কসরত: ফিটনেসকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন ধোনি ফাইল চিত্র।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে চেন্নাই সুপার কিংসকে জেতানোর পরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি স্বীকার করেছেন, ফিটনেসের দিক দিয়ে দলের তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া এখন যথেষ্ট কঠিন কাজ। তবে তিনি এটাও চান না, ফিটনেস নিয়ে কেউ তাঁর দিকে আঙুল তুলুক।
গত বার আইপিএলে সপ্তম স্থানে শেষ করার পরে এ বার প্রথম তিন ম্যাচে দুটোয় জিতেছে চেন্নাই সুপার কিংস। ধোনিদের নিয়ে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়— সিএসকে-র এই দলে বেশি বয়সের ক্রিকেটারে ভর্তি। যে কারণে দলের নামকরণই হয়ে গিয়েছে, ‘ড্যাডস আর্মি।’ কিন্তু ৩৯ বছর বয়সি ধোনি বলেছেন, বয়স হওয়া আর ফিট থাকা সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। রাজস্থানের বিরুদ্ধে জেতার পরে ধোনির মন্তব্য, ‘‘আপনি যদি খেলেন, তখন নিশ্চয়ই চাইবেন না কেউ আপনার দিকে আঙুল তুলে বলুক, ও মোটেই ফিট নয়। আমাকেও দলের তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। ওরা খুব ফিট।’’ ধোনি নিজে যে এখনও খুব একটা পিছিয়ে নেই, তা বোঝা গিয়েছে রাজস্থান ম্যাচে। খুচরো রান নিয়েছেন ক্ষিপ্রতার সঙ্গে। শরীর ছুড়ে রান আউট হওয়া থেকেও নিজেকে বাঁচিয়েছেন। ফিটনেসকে তিনি যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে ধোনির কথায়। সিএসকে অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘মাঠে নেমে ব্যাট বা বল হাতে সফল হব কি না, এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। আমার যখন ২৪ বছর বয়স ছিল, তখনও দিতে পারিনি। আবার চল্লিশেও দিতে পারব না। কিন্তু চাইব, আমার দিকে আঙুল তুলে কেউ যেন বলতে না পারে, এই লোকটা ফিট নয়। এই বলতে না পারাটাই আমার কাছে একটা ইতিবাচক দিক।’’
আজ, বুধবার, ওয়াংখেড়েতেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে লড়াই সিএসকে-র। তার আগে দলের খেলায় খুশি ধোনি। চেন্নাইকে তিন বার আইপিএল জেতানো অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমাদের বোলাররা ভালই বল করেছে। স্যাম কারেন পরিস্থিতি অনুযায়ী বলটা জায়গায় রেখেছে। দীপক (চাহার) নাকল বলটা করার সময় একটু হিসেবে গণ্ডগোল করে ফেলেছিল।’’ তবে ধোনি জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়াংখেড়েতে শিশির পড়ে বল ভিজে গেলেও তা ঘুরেছে। ধোনির কথায়, ‘‘বলটা ভেজা থাকার সময়ও কিন্তু স্পিনাররা ঘোরাতে পেরেছিল।’’ যে কারণে রাজস্থানের জস বাটলার আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও চিন্তিত ছিলেন না ধোনি। তাঁর কথায়, ‘‘জস রিভার্স সুইপ মারার সময়ও আমি উদ্বিগ্ন হইনি। ভেজা বল যখন ঘুরছিল, তখন জানতাম, শুকনো বল আরও বেশি ঘুরবে।’’ ধোনির মুখে শোনা গিয়েছে ইংল্যান্ডের অফস্পিনার-অলরাউন্ডার মইন আলির কথাও। তিন উইকেট নিয়ে রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার
নির্বাচিত হন মইন।
তবে দুরন্ত ফর্মে থাকা বাটলারকে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন রবীন্দ্র জাডেজা। যা নিয়ে এই বাঁ-হাতি স্পিনার বলেছেন, ‘‘ওই সময় বল একটু ঘুরছিল। তাই জানতাম, ঠিক জায়গায় বলটা ফেলতে পারলে স্পিন করবে। আর সেটাই হয়েছে।’’ শুধু বাটলারকে আউট করাই নয়, রাজস্থানের বিরুদ্ধে চারটে ক্যাচও ধরেছেন জাডেজা। নিজের ফিল্ডিং নিয়ে ধোনির দলের এই অস্ত্র বলেছেন, ‘‘আমি সব সময় মাথায় রাখি, প্রতিটা বল আমার কাছে আসছে। সেই মতো তৈরি থাকি। প্রথম ক্যাচটা নেওয়ার পরে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছিল। যেটা শরীরী ভাষায় ধরা পড়ছিল।’’
এ বারের আইপিএল কি ধোনির শেষ প্রতিযোগিতা হতে চলেছে? এই প্রশ্নটা এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট মহলে। তবে সিএসকে-র সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ আশা করছেন, আরও এক বছর হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে ধোনিকে। কিন্তু ধোনি পরবর্তী যুগে কে হতে পারে সিএসকে অধিনায়ক? ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। ভনের মতে, জাডেজাই আদর্শ ক্রিকেটার এবং তাঁকে অধিনায়ক রেখে ধীরে ধীরে একটা দল তৈরি করুক সিএসকে।