বাংলার যখন মাত্র ছ’জন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন, সেই সময় দিল্লি, তামিলনাড়ুর ১৩ জন, কর্ণাটকের ১১ জন, পঞ্জাবের ১০ জন, রাজস্থান, মুম্বইয়ের ৯ জন করে ক্রিকেটার আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলির এত জন করে ক্রিকেটার আইপিএল খেলার সুযোগ পেলেও বাংলা কেন পিছিয়ে?
গুজরাত দলে মহম্মদ শামি। ছবি: আইপিএল
ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম সারির দলগুলির একটি। এ বারের রঞ্জিতে সব ম্যাচ জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ পর্বে সকলের উপরে। সাদা বলের ক্রিকেটে ট্রফি না পেলেও বড় দলগুলির বিরুদ্ধে সাফল্য এসেছে। কিন্তু সেই বাংলা দল থেকে আইপিএলে মাত্র ৬ জন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলা থেকে কেন এত কম ক্রিকেটার সুযোগ পান কোটিপতি লিগের দলগুলিতে?
এ বারের আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে খেলছেন ঋদ্ধিমান সাহা এবং মহম্মদ শামি। পঞ্জাব কিংসে খেলছেন ঈশান পোড়েল এবং ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে খেলছেন শাহবাজ আহমেদ এবং আকাশ দীপ। এই ছয় ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন। নিলামে নাম দিয়েছিলেন ১৪ জন। সেখানে মনোজ তিওয়ারি, শ্রীবৎস গোস্বামী, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন প্রয়াস রায় বর্মণ, ঋত্বিক রায় চৌধুরীর মতো তরুণরাও।
বাংলার যখন মাত্র ছ’জন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন, সেই সময় দিল্লি, তামিলনাড়ুর ১৩ জন, কর্ণাটকের ১১ জন, পঞ্জাবের ১০ জন, রাজস্থান, মুম্বইয়ের ৯ জন করে ক্রিকেটার আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলির এত জন করে ক্রিকেটার আইপিএল খেলার সুযোগ পেলেও বাংলা কেন পিছিয়ে?
আরসিবি-র হয়ে দুরন্ত ছন্দে আকাশ দীপ। ছবি: আইপিএল
আনন্দবাজার অনলাইনকে বাংলা দলের কোচ অরুণ লাল বললেন, “আমাদের দল এখন একটা সন্ধিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আইপিএল তরুণ ক্রিকেটারদের খেলা। আমাদের দলের তরুণ ক্রিকেটাররা কয়েক বছর পর ঠিক সুযোগ পাবে। করণ লাল, প্রদীপ্ত প্রামানিক, প্রয়াস রায় বর্মণরা বাংলা দলে নিয়মিত না খেললে ওরা আইপিএল খেলবে কী করে?”
বাংলার অনূর্ধ্ব ২৫ দলের কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। তিনি নিজেও আইপিএল খেলেছেন। ২০০৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সে ছিলেন তিনি। এর পর ২০১৪ সালে তাঁকে দলে নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (এখন দিল্লি ক্যাপিটালস)। ২০১৫ সালে ছিলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলে। লক্ষ্মী বললেন, “আইপিএলে খেলতে হলে রাজ্যের হয়ে ভাল খেলতে হবে। রাজ্যের হয়ে নজর কাড়তে না পারলে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দলে নেবে কেন? প্রদীপ্ত অনূর্ধ্ব ২৫ দলে ভাল খেলছে। সিনিয়র দলেও সুযোগ পেতে হবে ওকে। তবেই নজর কাড়তে পারবে। আইপিএল খেলতে পারবে।”
যে ১৪ জন ক্রিকেটার নাম দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ঋত্বিক রায় চৌধুরীর সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন বাংলার কোচ। অরুণ বললেন, “সাদা বলের ক্রিকেটে ঋত্বিক ভাল খেলেছে। ওর সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল।” বাংলার একাধিক ক্রিকেটারকে আইপিএলে দেখার জন্য মুখিয়ে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু বাংলার কোচ আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে বলছেন। তবে তাঁর একটা আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে। ট্রফি না জেতার আক্ষেপ। সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলা ভাল খেলেছে, কিন্তু ট্রফি? সেটাই তো নেই। তাঁর মতে ট্রফি জিততে পারলে হয়তো দলের ক্রিকেটারদের কাছে আইপিএল খেলার সুযোগ আরও কিছুটা বেশি থাকত।
আইপিএল শেষ হলে রঞ্জির নক আউট পর্ব। সেখানে বাংলা হয়তো মুখোমুখি হবে ঝাড়খণ্ডের। আইপিএলে বেশি ক্রিকেটার খেলছেন না বলে যে বাড়তি অনুশীলনের সুযোগ পাবে বাংলা, এমনটা মনে করছেন না অরুণ লাল। তিনি বললেন, “সব দলের ক্রিকেটাররাই ব্যস্ত বিভিন্ন খেলায়। কেউই অনুশীলনে বাড়তি সুবিধা পাবে না। এখনও বাংলার অনুশীলন শুরুও হয়নি।”