দিল্লির জয়ের দুই কারিগর। শিখর ও পৃথ্বীর ব্যাটিং ঝড়ে উড়ে গেল চেন্নাই। ছবি - টুইটার
১৮৮ মোটেও হেরে যাওয়ার রান ছিল না। কিন্তু ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে শিখর ধওয়ন ও পৃথ্বী শ ছন্দের তুঙ্গে থাকলে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো অধিনায়কেরও চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। তাই তো দিল্লি ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার মারমুখী মেজাজে ব্যাট করে চেন্নাই সুপার কিংসকে হেলায় ৭ উইকেটে হারিয়ে দিলেন। ১৮.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯০ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নিল তরুণ পন্থের দিল্লি। ফলে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই ‘গুরু’র বিরুদ্ধে জয় পেলেন ‘শিষ্য’ ঋষভ পন্থ। আর প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে হার হজম করে মাঠ ছাড়লেন ধোনি ও তাঁর প্রিয় সতীর্থ সুরেশ রায়না।
দিল্লির দুই ওপেনারের লড়াই ছিল ভিন্ন। শিখর ধওয়ন একদিনের ক্রিকেটে সাফল্য পেলেও দেশের টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পাচ্ছেন না। তাছাড়া আইপিএলেও তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। পৃথ্বী গত অস্ট্রেলিয়া সফরের দুঃস্বপ্ন ভুলে বিজয় হজারেতে নিজেকে ফের প্রমাণ করেছেন। তবে আইপিএলের মঞ্চ যে প্রায় আন্তর্জাতিক স্তরের সমান। গত বছর তাঁর আইপিএল মোটেও ভাল যায়নি। তবে এ বার প্রথম ম্যাচ থেকেই সুদে আসলে সব উশুল করতে শুরু করলেন। মাত্র ৩৮ বলে ৭২ রানে যখন ফিরলেন তখন চেন্নাইয়ের আর ফিরে আসার সুযোগ নেই। ৯টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে তাঁর মারকুটে ইনিংস সাজানো ছিল। ফলে ১৩৮ রানে প্রথম উইকেট পড়লেও লাভ হয়নি। আইপিএলে ফের একটা শতরান করতে পারতেন। তবে সেটা মাঠে ফেলে ৫৪ বলে ৮৫ রানে আউট হলেন শিখর। মারলেন ১০টি চার ও ২টি ছয়। ধওয়ন যখন ফিরছেন তখন বোর্ডে ২ উইকেটে ১৬৭ রান। এরপর বাকিটা ছিল স্রেফ নিয়ম রক্ষার। কারণ ধোনি ততক্ষনে দেওয়াল লিখন পড়ে ফেলেছেন। তাঁর সামনে পন্থের ব্যাট থেকে জয় পেল দিল্লি।
২০১৯ সালের ১২ মে থেকে ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল। মাঝে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। দুই বছর আগে শেষ বার তাঁকে আইপিলের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল। সে বার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন সুরেশ রায়না। গত বছর দলের সঙ্গে আরবে উড়ে গেলেও দেশে ফিরে আসেন। তবে এ দিন দিল্লির বিরুদ্ধে তাঁকে দেখে মনে হল কোনও জড়তাই নেই। ক্রিস ওকস, আবেশ খানরা শুরু থেকে বাইশ গজে আগুন বিপক্ষের ওপেনিংয়ে ধস নামালেও মইন আলিকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়ালেন সিএসকে শিবিরের ‘চিন্না থালা’ রায়না।
দারুণ প্রত্যাবর্তন করেও হেরে মাঠ ছাড়লেন সুরেশ রায়না। ছবি - টুইটার।
দারুণ প্রত্যাবর্তন করে ৩৬ বলে ৫৪ রান। ৩টি চার ও ৪টি ছয় দিয়ে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল। মইন আলি (৩৬), অম্বাতি রায়ডু (২৩) ও শেষের দিকে রবীন্দ্র জাডেজা (২৬) ঝড় তুললেও সেটা বেশীক্ষণ স্থায়ী হল না। গত ১ নভেম্বর শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ধোনি। তিনিও সুবিধা করতে পারলেন না। তরুণ আবেশ তাঁর উইকেট উপড়ে দিলেন। ‘থালা’ ফিরলেন খালি হাতে। যদিও এরপরেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৮ রান তুলল সিএসকে।
কিন্তু শুধু স্কোর বোর্ডে বড় রান তুললেই তো ম্যাচ জেতা যায় না। জিততে হলে আঁটোসাঁটো বোলিংও জরুরি। প্রথম ম্যাচে কিন্তু ধোনির দলের বোলিংয়ে সেটা দেখা গেল না। তাই যোগ্য দল হিসেবে জয় দিয়ে নতুন অভিযান শুরু করল ঋষভ পন্থের দিল্লি।