ফুরফুরে: দলের অনুশীলনের ফাঁকে নারাইন ও শাকিব। টুইটার
আবু ধাবিতে আজ, সোমবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফার যাত্রা শুরু করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ সাত ম্যাচের পাঁচটিতে হেরে প্লে-অফের রাস্তা বেশ কঠিন নাইটদের সামনে। আসন্ন সাত ম্যাচে ছ’টি জেতার জন্য মরিয়া আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, অইন মর্গ্যানরা। তাঁদের তাগিদ আরও বাড়িয়ে তুললেন নাইটদের অন্যতম কর্ণধার শাহরুখ খান।
ম্যাচের আগের দিনই দলের উদ্দেশে শাহরুখের বার্তা, ‘‘মনে রেখো তোমরা প্রত্যেকে একজন নাইট। শেষ পর্যন্ত লড়াই করো। এই আকাশ তোমাদের।’’
দলের কাছে এই বার্তা পৌঁছনোর পরে প্রত্যেকের মধ্যেই জেতার বাড়তি খিদে তৈরি হয়েছে। শাহরুখ নিজে হয়তো প্রথম ম্যাচে দলের সঙ্গে আবু ধাবি থাকতে পারবেন না। তাঁর শুটিং চলছে। কিন্তু ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নাইট পরিবারের প্রত্যেককে আরও এক বার স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
শাহরুখের বার্তায় উদ্বুদ্ধ অধিনায়ক অইন মর্গ্যানও। ম্যাচের আগের দিন তাঁর বার্তাতেই যা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। নাইটদের ওয়েবসাইটকে মর্গ্যান বলেছেন, ‘‘আমরা পিছন ফিরে তাকাতে চাই না। দলের প্রত্যেকে আগামী সাতটি ম্যাচে ভাল খেলার জন্য মরিয়া। সবার মধ্যে জেতার খিদে লক্ষ্য করতে পারছি। প্রথম দফার সাত ম্যাচের প্রভাব আর কারও মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’’
মর্গ্যান মনে করেন, প্রথম দফার পরে চার মাসের এই বিশ্রাম প্রত্যেককে নতুন ভাবে অভিযান শুরু করতে সাহায্য করেছে। বলেছেন, ‘‘প্রায় চার মাস পরে দলের সঙ্গে ফিরে আসার পরে বুঝলাম, কারও মধ্যে হারের আতঙ্ক নেই। প্রত্যেকে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য মরিয়া। ম্যাচের ফল নিয়ে কেউ ভাবছে না। বরং কী ভাবে ভাল ক্রিকেট উপহার দেওয়া যায়, সেটাই মূল উদ্দেশ্য।’’
প্রথম দফার দলই প্রায় ধরে রেখেছে কেকেআর। কিন্তু পেস বিভাগে নেই তাদের সব চেয়ে বড় অস্ত্র প্যাট কামিন্স। সাড়ে পনেরো কোটির অস্ট্রেলীয় পেসারের পরিবর্তে যোগ দিয়েছেন টিম সাউদি। অধিনায়ক মর্গ্যান মনে করেন, সাউদির অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবে নাইটরা। কিন্তু আরসিবির বিরুদ্ধে তিনি খেলবেন নাকি লকি ফার্গুসন, তা পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাউদির চেয়ে লকি অনেক বেশি কার্য়করী। কিন্তু মর্গ্যান বলছিলেন, ‘‘আইপিএলে দীর্ঘদিন খেলেছে সাউদি। ওর অভিজ্ঞতা প্রত্যেক দলের কাছেই সম্পদ। তবে প্যাটের অভাব অনুভব করব। নতুন সন্তান এসেছে ওর পরিবারে। তার জন্য অনেক অভিনন্দন।’’
আবু ধাবির পিচে রান ওঠার সম্ভাবনা খুব বেশি। বল যে খুব ঘুরবে, তা মর্গ্যানও নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না। তাই সুনীল নারাইনের সঙ্গে ভারতীয় বিস্ময় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীকে দেখা যেতে পারে। মর্গ্যানের ইঙ্গিত, ‘‘দু’জনের জুটি খুবই ভাল। শেষ বার আমিরশাহিতে মাঝের ওভারগুলোয় রান আটকানোর কাজ করত ওরাই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ায় বরুণ আরও আত্মবিশ্বাসী। সেটাই কাজে লাগাতে চাই আমরা।’’
প্রতিপক্ষ হিসেবে নাইটদের সব চেয়ে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন বিপক্ষের তিন ব্যাটসম্যান। বিরাট কোহালি, এবি ডিভিলিয়ার্স ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। শেষ বারের সাক্ষাতে কোহালি দ্রুত ফিরে গেলেও মাঝের ওভারগুলোয় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছিলেন ডিভিলিয়ার্স ও ম্যাক্সওয়েল। ৪৯ বলে ৭৮ রান করেছিলেন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার। ৩৪ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’। সেই ম্যাচের স্মৃতি নিশ্চয়ই তরতাজা থাকবে মর্গ্যানের মনে। তবুও অধিনায়কের ঘোষণা, ‘‘অতীত নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। একটি করে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।’’
মর্গ্যানদের ভরসা বাড়াতে পারে আন্দ্রে রাসেলের ছন্দ। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে চেনা মেজাজেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই সঙ্গেই ২০১৪ সালে টানা ৯ ম্যাচ জিতে ট্রফি হাতে তোলার ইতিহাস এখন নাইটদের অনুপ্রেরণা। মর্গ্যানরা কি পারবেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে?