গুরু-শিষ্য। সামাদের প্রতিভা চিনতে ভুল করেননি পাঠান।
ইরফান পাঠান না থাকলে হয়তো হারিয়েই যেতেন জম্মু ও কাশ্মীরের ক্রিকেটার আব্দুল সামাদ। আইপিএল-এর পৃথিবীতে ডাকই পেতেন না। ভারতের প্রাক্তন বাঁ হাতি পেসারের অভিজ্ঞ চোখ প্রতিভা চিনতে ভুল করেনি।
পাঠানের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার ফলাফল এখন পাচ্ছেন ১৮ বছরের ক্রিকেট প্রতিভা। কলকাতায় অনুষ্ঠিত আইপিএল-এর নিলামে সামাদকে দলে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। নতুন বছরের আইপিএল-এ সানরাইজার্সের জার্সিতে বেশ কয়েকটি ম্যাচ সামাদ খেলতে পারবেন বলেই বিশ্বাস পাঠানের।
সামাদকে কীভাবে আবিষ্কার করলেন পাঠান? রঞ্জি ট্রফির জন্য ক্যাম্প বসেছিল জম্মুর সায়েন্স কলেজের মাঠে। সেখানে সামাদকে এক ঝলক দেখেই পাঠান বুঝতে পেরেছিলেন এই ছেলের মধ্যে মশলা রয়েছে। ঠিকঠাক এগোলে এই ছেলে বহুদূর যাবে। পাঠান বলেছেন, ‘‘শট নেওয়ার ক্ষেত্রে ওর দক্ষতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। প্রাণহীন উইকেটে অনেকেই ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারছিল না। অথচ সামাদ কী অবলীলায় সব স্ট্রোক খেলছে। বড় ছক্কা মারতে পারে। লেগ স্পিন করতে পারে ভাল।’’
আরও পড়ুন: বিরাট-বুমরা থাকলেও উইজডেনের দশকের সেরা টি-টোয়েন্টি দলে নেই ধোনি-রোহিত
সামাদকে দেখার পরেই তাঁর জুনিয়র সার্কিটের স্কোরে চোখ বোলান জম্মু-কাশ্মীরের প্লেয়ার কাম মেন্টর পাঠান। তিনি বলছেন, ‘‘জুনিয়র সার্কিটে সামাদের রান দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। শর্টার ফরম্যাটে ও কেমন খেলে তা দেখতে চাই। সেই কারণে ২০১৮-১৯ সালের মুস্তাক আলি টুর্নামেন্টে নাগাল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলাই সামাদকে। অভিষেক ম্যাচে ৫১ বলে ৭৬ রান করে ও। সামাদের মারমুখী ইনিংসের জন্য ম্যাচ জিততে আমাদের সমস্যা হয়নি।’’
পাঠানের নজর কাড়ার আগে ১৮ বছরের সামাদ ছিলেন উপত্যকার ক্রিকেটে অখ্যাত এক নাম। পাঠানের ছোঁয়ায় বদলে যান সামাদ। এক বছরের মধ্যে টি টোয়েন্টি, লিস্ট এ ও রঞ্জি ট্রফির দলে সুযোগ এসে যায় তাঁর। চলতি মরসুমের রঞ্জিতে পাঁচটি ইনিংসে ২৪২ রান করেন সামাদ। তার মধ্যে একটি সেঞ্চুরি ও দু’টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। রঞ্জিতে অসমের বিরুদ্ধে ৭২ বলে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন সামাদ। আটটি ছক্কা ও সাতটি বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। তাঁর পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তাদের।
কলকাতার নিলামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাঁকে দলে নেয়। এ বার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তরুণ ক্রিকেটারদের দলে নেওয়ার দিকে নজর দিয়েছে। সামাদকেও নেওয়া হয়েছে। তাঁর এই উত্থানের জন্য পাঠানকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন সামাদ। তিনি বলেছেন, ‘‘ইরফান স্যরকে ধন্যবাদ। জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটে স্যর যোগ দেওয়ায় সোনায় সোহাগা হয়েছে। আমার পক্ষে একলা এতদূর এগনো সম্ভব হত না। ইরফান স্যর আমাকে খুবই সাহায্য করেছেন। আমার যাত্রা সবে শুরু হয়েছে। আরও পরিশ্রম করতে হবে আমাকে।’’
পাঠান স্যরের পরামর্শ ও নিজের পরিশ্রমে আইপিএল-এ ফুল ফোটাতে চান সামাদ।