কোহলি এবং গম্ভীরের ঝামেলা এখন কোন জায়গায় রয়েছে? — ফাইল চিত্র
গত সোমবার লখনউ বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচে ব্যাপক ঝামেলা হয় বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীরের। সেই ঘটনার পর থেকে জল অনেক দূর গড়িয়েছে। দু’জনেরই একশো শতাংশ করে ম্যাচ ফি জরিমানা হয়েছে। ছাড় পাননি তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়া নবীন উল হকও। তাঁর ৫০ শতাংশ হয়েছে জরিমানা। সেই ঘটনার পর থেকে কোহলি এবং গম্ভীর দু’জনেই একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন। জড়িয়ে পড়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। কেউ কোহলির পক্ষে, কেউ গম্ভীরের, কেউ আবার নিরপেক্ষ।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবারের ম্যাচ শেষে দু’দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলানোর সময়। ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনউয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাঁকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে আসেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
কিন্তু সেখানেই সব থেমে যায়নি। তিনি যে গম্ভীরের কথা ভাল ভাবে নেননি সেটা কোহলির চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলের সঙ্গে অনেক ক্ষণ কথা বলেন তিনি। ঠিক সেই সময় সেখানে উপস্থিত হন লখনউয়ের মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। তাঁর সঙ্গে অবশ্য হাত মেলান কোহলি।
এর পরে ম্যাচ ফি-র পুরোটাই জরিমানা করা হয় বিরাটের। একই শাস্তি পেতে হয় গম্ভীরকেও। তুলনায় শাস্তি কম হয় নবীনের। তাঁর ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়।
আইপিএলের নিয়মে কোনও ক্রিকেটারকে যে টাকায় কেনা হয় বা ধরে রাখা হয় সেটা তাঁর সেই মরসুমের বেতন। আলাদা করে কোনও টাকা তাঁরা পান না। কোনও দল প্লে-অফে না উঠলে এক জন ক্রিকেটার সব থেকে বেশি ১৪টি ম্যাচ খেলতে পারেন। তাই তাঁর বেতনের ১৪ ভাগের এক ভাগ তাঁর একটি ম্যাচের ফি। কোহলিকে ধরে রাখতে ২০২৩ সালে ১৫ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে। তাই তাঁর একটি ম্যাচের ফি ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, গম্ভীরের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোয় কোটি টাকার বেশি জরিমানা হয়েছে বিরাটের।
গম্ভীর ও নবীনের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা কম। গম্ভীর লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর। এক মরসুমে তিনি পান ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। সেই হিসাবে একটি ম্যাচের ১০০ শতাংশ জরিমানা হিসাবে ২৫ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে তাঁকে। নবীনকে ৫০ লক্ষ টাকায় কিনেছে লখনউ। সেই হিসাবে তাঁর প্রতিটি ম্যাচের ফি ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা। ৫০ শতাংশ জরিমানা হওয়ায় তাঁকে দিতে হয়েছে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা।
ম্যাচের পরে ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক ভিডিয়ো। একটি ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, বিরাট নিজের জুতো দেখাচ্ছেন। যে সময় তিনি ওই কাণ্ড করেছেন, তার আগেই আফগানিস্তানের পেসার নবীনের সঙ্গে ঝগড়া হয় বিরাটের। নবীনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির মাঝেই জুতোর সুকতলার দিকে ইঙ্গিত করেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। আফগান পেসারকেই কি সেটা দেখান? তার উত্তর এখনও মেলেনি। তবে বিরাটকে আটকাতে এগিয়ে আসেন আম্পায়ার এবং লখনউয়ের অমিত মিশ্র। তাঁরা শান্ত করেন বিরাটকে। ফিল্ডিং করতে ফিরে যান বিরাট।
ম্যাচের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সে দিন কী ঝামেলার সময় কী কথা হয়েছিল কোহলি এবং গম্ভীরের। গম্ভীরই আগে কোহলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘কী বলছিস বল।’’ জবাবে কোহলি বলেন, ‘‘আমি আপনাকে কিছু বলিইনি। আপনি কেন শুধু শুধু এর মধ্যে ঢুকছেন।’’ এর পর গম্ভীর বলেন, ‘‘তুই আমার কোনও খেলোয়াড়কে বলেছিস মানে তুই আমার পরিবারকে গালাগালি দিয়েছিস।’’ এর জবাবে কোহলি বলেন, ‘‘তা হলে আপনি আপনার পরিবারকে সামলে রাখুন।’’ কোহলির উত্তর শুনে গম্ভীর আবার বলেন, ‘‘তা হলে এখন তুই আমাকে শেখাবি?’’
সাজঘরে ফিরেও ঝামেলা যে থামেনি, তার প্রমাণর মেলে বুধবার। একটি ভিডিয়োতে দেখা যায় সাজঘরে ফিরে বিরাট বলছেন, “খুব মিষ্টি একটা জয়। মিষ্টি জয়। ইট মারলে পাটকেল খেতেই হবে। সেটা খেতে না জানলে ইট মারা উচিত নয়।” বেঙ্গালুরুর মাঠে গিয়ে গম্ভীর দর্শকদের চুপ করে থাকতে বলেছিলেন। বিরাটের সঙ্গেও তাঁর কঠিন দৃষ্টি বিনিময় হয়েছিল। সেই সব কিছু বিরাট যে মনে রেখে দিয়েছিলেন, সেটা স্পষ্ট। তাই লখনউয়ের মাঠে বিরাটকেও দেখা যায় আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে।
বিরাট সাজঘরে ফিরে বলেন, “এই জয়টা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লখনউয়ের মাঠে আমরা যে পরিমাণ সমর্থন পেয়েছি, সেটা অভাবনীয়। এটা প্রমাণ করে মানুষ আমাদের কতটা ভালবাসে। আমাদের জন্য তারা মাঠে আসে। খুব ভাল লেগেছে এই ম্যাচ জিতে। এই জয়টার একাধিক ভাল লাগার দিক থাকলেও সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অল্প রান করেও আমরা ম্যাচ জিততে পেরেছি। জয়ের পথে ফিরে এসে ভাল লাগছে।” তার পাল্টা নবীন ইনস্টাগ্রামে স্টোরিতে লেখেন, “যেমন কর্ম, তেমন ফল। এমনটাই হওয়া উচিত।”
ম্যাচ জিতে দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টও করেন বিরাট। তিনি লেখেন, “দুর্দান্ত জয়। লখনউতেও আমাদের সমর্থকেরা রয়েছেন দেখে ভাল লাগছে। সকল সমর্থককে ধন্যবাদ।” সেই সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে স্টোরি দেন বিরাট। সেখানে লেখেন, “আমরা যা শুনি সেগুলো সবই মতামত, তথ্য নয়। আমরা যা দেখি সেগুলো সবই ধারণা, সত্যি নয়।” সেই টুইটের পাল্টা গম্ভীর লেখেন, ‘‘চাপের দোহাই দিয়ে দিল্লির ক্রিকেট ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া একটা লোক টাকার বিনিময়ে ক্রিকেটের প্রতি চিন্তা দেখাচ্ছে। এটা কলিযুগ। এখানে পালিয়ে যাওয়া লোকেরাও নিজেদের বড়াই করে।’’ টুইটে কারও নাম করেননি গম্ভীর। তবে কোহলির সঙ্গে বিবাদের পরেই এই টুইট করায় সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ মনে করছে, কোহলিকে খোঁচা মেরেই এই টুইট করেছেন তিনি। কোহলি নিজেও দিল্লির হয়ে খেলতেন। তাঁকেই কি তবে নিশানা করলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার!
এই ঘটনা নিয়ে জড়িয়ে পড়েন প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। পাকিস্তানের এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদি বলেন, ‘‘নবীনকে বিনা কারণে খোঁচা দিলে তখনই ও প্রতিক্রিয়া দেয়। আমি ওকে অনেক বল করতে দেখেছি। রান দিলেও ওকে কোনও দিন কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে দেখিনি। ওকে এত উত্তেজিত হতেও দেখিনি। প্রতিটা দলেই কিছু আগ্রাসী ক্রিকেটার থাকে। জোরে বোলারদের আগ্রাসন এমনিতেই বেশি হয়। দোষ বিরাটেরই ছিল।’’
আফ্রিদি এই ঘটনায় নবীনের পাশে দাঁড়ালেও কয়েক মরসুম আগে পাকিস্তান সুপার লিগে আফ্রিদির সঙ্গেই বিবাদ হয়েছিল নবীনের। মাঠের মধ্যে সেই বিবাদের পরে সমাজমাধ্যমে নবীনকে পরামর্শও দিয়েছিলেন আফ্রিদি। তার পাল্টা দিয়েছিলেন নবীন। অথচ এ ক্ষেত্রে আফগান ক্রিকেটারেরই পাশে দাঁড়ান আফ্রিদি।
এর পরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিয়োয় হরভজন সিংহ বলেন, ‘‘সবাই সেই এক ঘটনা নিয়ে কথা বলছে। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, দু’জনের মধ্যে সমস্যা মেটাবই। দু’জনকে এক জায়গায় বসিয়ে হাত মেলাতে বাধ্য করব। আইপিএল খুব বড় প্রতিযোগিতা। ওরা দু’জনেই খুব বড় ক্রিকেটার। তাই এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ওদের বলব, নিজেদের মধ্যে যা সমস্যা আছে সেটা মিটিয়ে নিতে। তবে সেটা আইপিএলের পরে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনা তো এখানে থামবে না। এর পর নানা লোকে নানা কথা বলবে। এই পরিস্থিতি আমারও হয়েছিল। ২০০৮ সালে শ্রীসন্থের সঙ্গে যেটা করেছিলাম সেটা ১৫ বছর পরেও আমাকে কষ্ট দেয়। আমি লজ্জিত। সেই সময় মনে হয়েছিল আমি ঠিক করেছি। কিন্তু এখন মনে হয় আমি ভুল করেছিলাম।’’
কোহলি ও গম্ভীরের মতো ক্রিকেটারের এই ধরনের বিবাদে জড়ানো উচিত নয় বলে মত ছিল হরভজনের। তিনি বলেছেন, ‘‘কোহলি এক জন কিংবদন্তি। ওর এই ধরনের ঘটনায় জড়ানো উচিত নয়। আমি বুঝতে পারছি যে খেলার মধ্যে ও এতটাই জড়িয়ে পড়ে যে এই ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। কার দোষে এই ঘটনা হল সেটাই এখন সবাই খুঁজে বার করার চেষ্টা করবে। কোহলি, গম্ভীর দু’জনেই বড় ক্রিকেটার। দু’জনেই আমার ভাইয়ের মতো। তাই ওদের বলছি, এই ধরনের বিবাদ থেকে দূরে থাকো।’’
কেউ কেউ আবার হরভজনের মতো এত নরম সুরে কথা বলেননি। তাঁরা চান শাস্তি। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সুনীল গাওস্কর বলেন, ‘‘ওদের ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। মানে বিরাট যে টাকা পায় তাতে ওর ১ কোটি টাকা মতো জরিমানা হয়েছে। সেটা অবশ্য অনেক বড় জরিমানা। গম্ভীরের কত জরিমানা হয়েছে সেটা আমি জানি না। কিন্তু শুধু জরিমানা করে এই ঘটনা থামিয়ে রাখা যাবে না।’’
গাওস্কর মানেন যে মাঠে প্রতিযোগিতা চলাকালীন কোনও ঘটনায় মাথা গরম হতেই পারে। কিন্তু সেটা মাঠেই শেষ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। খেলা শেষেও সেটা জিইয়ে রাখা উচিত নয়। কিন্তু কড়া শাস্তির ভয় না থাকায় ক্রিকেটাররা বার বার এই ভুল করছেন বলে মনে করেছেন তিনি। গাওস্কর বলেন, ‘‘বিসিসিআইকে নিশ্চিত করতে হবে এই ঘটনা যেন আর না ঘটে। তার জন্য কড়া শাস্তি দিতে হবে। খেলায় প্রতিযোগিতা থাকুক। কিন্তু সেটা শুধু খেলার মধ্যেই থাকুক। এই ধরনের ঘটনা উঠতি ক্রিকেটারদের বিপথে পাঠাতে পারে।’’
গাওস্করের মতে, একমাত্র নির্বাসনের শাস্তি দিলে তবেই ক্রিকেটাররা ঝামেলায় জড়াবেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘হরভজন-শ্রীসন্থের ঘটনার পরে তো ওদের নির্বাসিত করা হয়েছিল। তা হলে এ ক্ষেত্রে কেন হবে না। নির্বাসনের শাস্তি দিলে যেমন ক্রিকেটাররাও সতর্ক হবে, তেমনই প্রতিটা দলও সজাগ থাকবে। বিসিসিআইকে কড়া পদক্ষেপ নিতেই হবে। নইলে এই ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে।’’
ভারতের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী নিজেই মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় দু’এক দিনের মধ্যে ওরা শান্ত হয়ে যাবে। তখন দু’জনেই বুঝতে পারবে বিষয়টা অন্য ভাবে মিটিয়ে নেওয়া যেত। দু’জনেই একই রাজ্যের ক্রিকেটার। একসঙ্গে অনেক ক্রিকেট খেলেছে ওরা। গম্ভীর দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছে। কোহলিকে সবাই আদর্শ মনে করে। আমার মনে হয়, ওরা যদি এক জায়গায় বসে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেয় তা হলে সব থেকে ভাল করবে।’’
শাস্ত্রীর মতে, বিরাট ও গম্ভীরের মধ্যে এক জনকে এগিয়ে আসতে হবে। আর সেটা করতে হবে দ্রুত। নইলে সমস্যা আরও বাড়বে। দরকার পড়লে তিনি নিজে মধ্যস্থতা করতে রাজি। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘যেই এগিয়ে আসুক, তাড়াতাড়ি আসতে হবে। নইলে এই সমস্যা বাড়তেই থাকবে। পরের বার আবার যখন দু’জনের দেখা হবে তখন আবার বিবাদ হবে। সেটা আরও বাড়বে। যদি আমি ওদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটাতে পারি, তা হলে সেটাই করব।’’
তিনি বলেছেন, “দু’জনের সম্পর্ক বেশ জটিল। মানুষ হিসাবে গৌতম মোটেই খারাপ নয়। কিন্তু ওকে সামলানোও সহজ ব্যাপার নয়। চিন্নাস্বামীতে গিয়ে গৌতির কোনও দরকারই ছিল না ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ও রকম আচরণ করার। বিশেষত যেখানে কোহলিকে সমর্থকেরা এতটা ভালবাসে। কোহলির কাছে সুযোগ আসায় ও-ও ছেড়ে কথা বলেনি। পাল্টা দিয়েছে লখনউয়ে এসে। কোহলি জানে যে ওর অধিনায়কত্বের সবচেয়ে বড় সমালোচক গৌতমই। তাই কোনও ভাবেই গৌতমের বিরুদ্ধে পিছিয়ে আসে না ও।”
এই ঘটনা নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে মিমের বন্যা। ঘটনার এক দিন পরে কলকাতা পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি বার্তা দেওয়া হয়। সেখানে জানানো হয়, কেউ যদি আপনার কাছ থেকে ফোনের ওটিপি চান তা হলে কিছু বলবেন না, চুপ করে থাকুন। সঙ্গে গম্ভীর ও কোহলির দু’টি ছবি দেয় তারা, যেখানে দেখা গিয়েছে দু’জনেই চুপ করার ভঙ্গিতে মুখে আঙুল দিয়ে রয়েছেন।
তবে মন জিতে নেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কোহলি এবং গম্ভীরের ঝামেলার সেই মুহূর্তের ছবি দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ লেখে, “আমাদের কাছে কোনও সমস্যাই ‘বিরাট’ এবং ‘গম্ভীর’ নয়। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ১১২ নম্বরে ফোন করুন।” সেই ছবিটি পোস্ট করার সময় ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “তর্কাতর্কি এড়িয়ে যান। কিন্তু আমাদের ফোন করতে ভুলবেন না।”