কোহলির নেতৃত্বে জয়ে ফিরল বেঙ্গালুরু। ছবি: আইপিএল
শুরুতে ব্যাট হাতে ফাফ ডুপ্লেসির অনবদ্য ৮৪। পরে বল হাতে মহম্মদ সিরাজের চার উইকেট। বৃহস্পতিবার আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিল বেঙ্গালুরু। পঞ্জাব কিংসকে হারাল ২৪ রানে। প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি তুলেছিল ১৭৪। জবাবে মোহালিতে ঘরের মাঠে ১৫০ রানেই আটকে যায় পঞ্জাব।
পঞ্জাবের ব্যাটিং একেবারেই দাঁড়াতে পারেনি কোহলিদের বিরুদ্ধে। পঞ্জাবের হয়ে ওপেন করতে নামা প্রভসিমরন সিংহ একটা দিক ধরে রাখলেও উল্টো দিক থেকে একের পর এক উইকেট পড়ে যাচ্ছিল। মহম্মদ সিরাজের প্রথম বলে অথর্ব তাইড়ে চার মারেন। দ্বিতীয় বলেই তাঁকে এলবিডব্লিউ করেন সিরাজ। তৃতীয় ওভারে ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ এসে তুলে নেন বিপজ্জনক ম্যাথু শর্টকে। মারকুটে ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোনও কিছু করতে পারলেন না। তাঁকেও ফেরান সিরাজ।
হরপ্রীত সিংহ ভাটিয়া এসে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রভসিমরনের সৌজন্যে তা হল না। রান নিতে গিয়ে দু’জনের ভুল বোঝাবুঝি হয়। সিরাজের অনবদ্য থ্রোয়ে ফিরে যান ভাটিয়া। অধিনায়ক স্যাম কারেনও কিছু করতে পারেননি। ১২ বলে ১০ করেন। শেষ দিকে একটা চেষ্টা করেছিলেন উইকেটকিপার জিতেশ শর্মা। কিন্তু ২৭ বলে তাঁর ৪১ রান কাজে লাগল না।
তার আগে, পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ১৭৪-৪ তোলে বেঙ্গালুরু। আশা জাগিয়েও বড় রান হয়নি। ডুপ্লেসি এবং কোহলি দু’জনেই অর্ধশতরান করেন। শতরানের জুটিও হল। কিন্তু শেষ দিকে রান তোলার গতি অনেকটাই কমে যায়। তাই দুশোর আশা জাগিয়েও ওঠেনি। তাতে ম্যাচ জিততে অসুবিধা হল না।
টসের সময় কোহলি জানিয়েছিলেন, নিয়মিত অধিনায়ক ডুপ্লেসির হালকা চোট রয়েছে। তাই তিনি ফিল্ডিং করতে পারবেন না। সে কারণে এই ম্যাচে তাঁকে অন্তর্বর্তিকালীন অধিনায়ক হতে হয়েছে। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে মনে হল না আদৌ ডুপ্লেসির কোনও চোট রয়েছে। এতটাই সাবলীল ভাবে ব্যাট করলেন তিনি।
প্রথম থেকেই পঞ্জাবের বোলারদের আক্রমণ করতে শুরু করেন দুই ব্যাটার। দীর্ঘ দিন বাদে অধিনায়কত্ব পেয়ে কোহলি যেমন সাবলীল, তেমনই ‘চোট’ নিয়ে খেলা ডুপ্লেসিও। একমাত্র স্যাম কারেন বাদে পঞ্জাবের কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি এই দু’জন। কোহলির ব্যাট থেকে দুর্দান্ত কভার ড্রাইভ দেখা গেল। তবে পিচ একটু ধীর গতির থাকার কারণে আগের ম্যাচের অত বেশি হাত খুলে খেলতে দেখা যায়নি। তবে প্রত্যেক ওভারে রান তোলার গতি ভালই ছিল।
আইপিএলে ব্যাট করতে নেমে শতরানের জুটি গড়ার ব্যাপারে কোহলির কোনও জুড়ি নেই। অতীতে ক্রিস গেলের সঙ্গে অন্তত চার বার এই কাজ করেছেন। ডুপ্লেসির সঙ্গে এই নিয়ে তিনটি শতরানের জুটি হয়ে গেল। দেবদত্ত পাড়িক্কল এবং তিলকরত্নে দিলশানের সঙ্গে দু’টি করে রয়েছে।
১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ডুপ্লেসির সহজতম ক্যাচ মিস্ করেন পঞ্জাব উইকেটকিপার জিতেশ শর্মা। তখন ৬৮ রানে ব্যাট করছিলেন ডুপ্লেসি। প্রোটিয়া ব্যাটার আউট হলেন কয়েক ওভার পরেই। তত ক্ষণে তাঁর নামের পাশে আরও ১৬ রান জুড়ে গিয়েছে।
বেঙ্গালুরুর জোড়া ধাক্কা দেন হরপ্রীত ব্রার। ১৭তম ওভারে বল করতে এসে ফেরান কোহলিকে। প্যাডল সুইপ করতে গিয়েছিলেন কোহলি। ব্যাটের কানায় লেগে বল লেগ সাইডের দিকে যাচ্ছিল। বাঁ দিকে কিছুটা ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরে নেন জিতেশ। পরের বলেই আউট গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। প্রথম বলেই কোনও অজ্ঞাত কারণে বল আকাশে ওড়াতে গেলেন। ক্যাচ ধরলেন অথর্ব তাইড়ে। পরে ডুপ্লেসি আউট হতেই বোঝা যায় বেঙ্গালুরুর রান বেশি হবে না। কিন্তু তখনও জানা ছিল না বেঙ্গালুরু এত সহজে ম্যাচটা জিতবে।