জাস্টিন ল্যাঙ্গার। — ফাইল চিত্র।
আইপিএলের মাঝে মুম্বইয়ের একটি বস্তিতে গিয়েছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের কোচ। বিশেষ এক জনের অনুরোধ রাখতে সেখানে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার। আইপিএলের পর দেশে ফিরে জানিয়েছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা।
লখনউয়ের ম্যাসাজ থেরাপিস্ট রাজেশ চন্দ্রশেখর থাকেন মুম্বইয়ের একটি বস্তিতে। আইপিএলের লখনউ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির সঙ্গে যুক্ত হলেও বস্তির ঘরেই পরিবার নিয়ে থাকেন চন্দ্রশেখর। তিনিই বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ল্যাঙ্গারকে। এক কথায় তাঁর বাড়িতে যেতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন লখনউ কোচ।
সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে ল্যাঙ্গার বলেছেন, ‘‘চন্দ্রশেখর আমাকে বলেছিল, ও মুম্বইয়ের একটি বস্তিতে থাকে। সেখানে থেকেই জীবনের প্রথম বড় সুযোগটা পেয়েছিল ও। মুম্বইয়ের একটি ফুটবল দলে ম্যাসিয়োর হিসাবে কাজের সুযোগ পায়। তার পর ধাপে ধাপে উন্নতি করে লখনউয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।’’
চন্দ্রশেখরের বাড়িতে এক দিন সকালে গিয়েছিলেন ল্যাঙ্গার। লখনউ কোচ বলেছেন, ‘‘ওর বাড়িতে প্রাতঃরাশ করতে করতে সবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যদের আমার কথা অনুবাদ করে বুঝিয়ে দিচ্ছিল নিজেই। আবার ওদের কথা আমাকে। পরিবারের সকলে আমাকে হাসি মুখে আন্তরিক ভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন। আমি ওদের বাড়িতে যাওয়ায় সকলকে বেশ গর্বিত দেখাচ্ছিল। পরিবারের ছ’জনই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পড়েছিলেন। এক সঙ্গে ছবি তোলার সময় ওঁরা আমার চারপাশে ছিলেন। সকলের মধ্যে খুব আন্তরিকতা ছিল। চন্দ্রশেখরের বাবা আমার কাঁধে হাত রেখেছিলেন। মনে হচ্ছিল, নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই আছি।’’
মুম্বইয়ের বস্তিজীবন নিয়ে ল্যাঙ্গার নিজের উপলব্ধির কথাও জানিয়েছেন। লখনউ কোচ বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আমাদের জীবন কত বিলাসবহুল। মানুষ কত সাধারণ ভাবে বাঁচেন। এমন আগে কখনও দেখিনি। চন্দ্রশেখরের বাড়িতে গিয়ে মনে হয়েছিল, ওদের কিছুই নেই। তেমন কিছু না থাকলেও একটা জিনিস অবশ্য ছিল। জীবনে সুখী হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সব কিছুই ছিল চন্দ্রশেখরের বাড়িতে।’’ একটি শিক্ষাও নিয়েছেন লখনউয়ের অস্ট্রেলীয় কোচ। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিবার এবং বন্ধুদের কাছে এমনই সাধারণ থাকতে চাই। দিনের শেষে সেটাই সুখ এনে দেয়।’’