বিরাট পরিবার ঋত্বিকের। বাবা, মা, স্ত্রী, দাদা এবং বৌদি রয়েছেন তাঁর বাড়িতে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে খেলা অলরাউন্ডার বললেন, “আমার পরিবারের সবাই খুব খুশি। এত দিন পর নিজেকে এ রকম একটা বড় মঞ্চে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছি। পরিশ্রম করেছি, তার ফল পেয়েছি।”
ঋত্বিকের সামনে প্রথম একাদশে ঢোকার পরীক্ষাটা কঠিন। —ফাইল চিত্র
প্রথম বার আইপিএলের মঞ্চে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়। আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় প্রথম সুযোগ। সামনে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সর্বাধিক উইকেটশিকারি অনিল কুম্বলে। তাঁর সামনে বাংলার অলরাউন্ডার নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার জন্য যেমন তৈরি, তেমনই তৈরি শেখার জন্য।
এ বারের আইপিএলে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে দলে নিয়েছে পঞ্জাব কিংস। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋত্বিক বললেন, “নিলামের সময় নিভৃতবাসে ছিলাম। দু’দিনই চোখ রেখেছিলাম নিলামের দিকে। প্রথম দিকে মনে হয়নি যে আমি দল পাব। কিন্তু পরের দিকে মনে হল নাম ডাকলেও ডাকতে পারে। খুব আনন্দ হয়েছিল যখন পঞ্জাব আমাকে দলে নিল।”
বিরাট পরিবার ঋত্বিকের। বাবা, মা, স্ত্রী, দাদা এবং বৌদি রয়েছেন তাঁর বাড়িতে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে খেলা অলরাউন্ডার বললেন, “আমার পরিবারের সবাই খুব খুশি। এত দিন পর নিজেকে এ রকম একটা বড় মঞ্চে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছি। পরিশ্রম করেছি, তার ফল পেয়েছি।”
অনুশীলন ম্যাচে ময়ঙ্ক অগ্রবালের উইকেট নিয়েছেন ঋত্বিক। কথা হয়েছে অনিল কুম্বলের সঙ্গেও। ঋত্বিক বললেন, “আমার বোলিং নিয়ে খুব খুশি কুম্বলে স্যর। আমার প্রশংসা করেছেন। একটা ম্যাচে ২ ওভারে ১২ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছি। সেটা ময়ঙ্কের উইকেট। পরের ম্যাচে ভানুকা রাজাপক্ষর (শ্রীলঙ্কা) উইকেট নিয়েছি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলা দুই ক্রিকেটারের উইকেট নিয়ে ভাল লাগছে।”
পঞ্জাব দলে ঋত্বিকের সঙ্গে রয়েছেন বাংলার ঈশান পোড়েলও। ঋত্বিক বললেন, “এখানে একটি ঘরে এক জন ক্রিকেটারকেই রাখা হয়েছে করোনার জন্য। বহু বছর ধরে এক সঙ্গে খেলছি বলে ঈশানের সঙ্গে বন্ধুত্বটা অনেক দিনের। ওর সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় কাটাই। নতুন বন্ধু হিসেবে পেলাম বৈভব অরোরা, প্রেরক মাঁকড়কে। এদের আগে থেকে চিনতাম তবে বন্ধুত্ব হল এখানে এসে।”
প্রথম আইপিএল খেলতে যাওয়ার আগে বাংলা দলের হয়ে ভাল খেলেছেন ঋত্বিক। তিনি বললেন, “ভাল খেললে সব সময় আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। রঞ্জিতেও ভাল খেলেছে। এর আগে সাদা বলের ক্রিকেটে ট্রফি না পেলেও ভাল খেলেছে দল। কর্ণাটক, মুম্বইয়ের মতো দলকে হারিয়েছি আমরা। সেই আত্মবিশ্বাস তো রয়েইছে।” নিজের প্রস্তুতির কথাও জানালেন ঋত্বিক। তিনি বললেন, “রঞ্জির জন্য খুব বেশি সময় পাইনি। এখানে এসে দল হিসাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। অনুশীলন করছি এখানে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব বিষয়ে আলাদা করে নজর দেওয়া হচ্ছে। বোলিংয়ের দিকে নজর রাখছেন কুম্বলে স্যর। জন্টি স্যর আছেন ফিল্ডিং দেখার জন্য।”
আইপিএলে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে দলে নিয়েছে পঞ্জাব কিংস। —ফাইল চিত্র
আইপিএলে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে এক সাজঘর ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছে ঋত্বিকের। তিনি বললেন, “আমি যতটা পারি শিখে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এই অভিজ্ঞতাটা বিরাট। অনিল কুম্বলে, জন্টি রোডসের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে শিখতে পারছি। এই সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।”
পঞ্জাব দলকে নিয়ে খুব একটা খুশি হতে পারছেন না সুনীল গাওস্কর। সেই সম্পর্কে ঋত্বিক বললেন, “আমার দলের সঙ্গে খেলে ভাল লেগেছে। সবাই এক সঙ্গে অনুশীলন করছে, ভাল খেলছে। গোটা দল ভাল খেলছে। ম্যাচের দিন ক্লিক করতে হবে। সেটা হলেই দারুণ দল হবে আমাদের।”
আইপিএল মানেই কড়া চ্যালেঞ্জ। প্রথম একাদশে ঢোকার জন্যেও প্রচুর পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় ক্রিকেটারদের। ঋত্বিকের সামনেও প্রথম একাদশে ঢোকার পরীক্ষাটা কঠিন। সেটা ঋত্বিক নিজেও জানেন। তিনি বললেন, “অনুশীলন ম্যাচে ভাল খেলেছি। আমি প্রথম একাদশে ঢোকার ব্যাপারে আশাবাদী। ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সাদা বলের ক্রিকেটে ভাল খেলেছি। সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেওয়া চেষ্টা করব। যদি সুযোগ নাও পাই, আমি আশাহত হব না। আমার দলে সুযোগ পাওয়া নির্ভর করবে দলের ভারসাম্য গঠনের উপর। আমি চাই দল জিতুক। আমি সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেব।”