কোহলি এবং গম্ভীরের ঝামেলার সেই মুহূর্তের ছবি দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ মিম তৈরি করেছে। — ফাইল চিত্র
লখনউ বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচে বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীরের মধ্যে ঝামেলা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু হাস্যরসের উপাদানও কম নেই। কোহলি এবং গম্ভীরের সেই ঝামেলার ছবি দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রচুর ‘মিম’। কলকাতা পুলিশও মানুষকে সচেতন করতে তেমনই একটি মিম তৈরি করেছিল। কিন্তু লালবাজার গোল খেয়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে। তারা এমন একটি মিম তৈরি করেছে যা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে।
কোহলি এবং গম্ভীরের ঝামেলার সেই মুহূর্তের ছবি দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ লিখেছে, “আমাদের কাছে কোনও সমস্যাই ‘বিরাট’ এবং ‘গম্ভীর’ নয়। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ১১২ নম্বরে ফোন করুন।” সেই ছবিটি পোস্ট করার সময় ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “তর্কাতর্কি এড়িয়ে যান। কিন্তু আমাদের ফোন করতে ভুলবেন না।”
এই মিমটি সমাজমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ সেই ছবিটিতে ‘লাইক’ করেছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ লোকের কাছে পৌঁছেছে সেই পোস্ট। টুইট ব্যবহারকারীরাও বুদ্ধিদীপ্ত এই পোস্টের প্রশংসা করেছেন।
মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি বার্তা দেওয়া হয়। সেখানে জানানো হয়, কেউ যদি আপনার কাছ থেকে ফোনের ওটিপি চান তা হলে কিছু বলবেন না, চুপ করে থাকুন। সঙ্গে গম্ভীর ও কোহলির দু’টি ছবি দেয় তারা, যেখানে দেখা যাচ্ছে দু’জনেই চুপ করার ভঙ্গিতে মুখে আঙুল দিয়ে রয়েছেন। এ বারের আইপিএলেই বেঙ্গালুরুর মাঠে গম্ভীরকে ও লখনউয়ের মাঠে কোহলিকে এই ভঙ্গিতে দেখা গিয়েছে। সেই ছবি দু’টিই ব্যবহার করে কলকাতা পুলিশ।
জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্য এর আগেও কলকাতা পুলিশের তরফে এই ধরনের অভিনব বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে জায়গা হয়েছে ক্রিকেট মাঠে ঘটা বিভিন্ন ঘটনার। যেমন, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে যশপ্রীত বুমরার করা নো-বল। সেই তালিকায় এ বার জায়গা করে নিলেন কোহলি-গম্ভীরও।
সোমবার ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনউয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাঁকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে আসেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
কিন্তু সেখানেই সব থেমে যায়নি। তিনি যে গম্ভীরের কথা ভাল ভাবে নেননি সেটা কোহলির চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলের সঙ্গে অনেক ক্ষণ কথা বলেন তিনি। ঠিক সেই সময় সেখানে উপস্থিত হন লখনউয়ের মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। তাঁর সঙ্গে অবশ্য হাত মেলান কোহলি। মাঠের মধ্যে ঝামেলা করায় কোহলি ও গম্ভীরের ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া হয়েছে।