কোহলীদের উচ্ছ্বাস। ছবি আইপিএল
জয়ে ফিরল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১৬ রানে হারিয়ে দিল তারা। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও এক হাতে দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে মাতিয়ে দিলেন বিরাট কোহলী। প্রথমে ব্যাট করে ১৮৯-৫ তুলেছিল আরসিবি। জবাবে দিল্লি শেষ ১৭৩/৭ রানে।
এ বার আরসিবির হয়ে প্রতিটি ম্যাচেই শুরুটা ভাল করছেন ফ্যাফ ডুপ্লেসি এবং অনুজ রাওয়ত। দেবদত্ত পাড়িক্কলকে হারানোর পর তরুণ রাওয়তে ভরসা রাখছে আরসিবি। তিনি হতাশও করছেন না। তবে শনিবার তা দেখা গেল না। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই রাওয়তকে ফেরালেন শার্দূল ঠাকুর। পরের ওভারে ফিরে গেলেন ডুপ্লেসি। ১৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে উত্তেজনায় তখন ফুটছে দিল্লি।
নাটকের তখনও বাকি ছিল। ধরে ধরে খেলে ইনিংস শুরু করেছিলেন বিরাট কোহলী (১২)। পয়েন্টে বল ঠেলেই দৌড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু উল্টোদিকে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে ফেরত পাঠান। তবে ক্রিজে পৌঁছনোর আগেই ললিত যাদবের দুরন্ত থ্রো উইকেট ভেঙে দেয়। রাজস্থান ম্যাচেও তিনি রান আউট হয়েছিলেন। প্রাক্তন অধিনায়ককে হতাশ হয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে মাঠ ছাড়তে দেখা যায়।
দলের মূল ক্রিকেটাররা একে একে ফিরে যাওয়ায় ম্যাক্সওয়েল বুঝে গিয়েছিলেন তাঁকেই রান তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রথম থেকেই সেই কাজ শুরু করলেন তিনি। কুলদীপ যাদবের প্রথম ওভার থেকে তুললেন ২৩ রান। তবে আউট হতে হল সেই কুলদীপের বলেই। ললিতের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ম্যাক্সওয়েল (৫৫)।
কলকাতার হয়ে আগে খেলার সময় তাঁর ব্যাটে রান দেখা যায়নি। কিন্তু আরসিবির হয়ে প্রতি ম্যাচেই যেন অন্য মূর্তি ধারণ করছেন দীনেশ কার্তিক। চাপ ছাড়া খোলা মনে খেলার যে কী সুবিধা, সেটা প্রতি ম্যাচেই দেখিয়ে দিচ্ছেন। এ দিনও তাঁকেই আরসিবির ত্রাতা হতে দেখা গেল। সঙ্গে পেলেন শাহবাজ আহমেদকে। বাংলার এই অলরাউন্ডারও প্রতি ম্যাচেই নিজের জাত চেনাচ্ছেন। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না।
প্রথম দিকে কিছুটা ধরে খেললেও মুস্তাফিজুরের একটি ওভারে ২৮ রান নিলেন কার্তিক। চারটি চার এবং দু’টি ছয় মারলেন সেই ওভার। পূরণ হয়ে গেল নিজের অর্ধশতরানও। শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে দলের রান ১৮৯-এ পৌঁছে দিলেন তিনি। কার্তিক ৬৬ রানে এবং শাহবাজ ৩২ রানে অপরাজিত থাকলেন। ষষ্ঠ উইকেটে উঠল ৯৭ রান।
দিল্লির শুরুটা হয়েছিল ভালই। পৃথ্বী শ নিয়মিত ভাবে এখন রান পাচ্ছেন। ডেভিড ওয়ার্নারও ছন্দ পেয়ে গিয়েছেন। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা নিয়ে পাঁচ ওভারের আগেই দলের ৫০ রান পূর্ণ হয়ে গেল। এর পরেই মহম্মদ সিরাজের বলে আউট পৃথ্বী। ফিট হওয়ার পর এই ম্যাচেই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মিচেল মার্শ। তবে ক্রিজে মোটেই স্বচ্ছন্দে দেখা গেল না তাঁকে। প্রচুর বল নিচ্ছিলেন।
যদিও উল্টো দিকে ওয়ার্নার অনায়াসে তাণ্ডব দেখাচ্ছিলেন আরসিবি বোলারদের উপর। কয়েক বলের ব্যবধানে দু’জনকেই হারায় দিল্লি। ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গের বলে সুইচ হিট করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ওয়ার্নার। মার্শকেও ফেরান হাসরঙ্গ। তবে রান আউট করে। পন্থের সোজা মারা শট হাসরঙ্গের আঙুলে লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। মার্শ তখন ক্রিজ থেকে অনেকটা এগিয়ে।
দলের বাকিরা ফিরে যাওয়ায় জেতানোর দায়িত্ব পড়েছিল পন্থের কাঁধেই। তিনি খেলছিলেনও সে ভাবেই। কিন্তু কোহলীর অবিশ্বাস্য ক্যাচে ফিরে গেলেন তিনি। সিরাজের বলে নেওয়া শট এক হাতে অসাধারণ ভাবে ধরেন কোহলী। ওখানেই দিল্লির জেতার আশা শেষ হয়ে যায়।