শিশির যে বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে তা মানছেন অধিনায়করা। সাবা করিম বললেন, “সব মাঠে শিশির সমান নয়। শিশির যাতে অসুবিধা না করে তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। শিশির একটা কারণ হতে পারে কিন্তু প্রধান কারণ অবশ্যই সামনে লক্ষ্য থাকলে রান তাড়া করতে সুবিধা হয়। এটা শুধু টি-টোয়েন্টি নয়, এক দিনের ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।”
টসের সময় শ্রেয়স, রোহিত। ছবি: আইপিএল
ডব্লিউজি গ্রেস বলেছিলেন, “যদি দেখ উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, টস জিতলে ব্যাট করো। যদি উইকেট নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে, তা হলে দু’বার ভাব এবং ব্যাট করো। যদি দেখ উইকেট বোলিং সহায়ক, তা হলে অনেক বার ভাব, সতীর্থের সঙ্গে পরামর্শ করো এবং ব্যাট করো।” কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এটাই ছিল ক্রিকেটের মূলমন্ত্র। কিন্তু সময় পাল্টে গিয়েছে। পাল্টে গিয়েছে মন্ত্রও।
গত বারের আইপিএলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মাঠে দেখা গিয়েছিল টস জিতলে আগে বল করছে দলগুলি। শিশিরের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছিল বলে মনে করছিলেন অনেকে। এ বারের আইপিএলেও দেখা যাচ্ছে টস জিতলে আগে বল করছেন অধিনায়করা। একটি ম্যাচে ধারাভাষ্যকার ড্যানি মরিসন টসের সময় জয়ী অধিনায়ক বলার আগেই বলেছেন, “আগে বল করবে তো?” বুধবার শ্রেয়স আয়ার যে ভাবে বোলিং করার কথা বললেন তাতে একটা জিনিস পরিষ্কার ছিল যে, টস জিতলে অন্য কিছু করার কথা ভাবছেনই না তিনি। কিন্তু টস জিতলেই বোলিং কেন? শিশিরের জন্য?
এখনও অবধি এ বারের আইপিএলে ১৪টি ম্যাচ খেলা হয়েছে (বুধবারের ম্যাচ পর্যন্ত)। প্রতিটি ম্যাচেই টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়করা। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রাক্তন ক্রিকেটার সাবা করিম বললেন, “এখনকার ক্রিকেটে অধিনায়করা আগে বল করে বিপক্ষকে দেখে নিতে চান। সামনে রানের লক্ষ্য থাকলে সেটা মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে সুবিধা হয়। এই কারণেই টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বেশির ভাগ অধিনায়ক।” তবে কি শিশির কোনও কারণ নয়?
চেন্নাই-লখনউ ম্যাচে মাঠে শিশির। ছবি: টুইটার
ব্রেবোর্নের মাঠে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ২১০ রান তুলেও হেরে গিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। তিন বল বাকি থাকতে ২১১ রান তুলে নেয় লখনউ। হারের পর চেন্নাই সুপার কিংসের কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং বলেছিলেন, “স্পিনারদের আগেই বাদ রেখে ভাবতে হয়েছে। নায়গ্রা জলপ্রপাতের মতো ভিজে ছিল মাঠ। স্পিনাররা বল গ্রিপই করতে পারছিল না।” পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়ের মাঠে টস জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার বলেছিলেন, “আমরা আগে বল করব। কারণ সন্ধেবেলা মাঠ সুইমিং পুল হয়ে যায়।”
শিশির যে বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে তা মানছেন অধিনায়করা। সাবা করিম বললেন, “সব মাঠে শিশির সমান নয়। শিশির যাতে অসুবিধা না করে তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। শিশির একটা কারণ হতে পারে কিন্তু প্রধান কারণ অবশ্যই সামনে লক্ষ্য থাকলে রান তাড়া করতে সুবিধা হয়। এটা শুধু টি-টোয়েন্টি নয়, এক দিনের ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।”
১৪টি ম্যাচে টস জিতে বোলিং নিলেই যে ম্যাচ জেতা সম্ভব তেমনটা যদিও বলছে না পরিসংখ্যান। টস জিতেও পাঁচটি ম্যাচে সেই দল হেরে গিয়েছে। এর মধ্যে পুণের মাঠে শিশির খুব বড় ভূমিকা নিচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে। দুপুরের ম্যাচে শিশির খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না। সেই ম্যাচেও টস জিতে বোলিং নেওয়ার পর ম্যাচ হেরেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।