IPL 2023

লাস্ট বয়ের কাছে হার ফার্স্ট বয়ের! হার্দিকদের হারিয়ে কেকেআরকে ছুঁয়ে ফেলল সৌরভের দিল্লি

টান টান ম্যাচে শেষ হাসি হাসল দিল্লি ক্যাপিটালস। গুজরাতের ঘরের মাঠে হার্দিক পাণ্ড্যদের হারিয়ে দিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল। পয়েন্ট তালিকায় কেকেআরকে ছুঁয়ে ফেলল তারা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ২৩:০৮
Share:

গুজরাত টাইটান্সকে হারিয়ে উল্লাস দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্রিকেটারদের। ছবি: আইপিএল

বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখালেন ইশান্ত শর্মা। আনরিখ নোখিয়েকে ৩ বলে ৩ ছক্কা মেরে খেলা গুজরাত টাইটান্সের দিকে খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন রাহুল তেওতিয়া। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১২ রান। দেখে মনে হচ্ছিল, আরাম করে খেলা বার করে নেবেন হার্দিক-তেওতিয়া জুটি। কিন্তু সেটা হতে দিলেন না ইশান্ত। মাত্র ৬ রান দিলেন তিনি। নিলেন তেওতিয়ার উইকেট। ফলে ১৩০ রান তাড়া করতে পারল না গুজরাত টাইটান্স। ৫ রানে ম্যাচ জিতল দিল্লি ক্যাপিটালস। মুখে হাসি ফুটল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। লাস্ট বয়ের কাছে হারল ফার্স্ট বয়রা। হার্দিক পাণ্ড্যদের হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ছুঁয়ে ফেলল দিল্লি। দু’দলেরই পয়েন্ট ৬।

Advertisement

টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লির অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। বলেছিলেন, তাঁরা চেষ্টা করবেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে। কিন্তু আদতে হল তার উল্টো। শামির প্রথম স্পেলেই ছারখার হয়ে গেল দিল্লি। ম্যাচের প্রথম বলেই বোঝা গিয়েছিল ইনিংসের বাকিটা কী হতে চলেছে। শামির হাফ ভলি সরাসরি ডেভিড মিলারের হাতে মারেন ফিল সল্ট। সেই শুরু। তার পর আগুন ঝরালেন শামি। উইকেটের পিছনে তাঁকে সঙ্গত দিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। আগের ম্যাচে রান করা সল্ট শূন্য রানে ফেরার পরে ইনিংস ধরার কথা ছিল ওয়ার্নারের। কিন্তু প্রিয়ম গর্গের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে মাত্র রান আউট হয়ে গেলেন তিনি।

দিল্লির টপ অর্ডারে কেউ রান পাননি। শামি অফ স্টাম্প লাইনে বল করে গেলেন। সিমে পড়ে কোনও বল বাইরের দিকে গেল। কোনও বল ভিতরে ঢুকল। বলের লাইন বুঝতে না পেরে খোঁচা মেরে আউট হলেন রাইলি রুসো, মণীশ পাণ্ডে ও গর্গ। তিনটি ক্যাচই ধরলেন ঋদ্ধি। তার মধ্যে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে মণীশের নেওয়া ক্যাচটি তাঁর সেরা। ৫ ওভারের মধ্যে ২৩ রান দিল্লির অর্ধেক দল সাজঘরে ফিরে যায়। শামি ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন।

Advertisement

৫ উইকেট পড়ার পরে জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন অক্ষর পটেল ও অমন খান। মাথা ঠান্ডা রেখে ধীরে ধীরে রান করছিলেন তাঁরা। গুজরাতের দুই আফগান স্পিনার রশিদ খান ও নুর আহমেদকে ভাল ভাবে সামলান দিল্লির দুই ব্যাটার। অক্ষর এই ম্যাচেও বুঝিয়ে দেন দিল্লির সব থেকে ভাল ব্যাটার এই মুহূর্তে তিনিই। দু’জনে মিলে ৫০ রানে জুটি বাঁধেন।

স্পিন কাজ করছে না দেখে আবার পেসারকে আক্রমণে আনেন হার্দিক। আর নিজের প্রথম ওভারেই ২৭ রানের মাথায় অক্ষরকে আউট করেন মোহিত শর্মা। কিন্তু অমন ভাল খেলছিলেন। বল দেখে শট মারছিলেন তিনি। দলের রানকে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যান এই ডান হাতি ব্যাটার।

৪১ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন অমন। ক্রিকেটের যে কোনও ফরম্যাটে এটিই তাঁর প্রথম অর্ধশতরান। ভাল খেলছিলেন রিপল পটেলও। দুই ব্যাটার মিলে আরও একটি ৫০ রানের জুটি বাঁধেন। শেষ দিকে গুজরাতের পেসারদের ওভারে রান ওঠে। দিল্লির বোলারদের লড়াই করার জায়গা দিয়ে যান অমন। তিনি ৫১ রান করে আউট হন। রিপল করেন ২৩ রান। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩০ রান করে দিল্লি।

জবাবে শুরুটা ভাল হয়নি গুজরাতেরও। ঠিক যেন দিল্লির ইনিংসের রিপ্লে। প্রথম ওভারেই খলিল আহমেদের বলে শূন্য রানে আউট হন ঋদ্ধি। ব্যর্থ শুভমন গিলও। ৬ রান করে আনরিখ নোখিয়ের শিকার তিনি। আগের দুই ম্যাচে ছন্দে থাকা বিজয় শঙ্করকেও ফেরান ইশান্ত শর্মা। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ৩ উইকেট হারায় গুজরাত।

পাওয়ার প্লে-র পরে বল করতে এসে প্রথম ওভারে ডেভিড মিলারকে বোল্ড করেন কুলদীপ যাদব। গুজরাতের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে হার্দিক ছাড়া কেউ দু’অঙ্কে পৌঁছতে পারেননি। ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব গিয়ে পড়ে হার্দিকের উপর। কিন্তু রানের গতি কম থাকায় চাপ বাড়ছিল গুজরাতের উপর।

হার্দিক সঙ্গে পান অভিনব মনোহরকে। রানের গতি কম থাকলেও উইকেট ধরে রেখেছিলেন তাঁরা। মাঝে মাঝে বড় শট খেলছিলেন। ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছিল গুজরাত।

শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬০ রান। অর্থাৎ, প্রতি ওভারে ১০ রান। এই পরিস্থিতি থেকে যে কোনও দল জিততে পারত। নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন হার্দিক। কিন্তু কোনও উল্লাস করেননি তিনি। বোঝা যাচ্ছিল জয় ছাড়া আর কিছু মাথায় নেই তাঁর। শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ৩৭ রান। তখনই বড় শট মারতে গিয়ে ২৬ রান করে আউট হন মনোহর।

শেষ ১২ বলে ৩৩ রান দরকার ছিল গুজরাতের। হার্দিকরা মারার চেষ্টা করলেও পারছিলেন না। কারণ, দিল্লির পেসাররা ঠিক জায়গায় বল রাখছিলেন। বড় শট না আসায় চাপ বাড়ছিল গুজরাতের উপর। ঠিক তখনই নিজের জাত চেনান তেওতিয়া। পর পর তিনটি ছক্কা মেরে গুজরাত সমর্থকদের মনে আশা বাড়ান তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরেই মাঠ ছাড়তে হল তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement