ফের একবার বিপক্ষের মিডল অর্ডারে ভাঙন ধরালেন রাহুল চাহার ছবি - টুইটার
বুদ্ধিমান অধিনায়ক থাকলে, নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও দারুণ ফিল্ডিং করলে কম রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতা যায়। সেটা আবার দেখিয়ে দিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। গত ৯ বারের মতো এ বারের আইপিএল অভিযানও হার দিয়ে শুরু করেছিল রোহিত শর্মার দল। তবে মোক্ষম সময় আঁটোসাঁটো বোলিং করে পরপর দুই ম্যাচ জিতল মুম্বই। গত ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে শেষ মুহূর্তে ১০ রানে উড়িয়ে দেওয়ার পর এ বার রোহিতের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে একই ছকে বধ করল। কলকাতার বিরুদ্ধে ১৫২ রান করেও জিতেছিলেন ‘হিট ম্যান’। এই ম্যাচে ১৫০ রান করেও অনায়াসে ১৩ রানে হারিয়ে দিল ডেভিড ওয়ার্নারের দলকে। একই সঙ্গে এই ম্যাচ খুইয়ে হারের হ্যাটট্রিক করল হায়দরাবাদ।
শনিবার চিপকে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত। কুইন্টন ডি' কককে সঙ্গে নিয়ে প্রথম উইকেটে ৫৫ রান তুলে দেন মুম্বই অধিনায়ক। তবে এরপর ব্যক্তিগত ৩২ রানে আউট হন রোহিত। ডি' কক করেন ৪০ রান। যদিও সূর্য কুমার যাদব, ঈশান কিশন ও হার্দিক পাণ্ড্য বড় রান করতে পারেননি। ফলে একটা সময় ১১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় পাঁচ বারের আইপিএল জয়ী দল। কিন্তু শেষ দিকে দলের কাছে ত্রাতার ভূমিকা নিয়ে ২২ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন কায়রন পোলার্ড। তাঁর মারকুটে ইনিংসের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫০ রান তোলে মুম্বই।
হায়দরবাদের ব্যাটিং নিয়ে এ বার ভাবনাচিন্তা করার সময় এসেছে। ওদের মিডল অর্ডারের অবস্থা অনেকটা নাইটদের মতোই ভঙ্গুর। দলে একাধিক বড় নাম, ডাগ আউটে মাথাভারী ও একাধিক প্রশিক্ষক থাকার পরেও নিট ফল সেই শূন্য। ঋদ্ধিমান সাহা গত দুই ম্যাচে ছন্দে ছিলেন না। তাই তাঁকে এ বার বসিয়ে দেওয়া হল। ১৫১ রান তাড়া করতে নেমে শুরু করলেন ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টো। দুজনের দাপটে মাত্র ৭.২ ওভারে ৬৭ রান উঠেও গেল।
শেষ বেলায় আবার বাজিমাত করলেন যশপ্রীত বুমরা। ছবি - টুইটার।
কিন্তু খেলা তো শেষ হয়ে যায়নি। মুম্বই যেন ‘খেলা শুরু’ করল। বেয়ারস্টো ২১ বলে ৪৩ রানে ব্যাট করার সময় ক্রুণালের বল হিট উইকেট হলেন। এরপর দীপক চাহারের বলে ফিরলেন গত দুই ম্যাচে অর্ধ শতরান করলেও ম্যাচ জেতাতে না পারা মণীশ পাণ্ডে। কিন্তু এরপর যেটা হল সেটার জন্য ওয়ার্নার নিজেকে কোনওদিন ক্ষমা করতে পারবেন না। হার্দিক পাণ্ড্যকে গুরুত্ব না দিয়ে নিতে গেলেন রান। একেবারে পাড়ায় গুলি খেলার মেজাজে উইকেট ভেঙে দিলেন হার্দিক। ব্যস ৯০ রানে ৩ উইকেট হারাতেই হায়দরবাদের খেলা শেষ। ৬৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর শেষ ৯ উইকেট পড়ল মাত্র ৬৬ রানে। ফলে ১৯.৪ ওভারে ১৩৭ রানে গুটিয়ে গেল ‘অরেঞ্জ আর্মি’।
নাইটদের হারানো গত ম্যাচের সঙ্গে এই ম্যাচের একাধিক মিল। পিচ আলাদা হলেও একই মাঠ। সেই ম্যাচেও মুম্বইকে বাঁচিয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট (৩/২৮) ও যশপ্রীত বুমরা (১/১৪)। এ বারও ঠিক তাই। ১৯তম ওভারে বোলিং করে বিপক্ষকে আরও পিছনে ঠেলে দিলেন রোহিতের ‘তুরুপের তাস’ বুমরা। আর শেষ ওভারে হাত ঘুরিয়ে কফিনে শেষ পেরেকে পুঁতে দিলেন কিউই জোরে বোলার। আর শেষ মিল হল রাহুল চাহার। ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে কলকাতার ব্যাটিং ভেঙে দিয়েছিলেন। এ দিন ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভেঙে দিলেন হায়দরাবাদের মিডল অর্ডার।