ইডেনে কলকাতাকে শেষ বলে জেতালেন রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র
গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কায় আইপিএলে আবির্ভাব হয়েছিল রিঙ্কু সিংহের। পরের কয়েকটি ম্যাচের পরে তিনি এখন কেকেআরের নতুন হিরো। রিঙ্কু মাঠে নামলে সমর্থকেরা কানফাটানো চিৎকার করছেন। রিঙ্কু যত ক্ষণ আছেন, তত ক্ষণ জয়ের আশা থাকছে। সোমবার ইডেনে আরও এক বার শেষ বলে দলকে জেতালেন রিঙ্কু। কী ভাবে ম্যাচের পর ম্যাচে মাথা ঠান্ডা রাখেন তিনি। শুধুই কি মনের জোরে খেলেন? না কি মগজাস্ত্রের খেলাও চলে বিপক্ষের সঙ্গে!
রিঙ্কু নিজে বলছেন তিনি আর শেষ বল নিয়ে ভাবেন না। ইডেনে কেকেআরকে জিতিয়ে বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, “আমি শেষ বল নিয়ে ভাবি না। যে বার পাঁচ বলে পাঁচটা ছক্কা মেরেছিলাম, সে বারও ভাবিনি। আমি শুধু ভেবেছিলাম যদি দৌড়ই তা হলে ম্যাচটা টাই হবে। পাঁচ, সাত নম্বরে খেলতে নামতে হয় আমাকে। আমি অনুশীলনও করি সেই ভাবেই। এখন সহজ হয়ে গিয়েছে।”
অধিনায়ক নীতীশ রানা থেকে শুরু করে আন্দ্রে রাসেল, সবার মুখে এখন রিঙ্কুর নাম। নীতীশ বলছেন, রিঙ্কু যত ক্ষণ ছিল তত ক্ষণ তিনি নিশ্চিন্তে ছিলেন। রাসেলের কথায়, রিঙ্কু ছিলেন বলে তিনি আউট হয়েও হতাশ হননি। এত ভরসা তিনি দিয়েছেন সতীর্থদের। তার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে?
গুজরাত ও পঞ্জাবের বিরুদ্ধে দু’টি ইনিংস লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, নিজের ব্যাটিং প্রতিভার পাশাপাশি মস্তিষ্কও ব্যবহার করেছেন তিনি। গুজরাতের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে বল করছিলেন যশ দয়াল। একই রাজ্য দল উত্তরপ্রদেশের হয়ে খেলার সুবাদে যশকে খুব ভাল ভাবে চেনেন তিনি। রিঙ্কু জানতেন, যশ স্লোয়ার, কাটার দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই উইকেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। অযথা তাড়াহুড়ো করেননি। প্রতিটি বল দেখে তার পর শট খেলেছেন। শেষ ছক্কা মারার জন্য তো তাঁকে অপেক্ষা করতেও হয়েছিল। কিন্তু নিজের শট নির্বাচন করে খেলেছেন তিনি। আর চেষ্টা করেছেন সামনে খেলার। কারণ, আমদাবাদের মাঠে সাইড বাউন্ডারি বড়। সেই তুলনায় সামনের বাউন্ডারি ছোট। সেটাই কাজে লাগিয়েছেন রিঙ্কু।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে আবার অন্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছে রিঙ্কুকে। যত ক্ষণ রাসেল মারছিলেন তত ক্ষণ তাঁকে স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তার পরে নিজে দায়িত্ব নিলেন। শেষ বলে যখন ২ রান দরকার, তখন দেখা গেল রিঙ্কুর মগজাস্ত্রের খেলা। আরশদীপ সিংহ বল করার জন্য দৌড় শুরু করার পরেও তাঁকে থামিয়ে দেন রিঙ্কু। এক বার বোলারের ছন্দ নষ্ট হলে তাঁর মাথায় তখন নানা চিন্তা ঘুরপাক খায়। আরশদীপের ক্ষেত্রেও সেটাই হল। লেগ স্টাম্পে ফুলটস করলেন তিনি। অফস্টাম্পে সরে গিয়ে ফাইন লেগ অঞ্চলে চার মারেন তিনি। অর্থাৎ, আরশদীপকে তাঁর পছন্দের জায়গায় বল করতে বাধ্য করেন রিঙ্কু। এখানেই তাঁর সাফল্য।