এ বারের আইপিএলে ভাল খেলতে পারেননি হ্যারি ব্রুক (বাঁ দিক থেকে), সুনীল নারাইন, পৃথ্বী শ’রা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এ বারের আইপিএলে নিজেদের পারফরম্যান্সের জেরে নজর কেড়েছেন বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার। কিন্তু এমন অনেক ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা ভাল খেলতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে অনেকে প্রথম একাদশ থেকে জায়গা হারিয়েছেন। অনেককে আবার সুযোগ দিলেও কাজের কাজ করতে পারেননি তাঁরা। আইপিএলের এমন ১২ জন ক্রিকেটার বেছে নিয়েছে আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁদেরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এ বারের আইপিএলের ব্যর্থ একাদশ। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারও রয়েছেন সেই তালিকায়।
পৃথ্বী শ (দিল্লি ক্যাপিটালস): এ বারের আইপিএলে শুরুর দিকে সুযোগ পেলেও রান করতে পারেননি পৃথ্বী। ফলে কয়েক ম্যাচ পরে তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শেষ দিকে আবার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু রান পাননি। ৮টি ম্যাচে মাত্র ১০৬ রান করেছেন পৃথ্বী। মাত্র একটি অর্ধশতরান এসেছে তাঁর ব্যাটে।
রহমানুল্লা গুরবাজ় (কলকাতা নাইট রাইডার্স): কেকেআরের হয়ে ১১টি ম্যাচ খেলেছেন গুরবাজ়। কয়েকটি ম্যাচে রান পেলেও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি তিনি। ১১ ম্যাচে ২২৭ রান করেছেন গুরবাজ়। মাত্র দু’টি অর্ধশতরান করেছেন। কেকেআর তাঁর উপর যে ভরসা দেখিয়েছে তার প্রতিদান দিতে পারেননি আফগানিস্তানের এই ব্যাটার।
নীতীশ রানা (কলকাতা নাইট রাইডার্স): ১৪ ম্যাচে ৪১৩ রান করলেও এ বারের আইপিএলে সব থেকে খারাপ অধিনায়কত্ব করেছেন নীতীশ। দল নির্বাচন থেকে শুরু করে পিচের পরিস্থিতি বোঝা— সব কিছুতেই বার বার ভুল করেছেন। ম্যাচের মাঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়েছেন নীতীশ। তাই তিনিই এই দলের অধিনায়ক।
অম্বাতি রায়ডু (চেন্নাই সুপার কিংস): এ বারের আইপিএলে ১৫টি ম্যাচেই রায়ডুর উপরে ভরসা দেখিয়েছেন ধোনি। কিন্তু অধিনায়কের ভরসার জবাব দিতে পারেননি তিনি। মাত্র ১৩৯ রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। রায়ডু রান না পাওয়ায় কিছু ম্যাচে মিডল অর্ডারে সমস্যায় পড়েছে চেন্নাই।
হ্যারি ব্রুক (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ): আইপিএলের অন্যতম দামি ক্রিকেটার। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে শতরান করলেও ব্যর্থ একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ব্রুক। কারণ, সেই শতরানের পরেও ১১ ম্যাচে মাত্র ১৯০ রান করেছেন তিনি। বাধ্য হয়ে কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে বসিয়ে দিয়েছে দল।
ক্রুণাল পাণ্ড্য (লখনউ সুপার জায়ান্টস): লোকেশ রাহুল চোট পাওয়ার পরে লখনউয়ের অধিনায়ক করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ব্যাটে-বলে দলকে ভরসা দিতে পারেননি তিনি। ১৫ ম্যাচে ১৮৮ রান করেছেন। নিয়েছেন মাত্র ৯ উইকেট। তাঁর অধিনায়কত্বও সমস্যায় ফেলেছে দলকে।
দীনেশ কার্তিক (আরসিবি): গত বার ভাল খেলে নজর কেড়েছিলেন। ফিনিশারের তকমা জুটেছিল। কিন্তু এ বার ব্যর্থ আরসিবির এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১৩ ম্যাচে ১৪০ রান করেছেন। বিরাট কোহলিদের প্লে-অফ থেকে বিদায়ের নেপথ্যে একটি কারণ কার্তিক। তাই ব্যর্থ একাদশে জায়গা পেয়েছেন তিনি।
সুনীল নারাইন (কলকাতা নাইট রাইডার্স): কেকেআরের পুরনো সৈনিকের ধার কমেছে। বলে আগের মতো ঘূর্ণি নেই। ব্যাটটাও ঠিক মতো করতে পারছেন না। এ বারের আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন নারাইন। করেছেন মাত্র ২১ রান।
স্যাম কারেন (পঞ্জাব কিংস): আইপিএলের সব থেকে দামি ক্রিকেটার। তাঁর উপর পঞ্জাবের যা ভরসা ছিল তার ধারেকাছেও যেতে পারেননি ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। ১৪ ম্যাচে ২৭৬ রান করেছেন। নিয়েছেন ১০ উইকেট। কারেন ছন্দে না থাকায় প্লে-অফ উঠতে পারেনি পঞ্জাব।
রাহুল চাহার (পঞ্জাব কিংস): মুম্বইয়ের হয়ে ভাল খেললেও পঞ্জাবের হয়ে একেবারেই ভাল খেলতে পারেননি চাহার। ১৪ ম্যাচে মাত্র ৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। চাহার উইকেট নিতে না পারায় মিডল অর্ডারে সমস্যায় পড়েছে পঞ্জাব।
উমরান মালিক (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ): এ বারের আইপিএলে উমরানের উপর নজর ছিল সবার। কিন্তু সে ভাবে খুঁজেই পাওয়া গেল না জম্মু-কাশ্মীরের এই পেসারকে। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে খেলানোর পরে তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়। উমরানকে না খেলানোয় হায়দরাবাদের অধিনায়ক আইডেন মার্করামের অনেক সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু যে কয়েকটি ম্যাচে খেলেছেন তাতে তেমন নজর কাড়তে পারেননি উমরান। ৮ ম্যাচে মাত্র ৫টি উইকেট নিয়েছেন। তাই তাঁর জায়গা হয়েছে এই দলে।
আবেশ খান (লখনউ সুপার জায়ান্টস): এ বারের আইপিএলের আর এক ব্যর্থ বোলার। ৯ ম্যাচ খেলে মাত্র ৮ উইকেট নিয়েছেন। নতুন বল হোক বা পুরনো বল, নজর কাড়তে পারেননি আবেশ। তাঁকে বাধ্য হয়ে কয়েকটি ম্যাচে বসিয়ে রাখতে হয়। এই দলেও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের ভূমিকায় খেলবেন তিনি।