিজের দলের বিদেশিদের। রফিক বলে দিয়েছেন, ‘‘জিতে ফেরা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।’’ প্রীতমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও চাপ নেই। আমরা যে রকম খেলছি, সেই ছন্দ ধরে রাখলেই জিতব।’’
সবুজ-মেরুন শিবিরে বঙ্গসন্তানদের মধ্যে রয়েছেন দুই গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্য ও অভিলাষ পাল। রক্ষণে প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসু। মাঝমাঠে প্রবীর দাস, শেখ সাহিল ও প্রণয় হালদার।
লাল-হলুদ শিবিরেও দুই গোলকিপার বঙ্গসন্তান। দেবজিৎ মজুমদার, সুব্রত পাল। রক্ষণে, সার্থক গলুই, সৌরভ দাস, নায়ারণ দাস, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়। মাঝমাঠে মহম্মদ রফিক।
অরিন্দম চলতি মরসুমে এটিকে-মোহনবাগানের বিশ্বস্ত প্রহরী। গত বছরের চ্যাম্পিয়ন দলেও ছিলেন। শূন্যে ভেসে আসা বল বা একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে দলকে বিপন্মুক্ত করতে দক্ষ। অরিন্দম নিজেও আত্মবিশ্বাসী। আইএসএলে সাম্প্রতিক ১৭ ম্যাচে ১০ বারই গোল না খেয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এসসি ইস্টবেঙ্গল ভাল খেলে নজর কাড়তে মরিয়া হবে। আমি আশাবাদী, গোল অক্ষত রেখে জিতে ফিরব।’’
ব্রাইটদের দলে এখনও স্পষ্ট নয় দেবজিৎ মজুমদার এবং সুব্রত পালের মধ্যে কে গোলে খেলবেন। সুব্রত সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েক বছর ডার্বিতে দুই প্রধানের গোলরক্ষা করেননি। সেখানে দেবজিতের সেই অভিজ্ঞতা তাজা। সুব্রত বলছেন, ‘‘এই ম্যাচটা সমর্থকদের ছাড়া খেলাটাই কঠিন। এই অভিজ্ঞতা অতীতে আমার কখনও হয়নি।’’
শতাব্দী প্রাচীন কলকাতার দুই বড় দলের রক্ষণেও বঙ্গসন্তানের ভিড়। এটিকে-মোহনবাগানে প্রীতম-শুভাশিস দুই প্রান্তে। এসসি ইস্টবেঙ্গলেও নারায়ণ-অঙ্কিত বা সার্থক থাকতে পারেন। প্রীতম ও শুভাশিস দু’জনেই শক্তপোক্ত চেহারার। ট্যাকল ভাল। ওভারল্যাপে যেতে পারেন। কিন্তু বিপক্ষ গতি বাড়ালে সমস্যায় পড়েন। উত্তরপাড়ার প্রীতম প্রথম পর্বের ডার্বি জিতে গান গাইতে গাইতে ফিরেছিলেন হোটেলে। তাঁর কথায়, ‘‘সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে এই ম্যাচ অনেক খেলেছি। তাই এই ম্যাচের গুরুত্ব জানি।’’ ডার্বি জিততে মরিয়া শুভাশিসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘লিগের শীর্ষে থাকতে গেলে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারাতেই হবে।’’
মাঝমাঠে বিপক্ষের আক্রমণ ভাঙার জন্যও দু’দলে রয়েছেন দুই বঙ্গসন্তান। এটিকে-মোহনবাগানের প্রণয় হালদার বৃহস্পতিবার মহড়া দিলেন ব্রাইটদের আক্রমণ ভাঙার। আর এসসি ইস্টবেঙ্গলের সার্থক গোলুই প্রত্যয়ী গলায় শুনিয়ে দেন, ‘‘আমরা তৈরি রয়েছি কৃষ্ণকে আটকানোর জন্য।’’
ডার্বিতে দুই দলে তুরুপের তাস হতে পারেন, সবুজ-মেরুনের প্রবীর দাস ও লাল-হলুদের মহম্মদ রফিক।
প্রবীরের ওভারল্যাপ ও বিষাক্ত সব ক্রস লাল-হলুদ রক্ষণকে ভাবাচ্ছে। উল্টোদিকে, মহম্মদ রফিক প্রথম আইএসএল ফাইনালের গোলদাতা। বড় ম্যাচে গোল রয়েছে। সোদপুরের ছেলে বলছেন, ‘‘লাল-হলুদ জার্সি গায়ে ডার্বিতে নামাটাই গর্বের। আমি নিজে গোল করে দলকে জেতাতে পারলে সমর্থকদের আরও খুশি করতে পারব।’’