সতর্ক: জয়ের মধ্যে থাকলেও হাল্কা দিতে নারাজ হাবাস। টুইটার
বছর দশেক আগে ব্রাজিলের বিখ্যাত ফ্ল্যামেঙ্গো ক্লাবে কিংবদন্তি রোনাল্ডিনহো গাউচোর সঙ্গে খেলেছেন। অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে নেমার, রবের্তো ফির্মিনো, কাসেমিরোদের পাশে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
২৯ বছর বয়সি ব্রাজিলীয় সেই স্ট্রাইকার দিয়েগো মরিসিয়োই এখন ওড়িশা এফসি-র তুরুপের তাস। রবিবার ৩০ মিনিটের জন্য পরিবর্ত হিসেবে নেমে জোড়া গোল করে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে দলের হার বাঁচিয়েছেন।
মরিসিয়ো যদি ওড়িশা এফসি-র সেরা ঘোড়া হন, তা হলে তাঁর দোসর মাঝমাঠের আর এক ব্রাজিলীয় ফুটবলার মার্সেলিনহো পেরেইরা। যিনি আইএসএল-কে চেনেন হাতের তালুর মতো। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে এই প্রতিযোগিতায় দিল্লি ও পুণের হয়ে খেলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। এ বার তাঁকে ওড়িশা এফসি-তে নিয়ে এসেছেন দলের ব্রিটিশ কোচ স্টুয়ার্ট উইলিয়াম ব্যাক্সটার। যিনি অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ফিনল্যান্ডে কোচিং করিয়ে এসেছেন।
ওড়িশা কোচের এই দুই ব্রাজিলীয়ই আপাতত ডার্বি জয়ের আনন্দ ভুলিয়ে প্রবীর দাস, প্রণয় হালদার, কার্ল ম্যাকহিউদের মনোনিবেশ করিয়েছে প্রতিযোগিতার পরবর্তী ম্যাচে।
সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস চেনেন মার্সেলিনহোকে। জানেন, চোখের পলকে রক্ষণ-চেরা পাস বাড়িয়ে যেমন গোল করান, তেমনই নিজে গোল করে বিপক্ষের দুঃসময় ডেকে আনার ক্ষমতা রাখেন ওড়িশার ১০ নম্বর জার্সিধারী। আইএসএলে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২২টি গোল করা এই ফুটবলার ৬৯টি সুযোগ তৈরির পাশাপাশি, ৬৬টি গোলের বল বাড়িয়েছেন সতীর্থদের। চকিতে ঘুরে গতিতে আক্রমণ শানানো, রামধনুর মতো বাঁকানো ফ্রি-কিক বা জোরালো শট মেরে দলকে এগিয়ে দেওয়ার মতো কাজগুলি করেন নিঃশব্দে। মরিসিয়ো চলে আসায় এই জুটি এখন অনেক ঝলমলে।
বোঝাই যাচ্ছে, ১১ দলের আইএসএলে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় নয় নম্বরে থাকা ওড়িশাকে নিয়েও ভাল মতো ময়নাতদন্ত শুরু করে দিয়েছেন হাবাস। আর তার জন্যই সোমবার সকালে তাঁর দলের রক্ষণ এবং মাঝমাঠের ফুটবলারদের কাছে বিপক্ষের এই জুটির সম্পর্কে জানতে চান। সেই আলোচনা থেকেই বেরিয়ে এসেছে ম্যাচে এই দুই ফুটবলারের জন্য কড়া নজর থাকবে বৃহস্পতিবার। প্রয়োজনে ডাবল কভারিংও হতে পারে। মার্সেলিনহো বা দিয়েগো একজনকে কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেও ফের আর একজনের সম্মুখীন হতে পারেন। সব সময়ে বলের কাছাকাছি যেন আরও দুই ফুটবলার থাকে। আর এই কাজ করতে হবে মাঝমাঠেই। নিজেদের বক্সের আগেই বিপক্ষের ব্রাজিলীয় ঝড় থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মার্সেলিনহো গোটা মাঠ জুড়ে খেলে ম্যাচটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। কোনও ভাবেই যেন মাঝমাঠ ও রক্ষণে ফুটবলারদের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৮-১০ গজের বেশি বেড়ে না যায়, তা হলেই বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। এটিকে-মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচ তাঁর ছেলেদের এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিপক্ষ দলে বিনীত রাইদের মতো একঝাঁক তরুণ ফুটবলার রয়েছেন। ফলে ওড়িশার বিদেশি এবং ভারতীয় ফুটবলারেরা এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নজরে পড়ার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঝাঁপাবেই। টানা দুই ম্যাচ জয়ের জন্য আত্মতুষ্টি যেন না আসে। একই সঙ্গে মাঝমাঠে পাস খেলায় ভুল যেন না হয়, তার অনুশীলনও সোমবার সন্ধ্যায় হয়েছে হাবাসের দলে। এটিকে-মোহনবাগানের পক্ষে সুখবর, চোটমুক্ত হয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন এদু গার্সিয়া। পুরো দল নিয়েই ঘণ্টা দেড়েক অনুশীলন হয় এ দিন। সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ আশাবাদী, পরিকল্পনা মতো খেলতে পারলে সবুজ-মেরুন রথ থামানো সহজ হবে না প্রতিপক্ষের কাছে।