সঞ্জু স্যামসন। —ফাইল চিত্র।
১৯৬ রান তুলেও হার রাজস্থান রয়্যালসের। এ বারের আইপিএলে প্রথম বার হারলেন সঞ্জু স্যামসনেরা। বুধবার রশিদ খানের দাপটে শেষ বলে ম্যাচ জিতল গুজরাত টাইটান্স। রিয়ান পরাগ এবং সঞ্জু স্যামসনের দাপটে প্রথমে ব্যাট করে ১৯৬ রান তুলে নেয় রাজস্থান। কিন্তু সেই রান তুলেও হারতে হল তাদের। নেপথ্যে শুভমন গিল, রশিদ খানদের মরিয়া লড়াই।
বুধবার জয়পুরে বৃষ্টি হয়। সেই কারণে খেলা ১০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছিল। গুজরাত ব্যাট করার সময়েও বৃষ্টি পড়ে। ফলে ম্যাচের মাঝেও কিছু সময় নষ্ট হয়। টস জিতে রাজস্থানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন গুজরাত অধিনায়ক শুভমন। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে সুবিধাই হয় সঞ্জুদের। দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (২৪) এবং জস বাটলার (৮) অবশ্য খুব বেশি রান করতে পারেননি। ৪২ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় রাজস্থান। সেখান থেকে পরাগ (৭৬) এবং সঞ্জু (৬৮) মিলে ১৩০ রানের জুটি গড়েন।
১৫ ওভার শেষে রাজস্থানের ১৩৪ রান ছিল। হাতে উইকেট থাকলে যে কোথায় পৌঁছে যাওয়া যায়, সেটাই দেখালেন সঞ্জুরা। শেষ ৫ ওভারে রাজস্থান তুলল ৬২ রান। এর নেপথ্যে পরাগ এবং সঞ্জু ছাড়াও রয়েছেন শিমরন হেটমেয়ার। ৮ বল বাকি থাকতে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ৫ বলে ১৩ রান করে দলকে ১৯০ রান পাড় করিয়ে দিলেন।
পরাগ ৪৮ বলে ৭৬ রান করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল পাঁচটি ছক্কা এবং তিনটি চার। এ বারের আইপিএলে শুরু থেকেই ফর্মে রয়েছেন পরাগ। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে করেছিলেন ৪৩ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে তিনি ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ৫৪ রান করেছিলেন পরাগ। সেই ম্যাচেও অপরাজিত ছিলেন তিনি। শুধু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মাত্র ৪ রান করেছিলেন। এ দিন আবার অর্ধশতরান করলেন অসমের ব্যাটার।
গুজরাতের হয়ে শুরুটা ভাল করেছিলেন সাই সুদর্শন এবং শুভমন গিল। ৬৪ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। সুদর্শন ৩৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও শুভমন শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ম্যাথু ওয়েড (৪) এবং অভিনব মনোহর (১) রান না পাওয়ায় চাপ বেড়ে যায় গুজরাতের। শুভমন একাই লড়াই করছিলেন। ৪৪ বলে ৭২ রান করেন তিনি। কিন্তু বড় শট খেলতে গিয়ে যুজবেন্দ্র চহালের বলে স্টাম্পড হয়ে যান শুভমন।
শুভমন আউট হয়ে যাওয়ার পর গুজরাতের সমর্থকেরা জয়ের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল তেওয়াটিয়া এবং রশিদ খান আশা ছাড়েননি। তাঁরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। ৩৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন তাঁরা। রশিদ ব্যাট করতে নামার সময় গুজরাতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। হাতে ছিল ১৫ বল। রশিদ ১১ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। জয়ের রানটাও এল তাঁর ব্যাট থেকে। কৃতিত্ব দিতে হবে তেওয়াটিয়াকেও। তিনি ১১ বলে ২২ রান করে রান আউট হয়ে যান। কিন্তু শেষ বলে চার মেরে দলকে জেতালেন রশিদ।
গুজরাতের হয়ে উইকেট নেওয়ার কাজটা শুরু করেছিলেন কুলদীপ সেন। তিনি সুদর্শনের উইকেট নেওয়ার পর ওয়েড এবং অভিনবকেও আউট করেন। শুভমনের উইকেটটি নেন যুজবেন্দ্র চহাল। বিজয় শঙ্করকেও আউট করেন তিনিই। অশ্বিন উইকেট না পেলেও একটা সময় রান আটকে রেখেছিলেন। পরে যদিও ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে শেষ করেন তিনি। চহাল ২ উইকেট নিলেও দেন ৪৩ রান। কেশব মহারাজ ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসাবে নেমে ২ ওভারে মাত্র ১৬ রান দেন। কিন্তু রাজস্থানকে ভুগতে হল শেষ তিন ওভারে কুলদীপ এবং আবেশ খান রান দিয়ে ফেলায়। হাতে ট্রেন্ট বোল্টের মতো পেসার থাকলেও তাঁকে ডেথ ওভারে ব্যবহার করল না রাজস্থান। সেই ভুলের মাসুল দিতে হল এ বারের আইপিএলের প্রথম হার দিয়ে।