আশা জাগিয়েও শেষ দুই মরশুমে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে নাইট রাইডার্সকে। ব্যক্তিগত ভাবে দু'একজন মাঝেমধ্যে জ্বলে উঠলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দলগত সেই আগুনটা জ্বলেনি। চলতি আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই কিন্তু সেই দলগত আগুন জ্বলতে দেখা গেল। যে আগুনে প্রথম ম্যাচেই পুড়ে ছাই হায়দরাবাদ। দেখে নেওয়া যাক ঠিক কোন জায়গাগুলোতে ওয়ার্নারদের মাত দিল মর্গ্যান বাহিনী।
রাহুল ত্রিপাঠি নন, প্রথম ম্যাচে শুভমন গিলের সঙ্গে ইনিংস শুরু করতে নামেন নীতীশ রানা। ইনিংসের শুরু থেকেই ভয়ডরহীন ব্যাটিং করতে থাকেন দিল্লির বাঁহাতি। ৯টি চার এবং ৪টি ছক্কা মেরে ৮০ রান করে তিনি যখন আউট হলেন তখন দলের রান ১৬০। তিনি আউট হতেই কমে যায় রানের গতি। পরের ২১ বলে মাত্র ২৭ রান করে দল।
গত বারের আইপিএলে বেশ কয়েকটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রাহুল ত্রিপাঠি। এ বারের শুরুটাও তেমনই করলেন। প্রায় ১৮৩ স্ট্রাইক রেটে ২৯ বলে ৫২ রান করেন তিনি। নীতীশ রানার সঙ্গে যৌথ ভাবে ৫০ বলে ৯৩ রান করেন তিনি। তিনি আউট হওয়ার সময় নাইটদের রান রেট ছিল প্রায় ১০। তাঁর ওই ইনিংস ছাড়া কোনও ভাবেই ১৮৭ রানের স্কোর খাড়া করতে পারত না নাইট রাইডার্স।
ইনিংসের শেষ দিকে পরপর উইকেট হারিয়ে যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচে ফিরে আসছে সানরাইজার্স, তখনই জ্বলে ওঠে কার্তিকের ব্যাট। নাইটদের প্রাক্তন অধিনায়কের ৯ বলে ২২ রানের ছোট্ট ক্যামিয়ো দলকে ১৮৭ পর্যন্ত পৌঁছতে সাহায্য করে।
জাতীয় দলে যে এমনই ডাক পাননি তা ফের এক বার প্রমাণ করলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। নিজের প্রথম ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন বিপক্ষের সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারকে। উইকেটের পিছনে ধরা পড়ার আগে তিনি ৪ বলে মাত্র ৩ রান করেন। শুধু ওয়ার্নের নন, ম্যাচের শেষ দিকে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা মহম্মদ নবিকেও আউট করেন তিনি। তাঁর ৩৫ রানে ২ উইকেটের স্পেল ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই গড়ে দেয়।
হায়দরাবাদের ইনিংসে প্রথম থেকেই ছিল গোলা বারুদের অভাব। ঋদ্ধি, ওয়ার্নারকে হারিয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ৩৫ রান তোলে সানরাইজার্স। ওখানে অনেকটাই পিছিয়ে যায় তারা। কামিন্স, কৃষ্ণদের আঁটোসাঁটো বোলিংয়ে আর সেই ঘাটতি মেটাতে পারেনি দক্ষিণের এই দল।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বল হাতে প্রথম ওভারেই দিয়েছেন ১৫ রান। এই অবস্থাতেও ডেথ ওভারে তাঁর হাতেই বল তুলে দেন মরগান। তিনি যে ভুল করেননি তা প্রমাণ করেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ ২ ওভারে ১৭ রান দেন তিনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২২ রান। মাথা ঠান্ডা রেখে প্রথম ৫ বলে মাত্র ৫ রান দিয়ে ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করেন দি ব্রুস।
ম্যাচের প্রথম বলেই ভুবনেশ্বর কুমারকে চার মারেন নীতীশ। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জাতীয় দলের এই পেসারের আত্মবিশ্বাস বোধহয় ওখানেই কিছুটা চিড় ধরেছিল। ৪ ওভারে ৪৫ রান দেন তিনি। বিপক্ষ বোলিংয়ের অন্যতম সেরা অস্ত্রকে প্রথমেই ভোঁতা করে দিয়ে দলের সুরটা বেঁধে দেন রানা।
বল করতে এসে এক ওভারে ১৪ রান দেন। ব্যাট হাতেও মাত্র ১১ রান করে আউট হন বিজয় শঙ্কর। দলের প্রয়োজনে তাঁর মতো অলরাউন্ডারের ব্যর্থতায় ভুগতে হয়ে হায়দরাবাদকে।
হায়দরাবাদের প্রধান শক্তি তাঁদের বোলিং বিভাগ। দলে রয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার এবং ইয়র্কার বিশেষজ্ঞ টি নটরাজন। আইপিএলে সন্দীপ শর্মাও যথেষ্ট বড় নাম। কিন্তু রবিবার এই ৩ পেসারই চরম ব্যর্থ হন। ৩ জন মিলে ১১ ওভারে ১১৭ রান দেন। ফলে রশিদ খান দুর্দান্ত বল করলেও পেস বিভাগের ব্যর্থতা ঢাকার পক্ষে তা যথেষ্ট ছিল না।