নাইটদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাঠে বল পড়ার আগেই বিরাট কোহলীর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে এগিয়ে রেখেছিলেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেটাই ঘটল। ব্যাট-বল-ফিল্ডিং সব বিভাগে একেবারে ল্যাজেগোবরে হয়ে ৩৮ রানে হারল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নাইটদের মিডল অর্ডার নিয়ে আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়ে ছিলেন। এ বার লজ্জাজনক ভাবে ম্যাচ হারের পর গৌতম গম্ভীরের মতোই অইন মর্গ্যানের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বাংলার রঞ্জি ট্রফি জয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক। যদিও মর্গ্যানের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হলেও সম্বরণের প্রশ্ন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের বদলি কে হবেন?
ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জেতানোর পাশাপাশি সেই দেশের সীমিত ওভারের ক্রিকেটকেও নবজাগরণ ঘটিয়েছেন মর্গ্যান। ফলে নাইটদের জেতাতে না পারলে তাঁর অধিনায়কত্ব সত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। যদিও সম্বরণ তুলনায় যেতে রাজি নন। বরং বললেন, “একটা দেশের অধিনায়কত্ব করা ও আইপিএলে একটা দলকে সামলানোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। তাছাড়া কলকাতা নাইট রাইডার্স দলকে ঠিক মতো তৈরিই করা হয়নি। এই দলে সাত নম্বরের পরে আর কোনও ব্যাটসম্যান নেই। ওপেনার থেকে মিডল অর্ডার কারও ধারাবাহিকতা নেই। শুভমন গিল রোজ ভাল শুরু করেও উইকেট ছুড়ে দিচ্ছে। আন্দ্রে রাসেল আনফিট। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করা যেন ওর কাছে গত যুগের ব্যাপার। শাকিব আল হাসানের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। দীনেশ কার্তিক নিয়ে যত কম কথা বলা যায় ততই ভাল। ফলে অধিনায়কের কোনও পরিকল্পনাই কাজ না করায় ও আরও চাপে পড়ে যাচ্ছে। তাই এই দল নিয়ে নাইটরা প্লে অফ খেললে আমি অবাক হব।”
ব্যাটিং ব্যর্থতা শুরু থেকেই ছিল। তবে গত ম্যাচে শুরুটা ভাল করলেও শেষের দিকে খুব খারাপ বোলিং করেছে কেকেআর। সেটার জন্য অবশ্য মর্গ্যানকেই দায়ী করলেন সম্বরণ। তাঁর বক্তব্য, “বরুণ চক্রবর্তী ওর প্রথম ওভারে বিরাট ও রজত পতিদারকে আউট করার পরেও, মর্গ্যান ওকে সরিয়ে দিল। এটা মোটেও ভাল অধিনায়কত্বের নমুনা নয়। তাছাড়া পরের দিকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও এবি ডিভিলিয়ার্সের বিরুদ্ধে সমানে জোরে বোলারদের দিয়ে বল করিয়ে গেল। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা জোরে বোলিং খুব ভাল খেলে। খাটো লেংথের বলে ওদের জব্দ করা যায় না। এটা কি মর্গ্যান ভুলে গিয়েছে! এই দুজনের বিরুদ্ধে রাসেল ও প্যাট কামিন্স খুব খারাপ লাইনে বল করেছে। সেই দায় তো অধিনায়ককে নিতেই হবে।”
গত বছর দল মেলে ধরতে না পারার জন্য মাঝপথে অধিনায়কত্ব হারান দীনেশ কার্তিক। এ বার মর্গ্যানের সঙ্গেও কি একই ঘটনা ঘটতে পারে? নাইটদের ইতিহাসে অধিনায়ককে ছেঁটে ফেলার ঘটনা মোটেও নতুন নয়। সম্বরণ বেশ কটাক্ষের সঙ্গে বললেন, “মর্গ্যানকে সরিয়ে কাকে অধিনায়ক করা হবে! শুভমন গিল! ছেলেটাকে তো সবার আগে নিয়মিত বড় রান করতে হবে। তারপর তো অধিনায়ক হওয়ার প্রসঙ্গ আসা উচিত। যে দলের রিজার্ভ বেঞ্চ দুর্বল সেই দলের কাছ থেকে বাড়তি প্রত্যাশা করা উচিত নয়।”
নাইটদের তিনি একেবারেই আশাবাদী নন। তবুও শেষ করার আগে কয়েকটা উপায় জানিয়ে দিলেন। বললেন, “বড় রান তুলতে হলে মর্গ্যানকে তিন নম্বরে ব্যাট করতেই হবে। প্রথম আইপিএল থেকে খেললেও কার্তিক মোটেও দাগ কাটতে পারেনি। তাই সবার আগে ওকে ছেঁটে ফেলা উচিত। ব্যাটে-বলে শাকিব ছন্দের ধারে কাছে নেই। ও নিজের পুরনো সময় ফেলে এসেছে। তাই শাকিবের বদলে সুনীল নারাইনকে মাঠে নামানো ছাড়া অন্য উপায় দেখছি না। তবে চোট পাওয়া নারাইন কতটা মেলে ধরতে পারবে সেই ব্যাপারে সন্দেহ আছে। তাই আমার মতে নাইটদের ভবিষ্যত মোটেও উজ্জ্বল নয়।”