১৬ বারের আইপিএলে ধোনি সব থেকে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। —ফাইল চিত্র
শুরু ২০০৮ সালে। আইপিএলে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যুগের শুরু। তাঁর সঙ্গে তখন অধিনায়ক হিসাবে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকর, শেন ওয়ার্ন, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, অনিল কুম্বলে, কুমার সঙ্গকারা এবং গৌতম গম্ভীর। ২০২৩ সালে ধোনির পাশে বাকি নয় অধিনায়ক নীতীশ রানা, হার্দিক পাণ্ড্য, সঞ্জু স্যামসন, লোকেশ রাহুল, ফ্যাফ ডুপ্লেসি, ভুবনেশ্বর কুমার, ডেভিড ওয়ার্নার, রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ান। ২০০৮ সালের আইপিএলে এঁদের অধিকাংশই খেলেননি এবং খেললেও অধিনায়ক হওয়ার ধারে কাছেও ছিলেন না। ছিলেন শুধু ধোনি। আছেনও।
অনেকেই বলেন ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না জিতলে হয়তো আইপিএল হত না। লম্বা চুলের ধোনির বিশ্বকাপ হাতে দৌড় তখন ভারতবাসীর চোখে ভাসছে। কাঁধ পার করে চুল রাখতে শুরু করেছেন অনেকে। সেই আবেগ কী ভাবে কাজে লাগাতে হয় ভালই বুঝতে পেরেছিলেন ললিত মোদী। দেরি করেননি কোটিপতি লিগ শুরু করতে। যে আইপিএল আজও চলছে। সেই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে টাকার পাহাড়ের উপরে বসিয়ে দিচ্ছে।
চেন্নাই সুপার কিংস ২০০৮ সালে ৬ কোটি টাকার বেশি দিয়ে কিনেছিল ধোনিকে। সেই সময় এই টাকাই ছিল বিরাট অঙ্ক। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক যদিও সে বার আইপিএল জিততে পারেননি, কিন্তু চেন্নাই তাঁকে ধরে রাখে। দু’বছরের জন্য চেন্নাই নির্বাসিত হওয়ায় অন্য দলে খেলেন ধোনি। সেই দু’বার রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। ১৬ বারের আইপিএলে ধোনি সব থেকে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। চেন্নাইয়ের হয়ে গত বার শুরুতে নেতৃত্ব ছাড়লেও পরে তাঁকেই হাল ধরতে হয়েছিল। রবীন্দ্র জাডেজার হাতে শুরুটা ভাল হয়নি চেন্নাইয়ের। এ বারে তাই আর কোনও ভাবেই নেতৃত্ব ছাড়ার কথা বলেননি ধোনি।
গত বার আইপিএলে চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচে ধোনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি ভারতের বিভিন্ন শহরে খেলতে চান। —ফাইল চিত্র
গত বার আইপিএলে চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচে ধোনিকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি আর আইপিএল খেলবেন কি না। ধোনি উত্তরে বলেছিলেন, “অবশ্যই। খুব সহজ ব্যাপার। চেন্নাইয়ে না খেলে বিদায় জানানোটা খুব অন্যায় হবে। মুম্বই এমন একটা জায়গা যেখানে দল এবং ব্যক্তিগত ভাবে অনেক ভালবাসা পেয়েছি। কিন্তু চেন্নাইয়ের সমর্থকদের জন্য সেটা খুব খারাপ হবে। আশা করি পরের বছর বিভিন্ন মাঠে খেলা হবে। তাই বিভিন্ন মাঠে গিয়ে, বিভিন্ন শহরে গিয়ে ধন্যবাদ জানাতে পারব। তবে সেটাই আমার শেষ বছর কি না সেটা বড় প্রশ্ন। দু’বছর পর কী হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। পরের বছর আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করব।”
ধোনি ফিরেছেন। আরও এক বার। অনেকে বলছেন হয়তো এটাই শেষ। ২০১৯ সালে যে ধোনিকে শেষ বার ভারতীয় জার্সিতে দেখা গিয়েছিল, তাঁকে হয়তো আইপিএলেও আর দেখা যাবে না। ৪১ বছরের ধোনির পক্ষে আরও একটা আইপিএল খেলা কি সম্ভব? রোহিত শর্মা মনে করছেন সম্ভব। জোর গলায় তিনি বলেন, “গত ২-৩ বছর ধরে শুনছি এটাই নাকি ধোনির শেষ মরসুম। আমার মনে হয় আরও কয়েকটা মরসুম খেলার মতো ফিট রয়েছে ও।”
ভক্তরা চাইবেন ধোনিকে দেখতে। ধোনি এ বার সারা ভারত ঘুরে ঘুরে খেলবেন। বিভিন্ন শহরে গিয়ে দর্শকদের বিদায় জানাবেন। চেন্নাইয়ের দর্শককে বিদায় জানাবেন। তার পর ইচ্ছা হলে হয়তো আরও এক বার খেলবেন। ধোনি কি আর জানিয়ে বিদায় নেন? হঠাৎ করে কোন দিন জানা যাবে চেন্নাইয়ের জার্সিটাও খুলে রাখলেন ধোনি।