প্রথম চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্ত তার পরে হারের হ্যাটট্রিক হয়েছে দলের। দিল্লি ক্যাপিটালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালসের কাছে হেরে লিগ তালিকায় ছ’নম্বরে নেমেছে কেকেআর।
কেন পর পর ম্যাচ হারছে কলকাতা ফাইল চিত্র
শুরুটা ভালই হয়েছিল। প্রথম চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্ত তার পরে হারের হ্যাটট্রিক হয়েছে দলের। দিল্লি ক্যাপিটালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালসের কাছে হেরে লিগ তালিকায় ছ’নম্বরে নেমেছে কেকেআর। কী এমন হল যে আইপিএলে পর পর ম্যাচ হারছেন শ্রেয়স আয়াররা? কোথায় খামতি থাকছে? জবাব খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন।
ওপেনিং জুটি ব্যর্থ: প্রথমে ওপেনিং করতে নামতেন অজিঙ্ক রহাণে ও বেঙ্কটেশ আয়ার। রহাণে প্রথম ম্যাচ ছাড়া রান পাননি। পাঁচ ম্যাচে তাঁর রান ৮০, গড় ১৬.০০। অন্য দিকে বেঙ্কটেশ একটি ম্যাচে অর্ধশতরান করেছেন। বাকি ম্যাচে চুপ থেকেছে তাঁর ব্যাট। সাত ম্যাচে ১৮.১৬ গড়ে তাঁর রান ১০৯। বাধ্য হয়ে রহাণেকে সরিয়ে অ্যারন ফিঞ্চকে আনা হয়েছে দলে। বেঙ্কটেশের জায়গায় সুনীল নারাইন ওপেন করেছেন রাজস্থান ম্যাচে। কোনও ভাবেই ভাল শুরু পাচ্ছে না কেকেআর। সাতটি ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে কলকাতার রান যথাক্রমে ৪৩, ১৪, ১৪, ১৬, ২১, ১১, ০। যেখানে সফল দলগুলির ওপেনিং জুটি পাওয়ার প্লে-তে খেলার দখল নিচ্ছে সেখানে কলকাতার ওপেনিং জুটির ব্যর্থতা হারের অন্যতম কারণ।
মিডল অর্ডারে ধারাবাহিকতার অভাব: মিডল অর্ডারও ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলতে পারছে না। শ্রেয়স মাত্র দু’টি ম্যাচে রান পেয়েছেন। নীতীশ রানাও কেবল একটি ম্যাচেই ভাল খেলেছেন। তিনি সাত ম্যাচে ১৪১ রান করেছেন। তাঁর গড় ২০.১৪। শেল্ডন জ্যাকসন রানের মধ্যে নেই। চার ম্যাচে মাত্র ১৮ রান করেছেন। আন্দ্রে রাসেলও ধারাবাহিক নন। শ্রেয়সের মতো তিনিও মাত্র দু’টি ম্যাচে রান পেয়েছেন। ফলে চাপ পড়ে যাচ্ছে দু’এক জন ব্যাটারের উপর। রাজস্থান ম্যাচেও সেটা দেখা গিয়েছে।
বোলাররা ছন্দে নেই: কলকাতার অন্যতম বড় শক্তি ছিল দলের বোলিং আক্রমণ। কিন্তু এ বার বোলাররা ছন্দে নেই। একমাত্র সুনীল নারাইন প্রতি ম্যাচে ভাল বল করছেন। কিন্তু তাঁকে কেউ সঙ্গ দিতে পারছেন না। বরুণ চক্রবর্তীর অবস্থা খারাপ। তিনি সাত ম্যাচে ২৫ ওভার বল করে ২২১ রান দিয়েছেন। ওভার পিছু রান ৮.৮৪। প্যাট কামিন্সের অবস্থা সব থেকে খারাপ। তিনি ১৫.৫ ওভার বল করে ১৯০ রান দিয়েছেন। ওভার পিছু রান দিয়েছেন ১২। শিবম মাভি, আন্দ্রে রাসেলরাও খুব বেশি সাহায্য করতে পারছেন না দলকে। ফলে গত তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের খেলতে বিশেষ সমস্যা হয়নি।
প্রথম একাদশ বাছতে সমস্যা: প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলে একাধিক বদল হচ্ছে। ওপেনিং জুটি থেকে বোলিং আক্রমণ সব ক্ষেত্রেই তা দেখা যাচ্ছে। টিম সাউদি যে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন, ভাল বল করেছেন। কিন্তু প্যাট কামিন্স আসতেই তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্যাম বিলিংসকেও বাদ পড়তে হয়েছে ফিঞ্চের জন্য। কোনও ম্যাচে আমন খান, কোনও ম্যাচে শিবম মাভি খেলছেন। এখনও পর্যন্ত প্রথম একাদশ বাছতে সমস্যা হচ্ছে নাইটদের। তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে খেলায়।
ধরে রাখা ক্রিকেটারদের খারাপ ফর্ম: এ বারের নিলামের আগে সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে রাসেল বাদে বেঙ্কটেশ আয়ার ও বরুণ চক্রবর্তীকে ধরে রেখেছিল কেকেআর। কিন্তু দুই ভারতীয় ক্রিকেটার খুব খারাপ ফর্মে রয়েছেন। বেঙ্কটেশের ব্যাটে রান নেই। বরুণকে দিয়ে পুরো চার ওভার বল করানো যাচ্ছে না। রাসেলও দু’একটি ম্যাচ ছাড়া তেমন ধারাবাহিক নন। তার ফলে ম্যাচ জিততে সমস্যা হচ্ছে কলকাতার।