শাহরুখ খান (বাঁ দিকে), সঞ্জীব গোয়েন্কা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বুধবার রাত থেকেই তুলনা শুরু হয়েছে শাহরুখ খান ও বরুণ চক্রবর্তীর। শাহরুখ বাংলার দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক। বাংলার শিল্পপতি গোয়েন্কা মালিক লখনউ সুপার জায়ান্টসের। দু’জনেই মালিক হলেও চলতি আইপিএলে দুই মালিকের ব্যবহারের তফাত স্পষ্ট নজরে পড়েছে। কেকেআর ২৬১ রান করে হারার পরেও শাহরুখ মাঠে নেমে হাসিমুখে জড়িয়ে ধরেছেন ক্রিকেটারদের। অন্য দিকে দল হারার পরে মাঠেই অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে ভর্ৎসনা করেছেন গোয়েন্কা। দু’জনের মধ্যে তফাত ঠিক কতটা তা ইডেনে বসে বলে দিলেন কেকেআরের ক্রিকেটার বরুণ চক্রবর্তী।
শনিবার ইডেনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে কেকেআর। চলতি আইপিএলে ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে আসেন বরুণ। সেখানে তাঁকে দলের উপর শাহরুখের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে বরুণ বলেন, “কলকাতায় সব ম্যাচে শাহরুখ ভাই এসেছে। গোটা ম্যাচ বসে দেখেছে। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে আমরা ২৬১ রান করেও হেরে গিয়েছিলাম। শাহরুখ ভাই সাজঘরে গিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেছে।”
পঞ্জাব ম্যাচে হারের পরে ক্রিকেটারেরা হতাশ ছিলেন। সেই সময় শাহরুখ তাঁদের কী বলেছিলেন সে কথাও জানিয়েছেন বরুণ। কেকেআর স্পিনার বলেন, “শাহরুখ ভাই আমাদের বলেছিল, ‘চিন্তা কোরো না। একটা ম্যাচ হেরেছ। এখনও গোটা প্রতিযোগিতা বাকি। এখন ক্রিকেট অনেক বদলে গিয়েছে। আত্মবিশ্বাস রাখো। পরের ম্যাচে তোমরা জিতবে।’” বরুণ আরও বলেন, “এ বছর শাহরুখ ভাইয়ের কাছে যাওয়া অনেক সহজ। যে চাইছে তার সঙ্গেই কথা বলছে। আমিও এ বারই শাহরুখ ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম কথা বললাম।” বরুণের কথা থেকে স্পষ্ট, ক্রিকেটারদের কতটা স্বাধীনতা দিয়েছেন শাহরুখ। দলের মালিক নয়, বন্ধুর মতো তাঁদের সঙ্গে মিশছেন। তার ফলও পাচ্ছে দল। শনিবার ১ পয়েন্ট পেলেই প্লে-অফ পাকা হয়ে যাবে তাদের।
বুধবার লখনউয়ের ১৬৫ রানের লক্ষ্য ৯.৪ ওভারে পার করে হায়দরাবাদ। ৬২ বল বাকি থাকতে এই হার ভাল ভাবে নেননি গোয়েন্কা। তিনি মাঠেই রাহুলকে ভর্ৎসনা করেন। সেই ঘটনায় সমালোচিত গোয়েন্কা। অনেকেই মনে করছেন যে, তিনি রাহুলের সঙ্গে মাঠের মধ্যে এই ভাবে কথা না বললেও পারতেন। রাহুলের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকে অসম্মান করা ঠিক হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। রাহুল দায়িত্ব ছাড়তে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে গোয়েন্কার ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন মহম্মদ শামি। ক্রিকেটারদের সম্মান না করে তিনি ভুল করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলার পেসার।
চলতি আইপিএল থেকে মুম্বই বিদায় নিলেও তাদের হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না কেকেআর। নিজেদের পরিকল্পনা করে রেখেছে তাঁরা। বরুণ বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের রেকর্ড ভাল। ওদের অনেক ভাল ক্রিকেটার রয়েছে। একটা ম্যাচ জিতলেই আমাদের প্লে-অফ পাকা। কিন্তু আমরা তিনটে ম্যাচ জিতে প্রথম দুইয়ে শেষ করতে চাই।”
এ বার ফাইনাল চেন্নাইয়ের মাঠে। সেটি বরুণের ঘরের মাঠ। এখন থেকে ফাইনালের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন তিনি। বরুণ বলেন, “চিপকের উইকেটে আমি অনেক খেলেছি। ওটা আমার ঘরের মাঠ। ওখানে স্পিনারেরা সুবিধা পায়। আশা করছি ফাইনালে উঠলে আমরা ভাল খেলব।”