দলের ভাঙনের মুখে রুখে দাঁড়ান মর্গ্যান। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
টস জিতলেন, ব্যাটে প্রতিকূলতা টপকে ভরসাও দিলেন। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক অইন মর্গ্যান প্রথম অগ্নিপরীক্ষায় ব্যর্থ। তাঁর বোলাররা ক্যাপ্টেনকে এনে দিতে পারলেন না জয়। ব্যাটসম্যানরাও কি স্বস্তি দিতে পারলেন নতুন অধিনায়ককে? ম্যাচের শেষে মর্গ্যানও হয়তো বুঝে গেলেন অনেক সংস্কার করতে হবে এই দলে।
শুক্রবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ঠিক আগেই অধিনায়ক বদলে ফেলেছিল কলকাতা। দীনেশ কার্তিককে সরিয়ে মর্গ্যানকে দলের ক্যাপ্টেন করে দেওয়া হয়েছিল। এ রকম পরিস্থিতি যে কোনও অধিনায়কের জন্যই কঠিন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় ছিল দু’নম্বরে। সেই দলের বিরুদ্ধে নামার আগে নেতা বদলের সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটদুনিয়া। কার্তিকের স্বার্থত্যাগে বিস্মিত মর্গ্যানও। টসের সময়ে কলকাতার নতুন অধিনায়ক বলেন, “ডিকে (দীনেশ কার্তিক) গতকাল আমাদের জানায় যে ব্যাটিংয়ে মন দেওয়ার জন্য ও নেতৃত্ব ছাড়তে চায়। এটা সত্যিই স্বার্থত্যাগ।”
আরও পড়ুন: ছাঁটাই কার্তিক, কলকাতার অধিনায়ক এখন অইন মর্গ্যান
ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশের জন্য নেতৃত্ব ছাড়লেও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে কার্তিকের ব্যাট চলেনি। রাহুল চহারের বলে মাত্র ৪ রানে বোল্ড হন তিনি। নিজেই উইকেটে টেনে আনেন বল। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়া রাহুল ত্রিপাঠী (৭) ব্যর্থ হন। টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা দেখিয়ে যাওয়া শুভমান গিল ২১ রান করে ফেরেন। বিধ্বংসী আন্দ্রে রাসেল (১২) ঠকে গিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরার বলে। পাঁচ উইকেট চলে যাওয়ার পরেও কামিন্স ও মর্গ্যান ৮৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। মর্গ্যান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান ৩৯ রানে। কামিন্স খেলেন ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস। দ্রুত উইকেট হারানোয় মর্গ্যানের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। পরের ম্যাচগুলো তাঁর জন্য আরও কঠিন।
আবু ধাবিতে অবশ্য মর্গ্যান ও কামিন্সের দাপটে কলকাতা পৌঁছয় ১৪৮ রানে। তবে টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে এই রান যথেষ্ট নয়। বল করতে নেমে কলকাতা অধিনায়কের নেতৃত্বও ছিল আতসকাচের নীচে। দারুণ শক্তিশালী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিংকে মুড়িয়ে দিয়ে ম্যাচ বের করতে হলে দ্রুত উইকেট তুলে নিতে হতো। হাতের সেরা অস্ত্রদের ব্যবহার করতে হতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে। বিশ্বজয়ী অধিনায়ক গ্রিন ও কামিন্সকে দিয়ে শুরুটা ঠিকই করেছিলেন। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, রাসেল, বরুণ চক্রবর্তীকে আক্রমণে এনে আঘাত হানতে চেয়েছিলেন মুম্বইয়ের ইনিংসে। কিন্তু রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি ককের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচ থেকে ক্রমশ ছিটকে গেল কলকাতা। শিবম মাভিকে নাইট অধিনায়ক আনলেন দশম ওভারে। নিজের প্রথম ওভারেই রোহিতকে (৩৫) ফেরান মাভি।তত ক্ষণে অবশ্য ম্যাচের উপরে জাঁকিয়ে বসেছে মুম্বই। চার বারের চ্যাম্পিয়নদের রান যখন ৯৪, তখন প্রথম উইকেট যায়। রোহিত ও কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে কলকাতার থেকে ম্যাচের রাশ তখন চলে গিয়েছিল মুম্বইয়ের হাতে। বরুণ চক্রবর্তীর বলে সূর্যকুমার যাদব (১০) ফিরে গেলেও ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়নি মুম্বই। দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা কুইন্টন ডি কক শেষ পর্যন্ত ৭৮ রানে অপরাজিত থেকে যান। হার্দিক পাণ্ড্যও ১১ বলে ২১ রান করে মুম্বইকে নিয়ে যান পয়েন্ট টেবলের একনম্বরে।
ম্যাচের শেষে কলকাতা অধিনায়ক স্বীকার করে নিলেন, তাঁরা এ দিন কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। হাতে যা পুঁজি ছিল, তা দিয়ে মরিয়া লড়াই হয়তো করা যেত। কিন্তু মুম্বই ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগই দেননি কলকাতাকে। অধিনায়ক হিসেবে শুরু একদমই ভাল হল না মর্গ্যানের।