যশস্বী শুনেছিলেন আর একজনের পরামর্শ। তিনি সূর্যকুমার যাদব। ছবি: আইপিএল
গত মরসুমে একের পর এক ম্যাচে খারাপ খেলার কারণে দল থেকেই বাদ পড়েছিলেন। এই মুহূর্তে তিনি এতটাই ভাল ছন্দে, যে দল থেকে বাদ দেওয়ার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না। কয়েক মাসের ব্যবধানে যশস্বী জয়সওয়ালের জীবনটা বদলে গিয়েছে এ ভাবেই। তবে সেই পরিবর্তন এক দিনে আসেনি। এর পিছনে জড়িয়ে রয়েছে কঠোর পরিশ্রমও।
মুম্বই থেকে তালেগাঁওয়ে গিয়ে অনুশীলন করার কাহিনি জানা গিয়েছে আগেই। কী ভাবে সেখানে অনুশীলন করতেন যশস্বী তা-ও জানা গিয়েছে। ঘরোয়া মরসুমের শেষে গত বছর মুম্বই থেকে নাগপুরের তালেগাঁওয়ে রাজস্থান রয়্যালসের ডিরেক্টর জুবিন ভারুচার অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করতে যান যশস্বী। সেখানে গিয়ে নিবিড় অনুশীলনে ডুবিয়ে দেন নিজেকে।
প্রতি দিন সেই অ্যাকাডেমিতে পাঁচশোটি থ্রোডাউন নিতেন যশস্বী। সিমেন্টের পিচে অনুশীলন করতেন ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগের বলে। বেশ কয়েক বার আঘাতও খেয়েছেন শরীরে। এ ছাড়া লাল মাটি এবং কালো মাটির পিচে আলাদা করে অনুশীলন করেন। অফসাইডে শট খেলতে যশস্বীর কিছুটা দুর্বলতা ছিল। সেটা কাটিয়ে ওঠেন নাগাড়ে অনুশীলন করে। এ ছাড়া নিজের পায়ের আরও ব্যবহার, সুইপ মারা এবং সুইচ হিটে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। এখন পিচের যে কোনও জায়গায় বল ফেললে তা মাঠের বাইরে পাঠাতে পারেন তিনি।
শুনেছিলেন আর একজনের পরামর্শ। তিনি সূর্যকুমার যাদব। আইপিএলে একটি ম্যাচের পর সূর্য তাঁকে বলেছিলেন, “নিজেকে ঘষেমেজে তৈরি করতে থাকো। মাঠে গিয়ে শুধু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করো। ক্রিকেট শুধু মাত্র মস্তিষ্কের খেলা।”
সেই কথা শোনা গিয়েছিল যশস্বীর কথাতেও। কলকাতার বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা হয়ে বলেছিলেন, “নির্দিষ্ট রুটিন এবং সেটা অনুসরণ আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজের ফোকাস সব সময়ে সেটার উপরেই রাখার চেষ্টা করি। প্রতিটা ম্যাচ থেকে কিছু না কিছু শিখি। নিজের খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এর থেকে ভাল উপায় নেই।”
একই সঙ্গে বড়দের উপদেশ তো রয়েছেই। যশস্বী বলেছিলেন, “ক্রিকেটীয় পরিবেশের মধ্যে থাকতে ভালবাসি। আমার চারপাশে অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার রয়েছে। সুযোগ পেলেই এমএস ভাই, বিরাট ভাই, রোহিত ভাই, জস ভাই, সঞ্জু ভাইদের সঙ্গে কথা বলি। জেনে নিই কী ভাবে নিজেকে শান্ত রাখা যায়। কী ভাবে ভাবনাচিন্তায় বদল আনা যায়। সব সময় কিছু শেখার চেষ্টা করে খেলায় উন্নতি করার চেষ্টা করি।”
গত বার ১০টি ম্যাচে ২৫৮ রান করার পর দল থেকে বাদ পড়েন। এ বার ১১ ম্যাচে ৫৭৫ রান। সর্বোচ্চ রান থাকা ফাফ ডুপ্লেসির থেকে এক রান দূরে। একটা শতরান, চারটে অর্ধশতরান রয়েছে। তাঁর জন্য নিজের উইকেট ছুড়ে দিতেও পিছপা হন না জস বাটলার। দলের আস্থার দাম ইতিমধ্যেই দিয়েছেন যশস্বী।
আরও একটি বিষয়ে উন্নতি হয়েছে তাঁর। তা হল ইংরেজিতে কথা বলা। যশস্বীর সাফ কথা, “দলের সবাই ইংরেজিতে কথা বলে। আমি পিছিয়ে থাকি কী করে?”