দাপট: চেন্নাইকে হারিয়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে ঋদ্ধি। আইপিএল
রবিবার চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে তাঁর ৫৭ বলে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস জয় এনে দিয়েছে গুজরাত টাইটান্সকে। তার চেয়েও বড় বিষয়, এ বারের আইপিএলে হার্দিক পাণ্ড্যের দলে যোগ দেওয়ার পরে ব্যাটিংয়ের ধারা রাতারাতি পাল্টে ফেলেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। যাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং মুগ্ধ করেছে দলের মেন্টর গ্যারি কার্স্টেনকেও। কি ভাবে বাংলার উইকেটকিপার-ব্যাটার নিজের খেলার ধরন পাল্টে ফেললেন?
রবিবার ম্যাচের পরে জাতীয় দলের সতীর্থ মহম্মদ শামির সঙ্গে তা নিয়ে খোলামেলা কথাবার্তা বলেন ঋদ্ধি, যে ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে আইপিএল ওয়েবসাইটে। সেখানেই ঋদ্ধি জানান, ওপেনার হিসেবে প্রথম ছ’ওভারকে পুরোদস্তুর কাজে লাগাতে তিনি বড় শট নেওয়ার বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন। শামিকে তিনি বলেন, ‘‘তুমি তো আমার সঙ্গে কলকাতায় ক্লাব ক্রিকেট এবং বংলার হয়েও দীর্ঘ সময় খেলেছ। আমি বরাবর শুরুর দিকের ওভারগুলোতে দ্রুত রান তুলতে পছন্দ করি। নিজের আয়ত্তের মধ্যে যে শটগুলো রয়েছে, তা কাজে লাগিয়েই এ বারের আইপিএলে দলকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। সেই দায়িত্বটা ভাল উপভোগও করছি।’’ যোগ করেন, ‘‘শর্ট বলেও যাতে লম্বা শট নিতে পারি, তার জন্য আইপিএলের আগে বিশেষ প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। ’’
চেন্নাইয়ের ১৩৩ রান তাড়া করতে গিয়ে একট সময় গুজরাতের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১০০। শামি প্রশ্ন করেন, সেই সময় তাঁর মাথায় কি চিন্তা ঘুরছিল? এখনও পর্যন্ত ৮ ম্যাচে ২৮১ করে ফেলা ঋদ্ধি বলেন, ‘‘রানটা খুব বেশি ছিল না। আমাদের মনে হয়েছিল, প্রথম ছয় ওভারে ৫০-এর উপরে রান উঠে গেলে বিশেষ ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তখন জোর দিয়েছিলাম খুচরো রান নেওয়ার উপরে। তার মধ্যে চার মারার বল পেলে মারব। এমনই সহজ পরিকল্পনা নিয়ে ম্যাচটা খেলেছিলাম। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।’’
এর পরে ঋদ্ধি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন সতীর্থ শামিকে। এই আইপিএলে পাওয়ারপ্লে-এর সময় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যাটারই তেমন স্বস্তিতে খেলতে পারেননি। এই সাফল্যের নেপথ্যে কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে? এখনও পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে ফেলা শামি বলেছেন, ‘‘কোনও রহস্য নেই। টেস্ট ম্যাচে যে লাইন এবং লেংথ মেনে আমি বোলিং করি, সেটাই বজায় রেখেছি। লাইন এবং লেংথে নিখুঁত থাকতে পারলে কোনও ম্যাচেই বিশেষ চাপে পড়তে হয় না।’’ ঋদ্ধি জানতে চান, কুড়ির ক্রিকেটে যারা আগ্রাসী ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত, তাঁরাও এ বার শামির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকছেন। তার কারণ কি? শামি বলেন, ‘‘কোন ক্রিকেটারের বাইরের অথবা ভিতরের দিকে চলে আসা বলে দুর্বলতা রয়েছে, সেই বিষয়টা মাথায় রাখতে হয়। সেই অনুযায়ী সুইংয়ে বৈচিত্র এনে সফল হচ্ছি। ’’
রবিবার ঋদ্ধির ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ কার্স্টেন বলেন, ‘‘ওর ব্যাটিং মুগ্ধ করেছে। আইপিএল-সহ সব ধরনের ক্রিকেট সম্পর্কে খুব ভাল অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাওয়ার-প্লে চলাকালীন কী করতে হবে, তা খুব ভাল ভাবে জানে ঋদ্ধিমান। মাঠে নেমেই কাজ শুরু করে দেয়। স্কোরবোর্ডকে সচল রাখে ও।’’