গত শনিবার গম্ভীরের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বোর্ডকে একটি চিঠি লেখেন বিরাট। — ফাইল চিত্র
ঘটনার পর সাত দিন কেটে গিয়েছে। এখনও বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীরের ঝামেলা নিয়ে চর্চা থামেনি। বেঙ্গালুরুর কোহলি এবং লখনউয়ের নবীন উল হক প্রথমে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেখান থেকে ঝামেলা বাধে গম্ভীরের সঙ্গে। দু’জনের ঝগড়া দেখে অবাক দু’দলের ক্রিকেটাররাই। প্রথম পর্বের সাক্ষাতে যে দৃশ্য তাঁরা দেখেছিলেন, তার সঙ্গে এই ঝগড়া তাঁরা মেলাতে পারেননি।
কী হয়েছিল প্রথম পর্বে?
বেঙ্গালুরুর মাঠে মুখোমুখি হওয়ার আগে কোহলি, গম্ভীর এবং লখনউয়ের সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়া ৪৫ মিনিট আলোচনা করেছিলেন। সেই আলোচনা ছিল যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ। তিন জনেই দিল্লির। তাই এক সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আড্ডা মারার ভঙ্গিতে কথা বলতে গিয়েছিল তাঁদের।
এক সংবাদপত্রের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, লখনউয়ের ক্রিকেটার নবীনের উদ্দেশে কোহলি কিছু বলার পরেই ঝামেলা বেড়ে যায়। গম্ভীর নাকি প্রচণ্ড রেগে যান। তার আগে কাইল মায়ার্স আউট হওয়ার সময়েও কোহলি কিছু বলেছিলেন। এই দু’টি ঘটনা দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি গম্ভীর। নিজের দলের ক্রিকেটারদের রক্ষা করতে সরাসরি কোহলির সঙ্গে সংঘাতের রাস্তাই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
গত ১ মে লখনউয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে খেলতে নেমেছিল বেঙ্গালুরু। ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনউয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাঁকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেছিলেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেছিলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেছিলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে এসেছিলেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেছিলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে গিয়েছিল।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেছিলেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
এর পরে ম্যাচ ফি-র পুরোটাই জরিমানা করা হয় বিরাটের। একই শাস্তি পেতে হয় গম্ভীরকেও। তুলনায় শাস্তি কম হয় নবীনের। তাঁর ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়।
গত শনিবার গম্ভীরের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বোর্ডকে একটি চিঠি লেখেন বিরাট। জানিয়েছেন যে, বোর্ড তাঁর ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়াতে তিনি খুশি নন। সেই সঙ্গে বিরাট জানিয়েছেন, তিনি এমন কিছু বলেননি গম্ভীরকে যার জন্য এত বড় শাস্তি দেওয়া হল।