হর্ষাল পটেল। ছবি আইপিএল
এ বারের আইপিএল-এ ১০টি ম্যাচ খেলে ২৩টি উইকেট হয়ে গিয়েছে। হর্ষল পটেলের ধারেকাছে কেউ নেই। প্রথম হ্যাটট্রিকটিও হয়ে গিয়েছে। তাঁকে নিয়ে সবার আগে যে প্রশ্নটি উঠছে, সেটি হল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে তিনি নেই কেন? হর্যল নিজে সে সব নিয়ে ভাবতে রাজি নন।
রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেওয়া জোরে বোলার ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘কোনও সময়ই আমার কোনও কিছু নিয়ে আক্ষেপ হয় না। জীবনে যখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা ভেবে-চিন্তে নিয়েছি। আর দলে সুযোগ পাওয়ার কথা উঠলে বলতে হবে, সেটা একেবারেই আমার হাতে নেই। আমার একটাই লক্ষ্য থাকে, যখন যে দলের হয়ে খেলব, সেটা পাড়ার দল হোক, আইপিএল, বা ক্লাব হোক, হরিয়ানা হোক, খেলায় যেন আমার একটা ইতিবাচক ছাপ থাকে। যতদিন ক্রিকেট খেলব, এটাই আমার লক্ষ্য থাকবে।’’
হ্যাটট্রিক যে করেছেন, সেটি এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না হর্ষলের। কারণটাও নিজেই জানান। বলেন, ‘‘জীবনে এই প্রথম হ্যাটট্রিক করলাম। এর আগে কখনও হ্যাটট্রিকের স্বাদ পাইনি। এমনকী স্কুল ক্রিকেটেও করিনি। অবশ্য বেশ কয়েক বার হ্যাটট্রিকের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। মোট ছয় বার হ্যাটট্রিকের সুযোগ এসেছিল আমার সামনে। এই প্রথম করতে পারলাম। তাই এই অনুভূতিটা বলে বোঝানো কঠিন। হজম করতে কয়েক দিন সময় লাগবে।’’
হর্ষল জানান, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে যে ধরনের ক্রিকেট বেঙ্গালুরু খেলেছে, সেটিই বাকি প্রতিযোগিতায় তাঁরা খেলে যেতে চান। বলেন, ‘‘আমরা কেউই পয়েন্ট তালিকার দিকে তাকাচ্ছি না। কারণ, সেটা করলে যে পদ্ধতিতে আমরা খেলছি, সেটা থেকে দলের ফোকাস নড়ে যাবে। প্রথম দুটো ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠাটা কঠিন কাজ ছিল। সেটা আমরা এই ম্যাচে করে ফেললাম। এই ছন্দটা এ বা ধরে রাখতে হবে। এই ক্রিকেটটাই খেলে যেতে হবে।’’
হার্দিক পাণ্ড্য, কায়রন পোলার্ড, রাহুল চাহারকে পরপর তিন বলে আউট করে হ্যাটট্রিক করেছেন হর্ষল। তার মধ্যে তিনি সবথেকে বেশি খুশি পোলার্ডের উইকেট নিয়ে। বলেন, ‘‘ওকে বোকা বানিয়েছিলাম। ওর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল। মিটিংয়েই ঠিক হয়েছিল, ওর গোড়ালি লক্ষ্য করে ইয়র্কার দেব। সেটা ও ফস্কাতে পারে। তখন আমি স্লোয়ারগুলো ভাল দিচ্ছিলাম। তাই দ্রুত গতির ইয়র্কার না দিয়ে ওকে স্লোয়ার দিয়েছিলাম। ও বুঝতেই পারেনি।’’
স্লোয়ারই কি তাঁর মূল অস্ত্র জানতে চাইলে হর্ষল বলেন, তিনি বিষয়টিকে ওই ভাবে দেখেন না। বলেন, ‘‘পুরোটাই পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেমন শারজায় স্লোয়ার দেওয়ার চেষ্টা করছি। আবার আবু ধাবিতে ৮০ শতাংশ বলই দ্রুতগতির ছিল। তাই আগে থেকে ভাবি না জোরে বল করব, না স্লোয়ার দেব। পরিস্থিতির উপর ছেড়ে দিই পুরোটা।’’
৩০ বছর হয়ে গিয়েছে হর্ষলের। জোরে বোলার হিসেবে বয়সটা কম নয়। হর্ষল অবশ্য অবিচল। বলেন, ‘‘শেষ তিনটে বছর দারুণ কেটেছে। অনেকেই দেরি করে জ্বলে ওঠে। আমি সেই দলে পড়ি। অবশ্যই আমি দেরি করে নিজেকে চিনিয়েছি। নিজের শরীর, দক্ষতা নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।’’