পঞ্জাবের বিরুদ্ধে লজ্জার হার কেকেআরের। ছবি: আইপিএল।
এ বারের আইপিএলে ইডেনের পিচ ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য। ফর্মে না থাকা ব্যাটারকেও আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। আগের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রজত পাটীদার রান পেয়েছিলেন। শুক্রবার ইডেন ফর্মে ফেরাল জনি বেয়ারস্টোকে। শতরান করলেন তিনি। কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রথমে ব্যাট করে ২৬১ রান তোলে। পঞ্জাব কিংস তার পরেও জিতল ৮ উইকেটে।
এমন ভাবেও হারা যায়! ইডেন ফেরত কেকেআর সমর্থকদের চোখে মুখে হতাশা। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ২৬১ রান তোলার পরেও হেরে যাবে দল। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এই প্রথম বার ২৬১ রান তাড়া করে জিতল কোনও দল। ঘরের মাঠে এর আগে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে হেরেছিল কলকাতা। সেই ম্যাচে কেকেআরের ঘাতক ছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক জস বাটলার। শুক্রবার আর এক ইংরেজের ব্যাটে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হল কেকেআরের। যে বেয়ারস্টো নিয়মিত দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না, তিনিই ইডেনে ৪৮ বলে ১০৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দিলেন।
২৬১ রান তুলেও হারা যায়! তা-ও আবার ৮ বল বাকি থাকতে। কী ভাবে হারতে হয় এই ম্যাচ? নিপুণ ভাবে শেখালেন অনুকূল রায়, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তীরা। শুক্রবার মিচেল স্টার্ককে খেলায়নি কলকাতা। তিনি প্রতি ম্যাচে গড়ে ৫০ রান দিয়ে থাকেন। স্টার্কের বদলে নামা দুষ্মন্ত চামিরা ৩ ওভারে ৪৮ রান দিলেন। হর্ষিত দিলেন ৬১ রান। পঞ্জাব ২৪টি ছক্কা হাঁকাল এই ম্যাচে। ছ’টি খেলেন হর্ষিত। পাঁচটি করে খেলেন চামিরা এবং বরুণ।
বেয়ারস্টোদের শুক্রবার যে জামাই আদর কলকাতা করল তা সাধারণত জামাইষষ্ঠীতে করা হয়ে থাকে। ভরা গ্রীষ্মে সেই আদর পেল পঞ্জাব। বেয়ারস্টো ছাড়াও রান করলেন প্রভসিমরন সিংহ এবং শশাঙ্ক সিংহ। প্রথম জন রান আউট না হলে হয়তো আরও একটি শতরান দেখত ইডেন। ২০ বলে ৫৪ রান করেন প্রভসিমরন। আর শশাঙ্ক? ২৮ বলে ৬৮ রান করেন তিনি। আটটি ছক্কা মারেন। নিলামে ভুল করে কেনা ক্রিকেটারই পঞ্জাবের সম্পদ হয়ে উঠেছেন।
কেকেআরের ২৬১ রান তোলার নেপথ্যে ছিলেন সুনীল নারাইন। যিনি ব্যাট হাতে ৩২ বলে ৭১ রান করেন। ডিরেক্ট থ্রোয়ে উইকেট ভেঙে রান আউট করেন। আবার বল হাতে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। কেকেআরের হয়ে শুক্রবার সব কিছুই করলেন তিনি। কিন্তু ম্যাচ জেতাতে পারলেন না। আঙুল তুলতেই পারেন সতীর্থদের দিকে। যে পিচে নারাইন রান দিলেন না, উইকেট নিলেন, সেই পিচেই বাকিরা শুধু দিলেন।
কেকেআর একটি ম্যাচ জিতলে পরের ম্যাচ হেরে যায়। তারা ব্যাট করার সময় পঞ্জাব ক্যাচ ফেলার প্রদর্শনী না করলে হয়তো অনেক কম রানেই থেমে যেত কলকাতা। তাতে অন্তত লজ্জায় মুখ ঢাকতে হত না। ভাবতে হত না ২৬১ রান তুলেও হারা যায়!