কী ভাবে আটকানো সম্ভব বিরাটকে? ছবি: পিটিআই
বেঙ্গালুরুর মাঠে বিরাট কোহলিকে থামানোর কোনও উত্তর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ছিল না। ম্যাচ জেতানো ৮২ রানের ইনিংস খেলে ইডেনে নামবেন বিরাট। আইপিএলের শুরুটাই যে ভাবে করেছেন, তাতে বিরাট বুঝিয়ে দিয়েছেন এ বারে তিনি রানের খিদে নিয়েই নেমেছেন। তাতে ইডেনে বিরাটভক্তরা আনন্দ পেতে পারেন কিন্তু চিন্তা হয়ে যাবে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দলের। কী ভাবে আটকানো সম্ভব বিরাটকে?
কেকেআরের কোচ পণ্ডিত অবশ্যই বিরাটকে আটকানোর পরিকল্পনা করে রেখেছেন। ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “পরিকল্পনা তো অবশ্যই করেছি। তবে সেটা এখনই বলে দেব না। আর বলে দিলে কার সুবিধা হবে? আমার না বিরাটের?” পণ্ডিতের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটে পোড়খাওয়া কোচ যে বিরাটকে নিয়ে ভেবে রাখবেন সেটাই স্বাভাবিক। কী ভাবে সেই কাজ করবেন পণ্ডিত?
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে পেসারদের বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়েছেন বিরাট। ওপেন করতে নামা বিরাট শুরুতে উমেশ যাদব, টিম সাউদিদের বিরুদ্ধে আবার ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারেন। যদিও সাউদির বিরুদ্ধে সাদা বলের ক্রিকেটে বিরাট বেশ কয়েক বার আউট হয়েছেন। কেকেআর তাই সাউদিকে দিয়ে বিরাটকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারে। সেটা যদিও খুব কার্যকর না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই স্পিনার আনার কথা ভাবতে পারেন পণ্ডিত।
কলকাতা দলের শক্তি স্পিন। বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী বললেন, “বিরাট কিন্তু দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে। পেসারদের বিরুদ্ধে দারুণ খেলছে ও। কলকাতা দলে ভাল স্পিনার রয়েছে। শুরুতে স্পিনার এনে বিরাটকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারে কেকেআর।” কলকাতা দলে রয়েছেন সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তীর মতো স্পিনার। শুরুতেই নারাইনকে দিয়ে আক্রমণ করানোর চেষ্টা করতেই পারেন পণ্ডিত। রঞ্জি ম্যাচেই বাংলার বিরুদ্ধে শুরুতে স্পিনার এনে চমক দিয়েছিলেন তিনি। ইডেনে বিরাটের বিরুদ্ধেও তাঁর মাথায় এই ভাবনা আসতেই পারে।
কেকেআরকে একটা জিনিস স্বস্তি দিতে পারে। নাইটদের বিরুদ্ধে বিরাট সে ভাবে সফল নন। সেটার বড় কারণ অবশ্যই কলকাতার স্পিনশক্তি। বিরাট যে ধরনের শট খেলতে পছন্দ করেন তাতে পেসারদের বিরুদ্ধে সুবিধা পান তিনি। নারাইনের বিরুদ্ধে খুব একটা সফল নন বিরাট। আইপিএলে বেশ কয়েক বার বিরাটের উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবিয়ান স্পিনার। আইপিএলে সব থেকে বেশি রান করা ব্যাটার কেকেআরের বিরুদ্ধে ৩১টি ম্যাচে মাত্র ৭৮৬ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১২৮.৬৪। যা স্বস্তি দিতে পারে কলকাতাকে। কিন্তু বিরাট ছন্দে থাকলে কোনও বোলারেরই স্বস্তি পাওয়ার কথা নয়।
বিরাট ছন্দে রয়েছেন। সেটাই চিন্তার কারণ হতে পারে কলকাতার। সৌরাশিস বললেন, “এ বারের আইপিএলে বিরাটের থেকে অনেক সুখের ইনিংস দেখতে চলেছি। প্রথম ম্যাচ দেখে তেমনটাই মনে হয়েছে। পেসারদের শাসন করছে ও। কলকাতার অস্ত্র হওয়া উচিত সুনীল এবং বরুণ। স্টাম্পে বল রেখে যেতে হবে। জায়গা পেলেই বিরাট মারার সুযোগ পেয়ে যাবেন। অপেক্ষা করতে হবে বিরাটের ব্যাট এবং প্যাডের মধ্যে কখন ফাঁক তৈরি হবে। বা অনেক সময় স্পিন খেলতে গিয়ে পায়ের লাইন ভুল করলে এলবিডব্লিউ করার সুযোগ পেতে পারে কলকাতা। সেই সুযোগ থাকবে নারাইনদের কাছে।”
বিরাটকে আটকাতে তাই স্পিনই ভরসা বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ইডেনে বিরাট ওপেন করতে নামলে শুরুতেই দেখা যেতে পারে নারাইনদের। যদিও ইডেনের দর্শক বিরাটের জন্যেও গলা ফাটাবে। বিরাটকে দেখতেও আসবেন প্রচুর মানুষ। তাঁরা কখনওই চাইবেন না বিরাট তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যান। ইডেনের একাংশ অপেক্ষা করবে বিরাট ইনিংসের। আর নাইট সমর্থকরা চাইবেন এই ম্যাচে বিরাট শান্তই থাকুন।